বিস্তারিত বিষয়
সখীপুরে ১৪ মৌজার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জমি বিক্রি
সখীপুরে ১৪ মৌজার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে জমি বিক্রি
[ভালুকা ডট কম : ১৯ জুন]
তিন দশক আগে জমির প্রস্তুতকৃত নকশা ও পরচা হাতে পেয়েছেন ভূমি মালিকরা। গেজেট প্রকাশ হয়েছে ২৭ বছর পার হয়েছে। এরপরও উপজেলার ১৪টি মৌজার আরএস রেকর্ডের খাজনা নিচ্ছে না স্থানীয় ভূমি অফিস। অন্যদিকে বন বিভাগের আপত্তির কারণে উপজেলার ৬১ মৌজার এসএ রেকর্ডের চলমান নামজারি ও খাজনা আদায় প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবি আদায়ে হরতাল, অবরোধ ও গণঅনশনসহ সব ধরনের কর্মসূচি শেষ করেছেন ভূমি মালিকরা। কোনো কর্মসূচিই আমলে নিচ্ছেন না সরকার। বাধ্য হয়ে ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাস্পে জমি বিক্রি করছেন তারা। ভূমি মালিকদের দাবি-তাহলে আমরা কী ‘নিজভূমেই পরবাসী’।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, ১৯৩৯ সালে ঢাকা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও জামালপুর জেলার ৪২ হাজার একর জমিকে ‘প্রকৃত বনভূমি’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ১৯৮২ সালে প্রধান সামরিক প্রশাসক কর্তৃক আটিয়া বন অধ্যাদেশ’৮২ জারি হওয়ার পর বনবিভাগ কয়েক হাজার রেকর্ডীয় ভূমি মালিককে বন আইনের ৪ ধারায় নোটিশ করেন। পরবর্তী সময়ে বনবিভাগ কোনো কার্যক্রম না করলেও বর্তমানে ওই সময়ে জারিকৃত ৪ ধারা নোটিশের দাগ নম্বরের জমিকে বনের জমি বলে দাবি করছেন। ফলে হয়রানি ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন প্রকৃত ভূমি মালিকরা। টাঙ্গাইল জেলায় ‘প্রকৃত বনভূমি’ ২৮ হাজার ৫৯৫ একর। বনবিভাগ শুধু সখীপুর উপজেলাতেই ৩০-৪০ হাজার একর ‘বনভূমি’ দাবি করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৯৫০ সালের রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইনের বিধান অনুযায়ী জমিদারি প্রথা উচ্ছেদের পর জমিদারদের নামে সিএস (ক্যাডাস্ট্রাল) রেকর্ডকৃত জমি তাঁদের কাছ থেকে সাব-কওলা, পত্তননামা ও কবুলাতমূলে মালিক হন ভূমি মালিকরা। ১৯৫৬-৬২ সালে ভূমি মালিকরা ওইসব জমি ব্যক্তিনামে এসএ (স্টেট একুইজেশন) রেকর্ড করান। ১৯৫৫ সালের ভূমি জরিপ আইনের বিধান অনুযায়ী এসএ রেকর্ডকৃত জমি ১৯৭৬ সাল থেকে সখীপুর উপজেলার ১৪টি মৌজায় আরএস (রিভিশনাল্ সার্ভে) জরিপ শুরু হয়। ১৯৮৩ সাল থেকে ভূমি মালিকরা চলমান আরএস রেকর্ডের নকশা ও পরচা পান। ১৯৮৭ সালে প্রথমে আটটি মৌজার গেজেট প্রকাশিত হয়। সংশ্লিষ্ট দফতর ১৯৯৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর খাজনা আদায়সহ সংশ্লিষ্ট কার্যক্রম করার জন্য স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ে আটটি মৌজার ভলিয়ম পাঠান। তিন মাস পর ১৭ ডিসেম্বর বন বিভাগ ওই জরিপের বিরুদ্ধে আপত্তি দাখিল করেন। বন বিভাগের ওই আপত্তির কারণে আরএস রেকর্ডের কার্যক্রম স্থগিত করেন। বনবিভাগের একই ধরনের অভিযোগে ২০০৬ সাল থেকে উপজেলার ৬১ মৌজার চলমান এসএ রেকর্ডের খাজনা আদায় ও নামজারি প্রক্রিয়াও বন্ধ করে দেন একই কার্যালয়। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে সখীপুরের জমি বেচাকেনা। সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব।
উপজেলার হাতিবান্ধা মৌজার মুন্সী আলীমুদ্দিন বলেন,এসএ রেকর্ড আমাদের বাপ-দাদার নামে। বসবাস ও চাষাবাদও করছি আমরা।প্রতিমাবংকী মৌজার আবুল কাশেম শিকদার বলেন,আমাদের চার পুরুষের কবরের ঠিকানা এই মাটি। দলিল না হওয়ায় ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কমদামে জমি বিক্রি করছি’।
সখীপুর খাজনা বাস্তবায়ন আন্দোলন কমিটির সভাপতি জুলফিকার হায়দার কামাল লেবু বলেন,বৈধ রেকর্ডীয় জমির খাজনা নেওয়ার দাবিতে আন্দোলনই প্রমাণ করে-‘আমরা সখীপুরের ভূমি মালিকরা আজ ‘নিজভূমেই পরবাসী’।
উপজেলা সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা কালিচরণ রায় চৌধুরী বলেন,ভূমি জরিপ আইনে ৩১ ধারা (আপিল) সম্পন্ন হওয়ার পর কোনো সংক্ষুব্ধ ব্যক্তির অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়। তবে রেকর্ডের ত্রুটিসংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থাকলে তা চলমান প্রক্রিয়ায় ট্রাইবুনালে দাখিল ও নিষ্পত্তির বিধান রয়েছে।
জানতে চাইলে সখীপরেুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফা সিদ্দিকা বলেন,একই দাগের জমি সরকার, জনসাধারণ ও বনবিভাগের নামে রেকর্ড হয়েছে। জমির পরিমাণ ও পৃথক সীমানা চিহ্নিত না থাকায় মালিকানা নিয়ে জটিলতা রয়েছে। ফলে নামজারি ও খাজনা আদায় প্রক্রিয়াও হালনাগাদ করা সম্ভব হচ্ছে না।টাঙ্গাইল বিভাগীয় বন সংরক্ষক মাসুদ রানা বলেন,এটি দীঘদিনের জটিলতা। বিষয়টি সমাধানে বৈঠক চলছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী সরকার রাখী বলেন,জটিলতা নিরসনে আলোচনা চলছে। ইতিমধ্যে বনবিভাগ, ভূমি কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠকও হয়েছে। শিগগিরই যাতে ভূমি মালিকরা তাদের মালিকানাধীন জমি বৈধ নিয়মে বেচাকেনা করতে পারেন।’#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- যশোরে চলছে অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক [ প্রকাশকাল : ০১ মার্চ ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- গ্রামীণ সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্রাক্টর [ প্রকাশকাল : ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- শার্শায় বালু উত্তলনে পরিবেশ হুমকির মুখে [ প্রকাশকাল : ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২.৩৫ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরের আবাদপুকুর হাটের জরাজীর্ণ অবস্থা [ প্রকাশকাল : ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১০.৩০ পুর্বাহ্ন]
- জনবল সংকটে তজুমদ্দিনে বেহাল প্রাথমিক শিক্ষা [ প্রকাশকাল : ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে আবাসিক মাস্টারপাড়া [ প্রকাশকাল : ১২ ডিসেম্বর ২০২৩ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- রায়গঞ্জ পৌরসভায় নির্মিত ড্রেন বেড়েছে দুর্ভোগ [ প্রকাশকাল : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২.০০ অপরাহ্ন]
- তজুমদ্দিনে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ [ প্রকাশকাল : ২২ আগস্ট ২০২৩ ০২.২৫ অপরাহ্ন]
- ডিজিটাল প্রতারণার ফাঁদ এমটিএফই [ প্রকাশকাল : ২১ আগস্ট ২০২৩ ০১.৪০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে কৃষি উপকরণ বিতরণে অনিয়ম [ প্রকাশকাল : ১২ আগস্ট ২০২৩ ০২.০০ পুর্বাহ্ন]
- তজুমদ্দিন হাসপাতালে নেই জলাতঙ্ক ও করোনার টিকা [ প্রকাশকাল : ২৪ জুলাই ২০২৩ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নান্দাইলে অবৈধ কারখানায় হুমকিতে জনজীবন [ প্রকাশকাল : ০৭ জুলাই ২০২৩ ১১.০০ অপরাহ্ন]
- রাণীনগরে শিক্ষক যখন চেয়ারম্যান ক্ষতিগ্রস্থ শিক্ষার্থীরা [ প্রকাশকাল : ০৪ জুলাই ২০২৩ ০১.০৫ অপরাহ্ন]
- অস্তিত্ব সংকটে রায়গঞ্জের চান্দাইকোনা বন্দর [ প্রকাশকাল : ০৩ জুলাই ২০২৩ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- উন্নয়নের ছোঁয়া স্পর্শ করেনি রাণীনগরের হাট [ প্রকাশকাল : ৩১ মে ২০২৩ ০১.১৩ অপরাহ্ন]