তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

মেস ছেড়েছেন যশোরের চার হাজার শিক্ষার্থী

মেস ছেড়েছেন যশোরের চার হাজার শিক্ষার্থী
[ভালুকা ডট কম : ১৩ আগস্ট]
বাড়ির মালিকদের অনিহা এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির কারণে যশোর শহরের চার হাজার ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন। গড়ে প্রতি ছাত্রাবাসে ১০ জন করে শিক্ষার্থী ধরলেও প্রায় চার হাজার জন শিক্ষার্থী মেস ছেড়েছেন।
 
বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে উঠেছেন। আবার অনেকে বাড়ি থেকে যাতায়াত করছেন। তবে এই শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে ধারনা করছেন এলাকাবাসী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ।
 
সিটি কলেজ, সরকারি পলিটেকনিক কলেজ, ক্যান্টনমেন্ট কলেজ, যশোর সরকারি মাইকেল মধুসূদন (এমএম) কলেজ, বেসরকারি বিসিএমসি কলেজের আশপাশে ছিল ছাত্রাবাস। এ গুলো ঘিরে স্থানীয় লোকজনের ব্যবসা ছিল রমরমা ।
 
বিশেষ করে শহরের এমএম কলেজের আশপাশে, ষষ্টিতলা, কাজীপাড়া, পুলিশ লাইন, কারবালা রোড, বেজপাড়া, বারান্দিপাড়া, মোল্লাপাড়া, শেখহাটিসহ বিভিন্ন এলাকায় ৫ শতাধিকের বেশি মেস রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে শতাধিক মেস প্রায় শূন্য। এতে আর্থিকভাবে লোকসানের মুখে পড়েছেন মেস গুলোর মালিকরা।
 
কয়েকজন মেস মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির কারণে শিক্ষার্থীরা মেস ছেড়ে চলে গেছেন। তবে এই শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই তারা মেস ছেড়েছেন।
 
কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন জানান, ছাত্র শিবির যাতে কোনো ধরনের নাশকতা চালাতে না পারে, সে জন্য চিহ্নিত মেসগুলো কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে মেসমালিকদেরও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
 
জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার (ডিএসবি) তথ্য অনুযায়ী, যশোরের স্নাতক পর্যায়ের সব কলেজের চারপাশে ৫ শতাধিক মেস রয়েছে। যশোরের বিভিন্ন উপজেলা ও আশপাশের জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা এসব মেসে বসবাস করেন।
 
গত ২১ জুলাই থেকে যশোর পুলিশ বাড়ির মালিকদের তাদের ভাড়াটিয়াদের তথ্য দেবার নিদের্শ জারি করেন। ৩ আগস্ট ছিল তথ্য দেবার শেষ তারিখ। বিশেষ করে কলেজের আশপাশের মেস গুলোতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হয়। চালানো হয় অভিযান। এসব কারণে শিবিরের নেতাকর্মীরা তাদের চিহ্নিত মেসগুলো ছেড়ে অন্যাত্র ঠাঁই নিয়েছেন। এতে এসব এলাকার অনেক মেস এখন ফাঁকা হয়ে গেছে। ঝামেলা এড়াতে অন্য শিক্ষার্থীরাও এসব মেসে উঠতে চায় না।
 
পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশের পক্ষ থেকে মেস মালিকদের ফরম দেয়া হয়। ওই ফরমে শিক্ষার্থীদের ছবিসহ ঠিকানা ও কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন বিভাগে পড়ছেন, তা জানতে চাওয়া হয়। তা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী মেস থেকে কবে চলে যাচ্ছেন এবং মেসে নতুন কোনো শিক্ষার্থীর আগমন ঘটলে সে সব তথ্যও ফরমে চাওয়া হয়। এতে মেসগুলোতে বসবাসকারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে মেস কর্তৃপক্ষসহ পুলিশের জানার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু এই কার্যক্রমে মেসগুলোর পক্ষ থেকে তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি।
 
এ বিষয়ে এমএম কলেজের পূর্বপাশের একজন মেস মালিক বলেন, তিনি অনেক আগেই পুলিশের ফরম পেয়েছেন। কিন্তু মেসে বসবাসরত শিক্ষার্থীরা সহযোগিতা না করায় সেই ফরম জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। কেননা, কখন কে আসে এবং যায় তা মনিটরিং করা খুব কষ্টকর ব্যাপার। তাই মেস উঠিয়ে দিয়েছি।
 
শহরের ষষ্টিতলা এলাকার একজন ব্যাংক কর্মকর্তা জানান, তার বাড়িতে এমএম কলেজের ৮ জন শিক্ষার্থী মেস করে ভাড়া থাকত। পুলিশের তোড়জোড়ে আমি ছাত্রদের অন্যত্র চলে যেতে বললে তারা চলে গেছে।
 
আরেক মেস মালিক বলেন, ফরম দিলেও শিক্ষার্থীরা তা পূরণ করে দেয় না। বেশি চাপ দেয়ায় অনেকেই মেস থেকে চলে গেছেন। এ অবস্থায় মেসগুলো খালি হয়ে যাওয়ায় ব্যবসা নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
 
যশোর এমএম কলেজের শিক্ষার্থী রুমা সরকার বলেন, পুলিশের অভিযান চলার কারণে আমি মেস ছেড়ে বোনের বাড়িতে উঠেছি। তবে অনেক মেস মালিক পুলিশের এই পদক্ষেপকে গুরুত্বের সঙ্গেই নিয়েছেন।

সিটি কলেজপাড়ার একটি মেসের মালিক মাজহারুল ইসলাম বলেন, তিনি তার মেসের শিক্ষার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত পুলিশকে জমা দিয়েছেন। এই কাজে অন্যদেরও এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। কেননা বিপথগামী যুবকরা মেসে আশ্রয় নিয়ে থাকে।
 
এ ব্যাপারে যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদ আবু সরোয়ার জানান, আমরা তথ্য যাচাই বাছাই করে দেখছি। একই সাথে অভিযানও অব্যাহত রেখেছি। কেউ যাতে নাশকতা করতে না পারে সেজন্য পুলিশ সতর্ক। শিবির অধ্যুষিত মেস গুলো আমরা বিশেষ নজরদারিতে রেখেছি।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষা ও প্রযুক্তি বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই