তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গৌরীপুর আজও পর্যটন নগরী হিসাবে ঘোষিত হয়নি

বিশ্ব পর্যটন দিবস,ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক
গৌরীপুর আজও পর্যটন নগরী হিসাবে ঘোষিত হয়নি
[ভালুকা ডট কম : ২৬ সেপ্টেম্বর]
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিশাল ভাষ্কর্য্য, জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধু’র প্রতিকৃতি নিয়ে বঙ্গবন্ধু চত্বর, বীরঙ্গনা সখিনার সমাধিস্থল আর বারো জমিদারের সুনিপুণ কারুকার্যে নির্মিত প্রাচীন ভবন, গোলপুকুর, বৃত্তাকার দ্বীপ, অনন্তসাগর, চিমুরানীর দীঘি, খাজা উসমান খাঁর কেল্লা, নিজাম উদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) মাজার, দৃষ্টিনন্দন গৌরীপুর আর.কে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারি কলেজ, পামবীথি সড়ক, ঐতিহাসিক রামগোপালপুর জমিদারের সিংহ দরজা, যুগলবাড়ী, শান বাঁধানো ঘাট, বোকাইনগরের শাহী মসজিদ সহ সবুজ শ্যামল ছায়া ঘেরা বিলুপ্ত প্রজাতির বৃক্ষরাজির ভান্ডার ময়মনসিংহের গৌরীপুর।

এসব স্থাপনা সংরক্ষণ ও আর্কষণীয়ভাবে উপস্থাপন দেখতে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা, ভ্রমণে সহযোগিতা, থাকার সুব্যবস্থা করার জন্য ১৯৯৮সাল থেকে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এ অঞ্চলকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে আসছে। উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের বীরঙ্গনা সখিনার সমাধিস্থলকে পর্যটন এলাকা হিসাবে ঘোষণার দাবি নিয়ে মাঠে নামেন মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম। ২০০১ সালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এর নিকট পর্যটন নগরী করার জন্য আবেদন ও ফাইল উপস্থাপন করেন। এরপর কয়েক দফা এ দপ্তরের কর্মকর্তাগণ পরিদর্শন করে। তবে ১৬বছরেও পর্যটন নগরী হিসাবে গৌরীপুরকে স্বীকৃতি দেয়ার অগ্রগতি হয়নি।

প্রয়াত সাবেক স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ ক্যাপ্টেন (অব.) মজিবুর রহমান ফকির এমপি’র উদ্যোগে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের কলতাপাড়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৃহৎ ভাষ্কর্য্য, জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি দিয়ে মুর‌্যাল তৈরির পর বিষয়টি আবারও সরব হয়ে উঠে। তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দূর-রে-শাহওয়াজ ২০১৫সালে বীরঙ্গনা সখিনার ইতিহাস-জমিদারের স্থাপত্য শৈলী ও বঙ্গবন্ধু ভার্ষ্কয্য নিয়ে গৌরীপুর উপজেলাকে পর্যটন নগরী হিসাবে গড়ার লক্ষ্যে পত্র প্রেরণ করেন।

পর্যটকদের আকর্ষণ করতে ময়মনসিংহ ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে গৌরীপুর লজ থেকেই শুরু হয়েছে স্থাপত্য শিল্প। রামগোপালপুর পাওয়ারী জগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর রঙিন কাচের প্রাসাদ, কৃষ্ণমন্দির ও প্রাসাদের সুরঙ্গাপথ পর্যটকদের মুগ্ধ করছে। সামনে রয়েছে ঐতিহাসিক সিংহ দরজা, সাঁন বাঁধানো পুকুর ঘাট আর শতবর্ষী দুটি গাছ। তবে ভবানীপুরের জমিদার জ্যোতিষ চন্দ্র চৌধুরীর বাড়ির শেষ চিহ্নটুকুও ধ্বংসের পথে। রয়েছে বোকাইনগর খাজা উসমান খাঁর কেল্লা, সম্রাট আলমগীরের আমলে নির্মিত শাহী মসজিদ আর হযরত নিজাম উদ্দিন আউলিয়া (রহঃ) মাজার দেখতে। শাহ মারুফ (রহঃ) মাজার ও কালীবাড়ীর প্রাচীন মঠ, বীরঙ্গনা সখিনার সমাধিস্থল মাওহা ইউনিয়নের কুমড়ী গ্রামে। সখিনার সমাধিস্থলে যেখানে কুন্দকুসুম গাছগুলো এখনো ঐতিহাসিক নির্দশন হিসাবে টিকে আছে। এগাছগুলো বীরঙ্গনা সখিনার স্বামী ফিরোজ খাঁর হাতে রোপিত বলে অনেকের মতবাদ। রয়েছে গৌরীপুরের শহরের ঐতিহ্যবাহী সরকারি কলেজ, কৃষ্টপুরের জমিদার সুরেন্দ্র প্রাসাদ লাহিড়ীর দৃষ্টি নন্দন বাড়ীর ভবন, পুজা মন্দির, ফরাসী স্থাপত্য শৈলীতে নির্মিত জমিদার ধীরেন্দ্র কান্ত লাহিড়ীর এক গম্বুজের সুদৃর্শ্য টিনের গোলঘর, বাগানবাড়ীতে দূর্গা মন্দিরের সঙ্গে কৃষ্ণমন্দির, এক গম্বুজের জোড়া ভগ্ন শিব মন্দির ও কালী মন্দির, সুউচ্চ পামগাছের সাড়ি, জোড়াপুকুরের ঘাঁট, গোলপুকুর, বৃত্তাকার দ্বীপ ও জোড়া আমগাছ। জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর নিজ বাড়ীতে মহিলা ডিগ্রী কলেজ, গৌরীপুর প্রেসক্লাব, নাট্য মন্দির, প্রাচীন দূর্গামন্দির, জমিদার ব্রজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরী তার পিতা রাজেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর নামে প্রতিষ্ঠিত রাজেন্দ্র কিশোর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়।

শীত আর উৎসবে এসব স্থাপত্য শৈলী দেখতে দেশি-বিদেশী পর্যটক আর ভ্রমণপিপাসু মানুষের উপচেপড়া ভিড় জমে উঠছে। তবে সরকারি কলেজে ছিনতাই, মাদকসেবীদের হাতে হয়রানি প্রায়শঃ শিকার হচ্ছেন পর্যটকরা। রাত্রি যাপনে নানা সমস্যা। ভ্রমণেও নিরাপত্তার অভাব। সরকারের হস্তক্ষেপ না থাকায় রামগোপালপুর জমিদার বাড়ির মূল্যবান জিনিসপত্র হরহামেশা চুরি হচ্ছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই