বিস্তারিত বিষয়
যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারের করুন দশা ২২ সেডের মধ্যে ১৩ টিই খালি
যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারের করুন দশা ২২ সেডের মধ্যে ১৩ টিই খালি
[ভালুকা ডট কম : ১১ অক্টোবর]
প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ আর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে করুণ দশা বিরাজ করছে যশোর সরকারি হাঁস-মুরগি খামারে। গত দুই বছর খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে খামারটির কার্যক্রম। বর্তমানে মুরগির ২২টি সেডের মধ্যে ১৩ টিই শূন্য। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণে প্রচুর সম্ভাবনা থাকা সত্তেও প্রতিষ্ঠানটি গত একযুগেও লাভের মুখ দেখেনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মুরগি পালন, খামারে উৎপাদিত ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো ও বাজারজাত করণের উদ্দেশ্যে ১৯৪৯ সালে যশোর শহরের শংকরপুরে ২৭ বিঘা জমির উপর গড়ে তোলা হয় সরকারি হাঁস-মুরগি খামার। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এখানে একসাথে হাঁস-মুরগি পালন করা হলেও পরবর্তীতে এখানে শুধু মুরগি পালন ও বাচ্চা ফুটানো শুরু হয়।
সরেজমিনে খামারে গিয়ে দেখা যায়, মুরগি পালনের জন্য বর্তমানে এখানে রয়েছে ২২টি সেড। এর মধ্যে ছয়টি সেডের অবস্থা জরাজীর্ণ। বাকি ১৬টি সেডে কোন প্রকার মুরগি পালন করা গেলেও অবস্থা নাজুক। বর্তমানে নয়টি সেডে সোনালী, ফাউমি (পাকিস্তান) ও আরআইআর (ইংল্যান্ড) জাতের মুরগি রাখা হয়েছে।
খামারের কর্মচারীরা জানান, প্রতি বর্ষা মৌসুমে খামার জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। তাছাড়া সীমানা প্রাচীর নিচু হওয়ায় প্রায়ই চুরি হয় মুরগিসহ অন্যান্য সামগ্রী। পরিবেশ বজায় না থাকার কারণে প্রচুর কুকুর ও কাকের উপদ্রব দেখা দেয়। যে কারণে মুরগি পালন ও মুরগির ডিম ফোটাতে নানা সমস্যা দেখা দেয়। কেননা কাক ও কুকুর নানা ধরনের জীবাণু বয়ে আনায় এসব সমস্যার সৃষ্টি হয়। এছাড়া রোগ প্রতিরোধে বহিরাগতদের যথেচ্ছ প্রবেশে কোন আধুনিক ব্যবস্থা না থাকায় খামারটি অনেকটা অনিরাপদ হয়ে পড়ে আছে।
খামারটিতে কর্মরত পোল্ট্রি টেকনিশিয়ান সেলিম রেজা বলেন, ২০১৪ সালের ২৭ মার্চ বার্ড ফু আক্রান্ত হওয়ায় খামারের মুরগি ধ্বংস করে খামারটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এক বছরের বেশি সময় বন্ধ থাকার পর ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল খামারটি পুনরায় চালু করা হয়। বর্তমানে খামারটিতে মুরগি পালনসহ বাচ্চা ফুটানো হচ্ছে। পরে সেগুলো বিভিন্ন এলাকার খামারিদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে।
সেলিম রেজা আরো বলেন, খামারটিতে মুরগি পালনে নানা সমস্যা বিরাজমান। বিশেষ করে খামারটির অধিকাংশ সেডই এখন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এগুলো সংস্কার করলে এবং প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে লাভের মুখ দেখা যেতো।
আব্দুস সামাদ নামে একজন মুরগি খামারি বলেন, খামারটি পরিপূর্ণভাবে চালু করা গেলে এ অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হতো। এটি এখন নাম সর্বস্ব একটি প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা প্রায়ই এখানে মুরগি, ডিম ও বাচ্চা নিতে আসি। প্রয়োজনীয় উৎপাদন না থাকায় অধিকাংশ সময় আমাদের মুরগির বাচ্চা দিতে পারে না। যে কারণে খামারটি যশোরের মানুষের তেমন কোন কাজে আসছে না।
একই কথা জানান রুহুল আমীন সর্দার নামে আরেকজন মুরগি চাষি। তিনি আরো বলেন, যুগ যুগ ধরে শুনে আসছি এখানে একটি সরকারি মুরগি খামার আছে। তবে এর কোন সুফল আমরা পাইনি। অথচ প্রতিষ্ঠানটি যদি ঠিকমত চলতো তাহলে যশোর শহরবাসীর মাংস ও ডিমের চাহিদা এখান থেকেই অনেকাংশে পূরণ হতো। এ জন্য তিনি অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে উৎপাদনমুখী করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান।
পোল্ট্রি ব্যবসায়ী রাজিবুর রহমান জানান, যশোরে অনেক বেসরকারি মুরগির খামার লাভজনক অবস্থায় রয়েছে। অথচ সরকারি খামারটি এ অঞ্চলের মানুষের কল্যাণে তেমন কোন কাজে আসছে না। সঠিকভাবে পরিচালিত হলে খামারটি পুষ্টি চাহিদা পূরণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারতো। এজন্য এটিকে পূর্ণাঙ্গভাবে উন্নত করতে সরকারের নজর দেয়া উচিৎ।
এদিকে সরকারি মুরগি খামারটিতে মুরগি ও মুরগির ডিম ক্রয়-বিক্রয় নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি শহরের বাইরে এক কেন্দ্রে অবস্থিত হওয়ায় এক শ্রেণির প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রভাব বিস্তার করে মুরগি ও মুরগির ডিম কিনে নিয়ে যায়। এক্ষেত্রে খামারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনেক সময় নাজেহাল হন বলেও অভিযোগ রয়েছে। সাংবাদিক নামধারী কতিপয় টাউট ব্যক্তিও খামারে গিয়ে প্রভাব বিস্তার করে মুরগি ও ডিম নিয়ে আসে বলেও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী জানান।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- রাণীনগরে সরকারের ঘরে ধান দেয়নি কৃষকরা [ প্রকাশকাল : ১৭ মার্চ ২০২৪ ০১.০৮ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে দামী মসলা জিরার বাম্পার ফলন [ প্রকাশকাল : ১৩ মার্চ ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে চলছে কৃষি জমিতে পুকুর খনন [ প্রকাশকাল : ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৮.০০ অপরাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে ধানের চারা রোপন কাজের উদ্বোধন [ প্রকাশকাল : ০৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- যন্ত্রে ধানগাছ রোপণ করছে রাণীনগরের কৃষক [ প্রকাশকাল : ২৬ জানুয়ারী ২০২৪ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- কালিয়াকৈরে মাছ চাষে ফিশারিজের সফলতা [ প্রকাশকাল : ০৯ জানুয়ারী ২০২৪ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে ভর্তুকিতে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ [ প্রকাশকাল : ০২ জানুয়ারী ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে বিনামূল্যে সবজির বীজ বিতরণ [ প্রকাশকাল : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁর মাঠে শোভা পাচ্ছে সরিষার হলুদ ফুল [ প্রকাশকাল : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭.৩১ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত [ প্রকাশকাল : ২২ নভেম্বর ২০২৩ ০১.৩০ অপরাহ্ন]
- নান্দাইলে নগদ অর্থ ও উপকরণ বিতরণ [ প্রকাশকাল : ২০ নভেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে জি-৯ কলা চাষে সাড়া ফেলেছে সুফলা [ প্রকাশকাল : ১৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষি প্রণোদনার বীজ-সার বিতরণ [ প্রকাশকাল : ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- কালিয়াকৈরে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিক্ষোভ [ প্রকাশকাল : ২৩ অক্টোবর ২০২৩ ০১.৪৪ অপরাহ্ন]