তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রঙিন বেলুনে প্রতিবন্ধী শামীমের রঙিন স্বপ্ন

রঙিন বেলুনে প্রতিবন্ধী শামীমের রঙিন স্বপ্ন
[ভালুকা ডট কম : ২৬ সেপ্টেম্বর]
লোকটির পড়নে ময়লা শার্ট ও লুঙ্গি। খুড়িয়ে খুুড়িয়ে পথ চলছেন শহরের ব্যস্ত সড়ক ধরে। কাঁধে রয়েছে ছোট একটা বাঁশের খুঁটি। তাঁতে বাঁধা রয়েছে হরেক রকম রঙ্গিন বেলুন।

কেউ  বেলুনওয়ালা বলে ডাক দিলে থামছেন তিনি। তারপর বেলুন বিক্রি করে আবারো পথচলা শুরু। বুধবার সন্ধ্যায় এই দৃশ্য ধরা পড়লো ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরে হারুন পার্ক এলাকায়। সারাদিন বেলুন বিক্রি করে ক্লান্ত লোকটি। তাই চায়ের দোকানে হালকা নাস্তার ফাঁকেই কথা হয় তার সাথে। নাম তার মোঃ শামীম (৩৫)। বাড়ি নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের দুদীকেরানী বাড়ি গ্রামে। বাবার নাম আব্দুল হাই। তিন ভাই- বোনের মধ্যে শামীম সবার বড়।

কথায় কথায় জানালেন, জন্মের পর তার টাইফয়েড  রোগ হয়েছিলো। এরপর থেকে দু পায়ে তার সমস্যা। খুড়িয়ে খুড়িয়ে হাটতে হয়। ভারী কোনো কাজ করতে পারে না। পারিবারিক অভাব-অনটনের কারণে দশম শ্রেণিতেই পড়াশোনার ইতি ঘটে। তাই জীবিকার তাগিদে প্রথমে গ্রামে মোদী দোকান দেন কিন্তুু লাভের মুখ দেখেননি। এরপর এই ব্যবসা বাদ দিয়ে ঢাকায় কাঁচাবাজারের ব্যবসা শুরু করে সেখানেও স্থানীয় হতে পারেনি। পরে দুই বছর আগে গ্রামে ফিরে এসে বেলুন বিক্রির ব্যবসা শুরু করে।

প্রতিদিন বেলুন বিক্রি করে যে টাকা আয় হয় সেটা দিয়েই স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে চার সদস্যের সংসারে জীবিকার রসদ যুগিয়ে যাচ্ছেন শামীম। পুঁজি কম থাকায় প্রতি সপ্তাহে ঢাকার চকবাজার থেকে দুই হাজার টাকার বেলুন কিনে আনেন শামীম। নেত্রকাণা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ঘুরে বেলুন বিক্রি করেন তিনি। প্রতিটি বেলুনের মূল্য দশ টাকা। প্রতিদিন প্রায় এক হাজার টাকার বেলুন বিক্রি করেন। এতে তার প্রায় অর্ধেক টাকাই লাভ হয়। বেলুনের ক্রেতা বেশির ভাগ প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিশুরা। মাঝে মাঝে আবার বড়রাও বেলুন কিনে নেন। তবে শামীম জানিয়েছেন বেলুনের ব্যবসা লাভজনক হলেও পায়ে সমস্যা থাকার কারণে সে বেশিক্ষণ হাটতে পারেনা। নিজ ইউনিয়নে প্রতিবন্ধী কার্ডের জন্য আবেদন করলেও এখন পর্যন্ত কার্ড পায়নি। কার্ডটা পেলে হয়তো তার কিছুটা আর্থিক উপকার হতো।

এদিকে শামীমের দুই মেয়ে বড় হচ্ছে। বড় মেয়ে শাহিদা আক্তারে বছর ৬ বছর। সে স্থানীয় একটি মক্তবে পড়ে। ছোট মেয়ে আফরিন সুলতানার বয়স ৬ মাস। শামীমের স্বপ্ন মেয়ে দুই মেয়ে বড় হবে। মানুষের মতো মানুষ হবে। কিন্তুু সে বিছানায় পড়ে গেলে তার তার স্ত্রী ও সন্তানদের কি হবে সেটা ভেবে কোনো কুলকিনার খোঁজে পায়না শামীম। কারণ একদিন বেলুন নিয়ে রাস্তায় না বের হলে এখনো যে ঘরে খাবার জোটে না তার।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পাঠক মতামত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই