তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

তজুমদ্দিনে জোয়ারের পানিতে মৎস্য চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন

তজুমদ্দিনে জোয়ারের পানিতে মৎস্য চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি সাধন
[ভালুকা ডট কম : ০৭ সেপ্টেম্বর]
ভোলার তজুমদ্দিনে রোয়ানুর প্রভাবে টর্ণেডোর আঘাতে উপজেলা বিভিন্ন এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে মাছ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতিসাধণ হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষিরা তাদের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে অতিদ্রুত সরকারী সহযোগীতা চান।
 
মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে এ উপজেলায় মোট ১৫১.৮০ হেক্টর জমিতে ১২৫০টি পুকুরের মাছ ভেসে যায়। এতে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের মধ্যে ক্ষকিগ্রস্থ পুকুরের তালিকায় রয়েছে চাঁদপুরে ৬৫০টি, মলংচড়ায় ৫০টি, সোনাপুর ৩৫০টি, চাঁচড়ায় ১৫০টি ও সম্ভুপুরে ৫০টি পুকুরের মাছ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে প্রবেশ করা পানিতে। ক্ষতিগ্রস্থ পুকুরের তালিকা করা হলেও করা হয়নি ক্ষতিগ্রস্থ মাছ চাষির তালিকা। মৎস্য চাষিরা জানান, উপজেলা মৎস্য অফিস ক্ষতিগ্রস্থদের যে তালিকা করছে তা সঠিক নয়। প্রকৃত পক্ষে ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষি আরো অনেক বেশি। ক্ষতিগ্রস্থ পুকুরে চাষকৃত মাছেপরিমান নির্ধারণ করা হয়েছে ২২৫ মেট্রিক টন। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বলেও জানান মৎস্য অফিস।

মাছ চাষিদের পাশাপাশি রেণু চাষিরাও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এ উপজেলায়। অতিমাত্রার জোয়ারের পানিতে রেণু ক্ষতি হয়েছে ১৬.২ মেট্রিক টন যার বর্তমান বাজার মূল্য ২২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। তজুমদ্দিন উপজেলায় সরকারী ও মালিকানা মিলিয়ে মোট ৪৩৫০টি পুকুর রয়েছে। তবে এ উপজেলায় এবছর কত মেট্রিক টন মাছের উৎপাদন নির্ধরণ করা হয়েছে এমন প্রশ্নে জবাব দিতে পারেনি মৎস্য অফিস। জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ অধিকাংশ পুকুর এখনো জমে থাকা পানিতে ডুবে রয়েছে।

চাঁদপুরের মৎস্য ও রেণু চাষি মোঃ সাইদ জানান, আমার একটি পুকুরে ১ লক্ষ ১০ হাজার রেণু চাষ করি । জোয়ারের পানিতে আমার পুকুরটা ডুবে যায় পরে রেণু বিক্রি শেষেদেখা যায় মাত্র ৩৩হাজার রেণু রয়েছে। বাকি রেণু জোয়ারের পানিতে চলে যায় এতে আমার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১লক্ষ ৪০ হাজার টাকা। অন্যদিকে চাষ করা পুকুর থেকেও জোয়ারের পানিতে মাছ চলে যায় এতেবড় ধরণের ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি তার ক্ষতি পুরণের জন্য অতিদ্রুত সরকারী সহযোগীতা কামনা করেন।

শম্ভুপুর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মৎস্য চাষি হুমায়ুন কবির জানান, আমার ২টি পুকুরের ২ লক্ষ রেণু পোনা জোয়ারের পানিতে সম্পূর্ন ভেসে যায়। এতে আমার প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়। তিনি আরো জানান, সরকারী সহযোগীতা ছাড়া আমাদের এতো বড় ক্ষতি পূরণ করা সম্ভব না।

সোনাপুর ইউনিয়নের সৃষ্টিধরগুহ এলাকার মাছ চাষি মোঃ আলম মহাজন জানান, অতিমাত্রায় জোয়ারের পানির চাপে আমার ২টি পুকুরের পাড় ভেঙ্গে সম্পূর্ণ মাছ চলে যায়। এতে আমার প্রায় ২ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তজুমদ্দিন প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মৎস্য চাষী হেলাল উদ্দিন লিটন জানান, জোয়ারের পানিতে আমার ৩টি পুকুরের মধ্যে ২টি আংশিক ক্ষতি হলেও একটির পাড় ডুবে সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পুরো মাছ চলে যায়। এতে আমার প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
 
তজুমদ্দিন উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মারজান সরকার জানান, ক্ষতিগ্রস্থ মৎস্য চাষিদের মাছের পোনা দেয়ার মাধ্যমে পূর্ণঃবাসন করার চেষ্টা চলছে। ক্ষতির কারণে চাষীদের যাতে করে মাছ চাষের আগ্রহ না হারায় তার জন্য উন্নতমানের হ্যাচারী থেকে উন্নত পোনা আনতে উদ্বুদ্ধ করা হবে।

এ উপজেলার অধিকাংশ মাছ চাষি ব্যাংক ও সরকারী বিভিন্ন দপ্তর থেকে ঋণ নিয়ে মাছ চাষ করে। কিন্তু জোয়ারের পানিতে মাছ চলে যাওয়ায় এখন ঋণের টাকা পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এখন ঋণগ্রস্থ মাছ চাষিরা সরকারের কাছে তাদের ঋণ মওকুপের দাবী জানান। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই