তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

যশোরে গত ২০১৬ সালে ১০৪ খুন

যশোরে গত ২০১৬ সালে ১০৪ খুন
[ভালুকা ডট কম : ০১ জানুয়ারী]
যশোরে ২০১৬ সালে চিনা নাগরিক ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১০৪ জন খুন হয়েছেন। এরমধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতাও রয়েছেন। আর মধ্যরাতে কথিত গোলাগুলির খবর ছিল বছর জুড়েই।এসব হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হলেও অনেক খুনের রহস্য অজানাই থেকে গেছে। গ্রেফতার হয়নি বহু হত্যা মামলার আসামি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছরের শুরুতেই যশোরের বিভিন্ন স্থানে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গত ১০ জানুয়ারি সদরের চান্দুটিয়ায় হাসনা বেগমকে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। যৌতুক দাবিতে স্বামী তাজ আলী ও তার স্বজনরা এ বর্বরতা চালায়।

জমি নিয়ে বিরোধে ১৪ জানুয়ারি ভাইপোর হাতে জীবন দেন অভয়নগরের যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক মিন্টু পাটোয়ারী। ১৫ জানুয়ারি যৌতুক দাবিতে বসুন্দিয়ার মিজানুর রহমানের মেয়ে মিতু খাতুনকে হত্যা করে তার স্বামী ও স্বজনরা।

২৩ জানুয়ারি জঙ্গি শফিকুল ইসলাম মুকুল রানাকে সদরের বসুন্দিয়া মোড় থেকে পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে বন্দুকযুদ্ধে তিনি মারা যান বলে পুলিশ দাবি করে।

২ য়েব্রুয়ারি শহরের পুরাতন কসবা চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে খুন হন ডিশ ব্যবসায়ী মাহমুদ হাসান মানিক। ৭ য়েব্রুয়ারি ইজিবাইকচালক রুবেল হোসেনকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ১৩ য়েব্রুয়ারি দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হয় নজু ডাকাত। ১৮ য়েব্রুয়ারি শহরতলীর খোলাডাঙ্গা এলাকা থেকে কলেজছাত্র হাবিবুর রহমানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২৩ য়েব্রুয়ারি পুলিশ শহরের ষষ্ঠীতলাপাড়ার সন্ত্রাসী নজরুল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে।

১ মার্চ চুড়ামনকাটি-চৌগাছা সড়কের বেলতলা থেকে উদ্ধার হয় মাদ্রাসা শিক্ষক আবু হুরায়রার লাশ। ৭ মার্চ বিকেলে মণিরামপুরের শ্যামকুড় গ্রামে ব্যাটের আঘাতে মারা যায় মারুফ হোসেন নামে এক শিশু। ২১ মার্চ ঝিকরগাছার গদখালি গ্রামের যুবদল নেতা সায়েদ হোসেন তনু খুন হন বেনাপোলে। ২৩ মার্চ যশোর জেলা বিএনপির নেতা ফেরদৌস হোসেন শহরে খুন হয়। একই দিন শহরতলীর মুড়লী এলাকায় রাসেল প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে খুন হন। ২৪ মার্চ শহরের রায়পাড়া এলাকায় কলেজছাত্র হাসিব তরফদার জিমকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ২৯ মার্চ চরমপন্থী নেতা ও বিএনপি নেতা ইদ্রিস আলী দুর্বৃত্তদের গুলিতে সদর উপজেলার বারীনগর এলাকায় খুন হন। এরপর ৩০ মার্চ সদরের লেবুতলায় বোমা তৈরির সময় বিস্ফোরিত বোমায় ইবাদুল ও সবুজ নামে দুই দুর্বৃত্ত খুন হন। ৩১ মার্চ ইউপি নির্বাচনে শহরতলীর চাঁচড়া ভোট কেন্দ্রে সন্ত্রাসীদের গুলি ও বোমার স্প্লিন্টারে খুন হন আবদুস সাত্তার বিষে নামে এক ফেরিওয়ালা।

৯ এপ্রিল মুড়লী এলাকায় ব্র্যাককর্মী বিলকিস খাতুনকে পিটিয়ে হত্যার পর তার স্বামী পালিয়ে চলে যায়। ১৩ এপ্রিল শামীম মাহমুদ ও আবুজার গিফারি নামে শিবিরের দুই সন্ত্রাসীকে পিটিয়ে হত্যা করে স্থানীয়রা।

৫ জুন বাঘারপাড়ার রঘুনাথপুরের আবদুল বারী ফিলিং স্টেশন থেকে পাম্পের ম্যানেজার ওবায়দুর রহমান ও প্রতিবেশি লিজন খানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ৭ জুন যশোরের পাঁচবাড়িয়ায় পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে আবদুল গণি নিহত হন।

১৫ জুন গভীর রাতে সদরের সতীঘাটায় ‘ক্রসফায়ারে’ খুন হন ফিরোজ হোসেন। অন্যদিকে যশোর কারাগারের সামনে ২০ জুন রাত ৮টায় খুন হন শীর্ষ সন্ত্রাসী হেমায়েত। ২৭ জুন শহরের একতা হাসপাতালের সেবিকা সামিনা ইয়াসমিন মিনার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

২ জুলাই কেশবপুরের ভান্ডারখোলা গ্রামের নবম শ্রেণির ছাত্র বিল্লাল হোসেন খুন হয়। ১৯ জুলাই শহরের বারান্দী মাঠপাড়ায় ‘গোলাগুলি’তে আজিজুর রহমান নেছার নিহত হন। ২৯ জুলাই রাতে শহরতলীর তরফ নওয়াপাড়া বন্দুকযুদ্ধে খুন হন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আবু তালেব।

১ সেপ্টেম্বর খুন হন চৌগাছার পাশশাপোল ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কাশেম। ৮ সেপ্টেম্বর রাতে নরেন্দ্রপুরে আগুন ধরিয়ে হত্যা করা হয় দেড় বছরের শিশু আল ফাতিন ও সৎ মা সীমা খাতুনকে। ২৬ সেপ্টেম্বর যশোরের মথুরাপুরে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় সন্ত্রাসী টোকন।

১০ অক্টোবর সদরের ছাতিয়ানতলায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন আওয়ামী লীগ কর্মী এজাজ আহম্মেদ। ১৩ অক্টোবর ঝিকরগাছার গদখালিতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে খুন হন ইউপি সদস্য রাহাজ্জান আলী। ২ নভেম্বর মনিরামপুরে ‘গোলাগুলিতে’ শ্রমিকদল নেতা আনিসুর রহমান। ৫ নভেম্বর যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের রহমতপুরে ডাকাতির চেষ্টাকালে গণপিটুনিতে নিহত হন নওশের আলী। ৬ নভেম্বর এমএম কলেজ গেটে গণপিটুনিতে মারা যান সন্ত্রাসী শুকুর আলী। ১৫ নভেম্বর মণিরামপুরে মাছের ঘের থেকে বাঘারপাড়ার সবুজ বিশ্বাসের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ১৭ নভেম্বর রাতে শহরতলীর খোলাডাঙ্গার সার গোডাউনের পাশে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হন হাফিজুর রহমান মরা। ১৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে সদরের দৌলতদিহি গ্রামের মাঠে ‘গোলাগুলিতে’ নিহত হন জাহাঙ্গীর আলম। ২৬ নভেম্বর বারান্দীপাড়া কদমতলা টগরের চায়ের দোকানের সামনে সুমন হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। ৩০ নভেম্বর রাতে যশোর-মাগুরা মহাসড়কে সন্ত্রাসী গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রিপন হোসেন খুন হন।

১০ ডিসেম্বর রাতে শহরের টিবি ক্লিনিকের মোড়ে ‘গোলাগুলি’তে সন্ত্রাসী ইউসুফ হোসেন খুন হয়। ১১ ডিসেম্বর কেফায়েতনগর গ্রামে খুন হন গৃহবধূ সেলিনা বেগম। ১৪ ডিসেম্বর রাতে যশোরের উপশহর এলাকার একটি বাড়িতে চীনা নাগরিক চ্যাং হিং সং হ্যাসনকে তার এক সহযোগীর নেতৃত্বে খুন করা হয়।

এসব হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন বলেন, ব্যবসায়ী, পারিবারিক বিরোধ, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে খুনের ঘটনা ঘটেছে। প্রতিটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। আসামিও গ্রেফতার হয়েছে। আইনশৃংখলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য পুলিশ চেষ্টা করেছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই