তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

গল্প নয় সত্য একটা বিষয় সেয়ার করতে চাই সবার সাথে

গল্প নয় সত্য একটা বিষয় সেয়ার করতে চাই সবার সাথে
[ভালুকা ডট কম : ২৫ জুলাই]
সাংবাদিক আসাদুজ্জামন সুমন একটি মানবিক আবেদন পোষ্ট করেছেন তার নিজের ফেইসবুক আইডিতে। সেখানে তিনি ছারোয়ার জাহান নামে এক জন থ্যালাসিমিয়া রুগীকে সাহায্য করা জন্য সমাজের বিত্তবানদের আহবান জানিয়েছে। পোষ্টটি পঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-

মোঃ ছারোয়ার জাহান (১৬+), পিতা মোঃ আলী হোসেন, বাড়িঃ ধামশুর, মল্লিকবাড়ি, ভালুকা, ময়মনসিংহ। তার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো রক্ত দেওয়ার মাধ্যামে। সারোয়ার রক্তচুষা থ্যালাসিমিয়া রুগে আক্রান্ত প্রায় ৮বছর যাবৎ। গরীব বাবা ছেলের চিকিৎসা করে সর্বশান্ত হয়ে এখন একটি ফ্যাক্টোরীর সিকিউরিটি গার্ডের কাজে নিয়োজিত থেকে দ্ইু ছেলে এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে কোনমত সংসার চালাচ্ছে। এ রুগ সারোয়ারকে প্রাইমারী স্কুলের গন্ডি পার হতে দেয়নি। নিজের চিকিৎসার ব্যায় কিছুটা বহন করার জন্য বাড়ির পাশের সানি ব্রিল্ডার্স (মুরগীর বাচ্চা উৎপাদন কারি প্রতিষ্ঠান) থেকে কুড়িয়ে পাওয়া ৫টি বাচ্চা নিয়ে বড় করে বাজারে বিক্রি করেছিলো। পরে বাড়িতে একটি ঘর করে আস্তে আস্তে বড় হয় তার পোল্ট্রি। ১৫০০শত মুরগীর সেট করেছিলো। তখন সে মুটামুটি সচ্ছল, তার চিকিৎসা ব্যায় সে নিজেই বহন করতে পারে। ওই সময় তাকে আমি এক ব্যাগ বি পজেটিভ রক্ত দিয়েছিলাম।

সারোয়ারের শারিরিক ঘঠন দেখে রক্ত দেওয়ার পর তাকে কিছু টাকা দিয়ে বললাম পছন্দ মত কিছু কিনে খেও। সারোয়ার তখন আমাকে বলেছিলো ভাই আপনি ব্যাস্ত মানুষ আমার মত একজন মানুষকে না চিনেই রক্ত দিতে এসেছেন এতেই আমি অনেক খুশি। আমার একটা ছোট ব্যাবসা আছে সেটা দিয়ে আমি নিজের চিকিৎসা ব্যায় বহন করতে পারছি। টাকাটা আপনি নিয়ে যান কোনদিন দরকার পরলে আপনার কাছে যাব। মনে মনে সারোয়ার কে রয়েল স্যালুট জানিয়ে বিদায় নিয়েছিলাম। প্রায় মাস ছয় পরে একদিন বাসট্যান্ড দেখা হয় সারোয়ারের সাথে কাছে এসে সালাম দিয়ে বললো ভাই আমাকে চিনেছেন?? বললাম হুম কিন্তু নামটা মনে নেই।

জিজ্ঞেস করলাম কেমন আছো? নরম কণ্ঠে আমাকে জানালো ভাল নেই ভাই পোল্ট্রিতে অনেক লোকসান হয়েছে। এখন কি করো জানতে চাইলে সারোয়ার বলে ভাই এক বড় ভাইয়ের পরামর্শে রিচ বিজনেস নামের একটি মাল্টি ন্যাশনাল (এমএলএম) কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়েছি। এসব মনে হয় আমাকে দিয়ে হবে না। বেশি সময় দিতে না পারায় ফোন নাম্বার দিয়ে বলেছিলাম কোন সমস্যায় পরলে যোগাযোগ করো। ভালো থেকো। তারপর চলে যায় আরও মাস ছয়। দুই তিন দিন যাবৎ ফোন দিয়ে আজ ভালুকা প্রেসক্লাবে আসে সারোয়ার। আমাকে দেখেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। আমি বললাম কেঁদো না কি হয়েছে বলো।

সারোয়ার বললো “ভাই আমি বাচতে চাই, টাকার জন্য চিকিৎসা ও ঔষধ খেতে পারছি না। আব্বার বেতনে কোনমত সংসার চলছে। আমার চিকিৎসায় টাকা দিলে সংসার চলে না। আমি বাচতে চাই ভাই”। একটু নিরব থেকে ক্লাব সহকারি সাইফুল ভাইকে কলা বিস্কুট আনতে বললাম। খাওয়া শেষে সারোয়ারকে বললাম বাড়ি যাও চিন্তা করো না। নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করো। দেখি কি করা যায় তুমার জন্য। বিদায় দেওয়ার সময় সারোয়ার আমার হাতে ধরে বলে ভাই আমি বাচতে চাই। দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে ট্যাটার্সটা লিখা শুরু করলাম।

আমরা কি একজন সারোয়ারের দায়িত্ব নিতে পারি না???



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পাঠক মতামত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই