তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

যশোর-১ (শার্শা) আসনে চলছে হিসাব-নিকাশ

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
যশোর-১ (শার্শা) আসনে চলছে হিসাব-নিকাশ
[ভালুকা ডট কম : ০৭ সেপ্টেম্বর]
সারা দেশে আলোচনা-সমালোচনা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে ঘিরে চলছে জল্পনা-কল্পনা, চুলচেরা বিশ্লেষণ। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-মহল্লায়, হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট, গ্রামের অলি-গলিসহ সর্বত্র এখন চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। সঙ্গে সঙ্গে বিগত দিনের নেতাদের কর্মকান্ডের চুলচেরা হিসাব-নিকাশ। যশোর-১ (শার্শা) আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনী সম্ভাব্য প্রার্থীরা ইতিমধ্যেই নড়ে-চড়ে বসতে শুরু করেছে।

দেশের সীমান্তবর্তী যশোর-১ আসনে প্রার্থী হতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রায় ডজনখানেক নেতা। এদিকে ক্ষমতা আর অর্থের দ্বন্দে শার্শা আওয়ামীলীগ দীর্ঘদিন চলছে দ্বিধাবিভক্ত। দুই ধারায় ভাগ হয়ে এখানকার নেতাকর্মীরা নিজস্ব ভাব-ভঙ্গিমায় দল পরিচালনা করছেন। হামলা-মামলা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের বেপরোয়া কর্মকান্ডের পাশাপাশি পুলিশী হয়রানির কারণে এখন পর্যন্ত বিএনপি নেতারা মাঠ ছাড়া এবং  অনেক পূর্বেই মাঠে নেই জামায়াত ইসলামী নেতারা। এখন শুধু এই আসনে মাঠের তৎপরতা সরকারী দল তথা আওয়ামীলীগের। সুযোগ পেলে বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দলের নেতারা সরব হয়ে উঠবেন। বর্তমানে সরকারি দল আওয়ামী লীগের টিকিটে টানা ২য় বারের মত জাতীয় সংসদের প্রতিনিধি শেখ আফিল উদ্দিন। ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন মাত্র সাড়ে ৪ হাজার ভোটের ব্যবধানে বিএনপি জোটের প্রার্থী জামায়াত নেতা মাওলানা আজিজুর রহমানকে পরাজিত করে ১’ম বার মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ আফিল উদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় ২’য় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তীব্র প্রতিদ্বন্ধিতায় বিএনপির প্রার্থী আলহাজ্ব আলী কদর নৌকার  প্রার্থী শেখ আফিল উদ্দিনকে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রবীণ নেতা এ্যাডভোকেট তবিবর রহমান সরদার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। অবশ্য ঐ দুটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী আলহাজ্ব আলী কদর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি ছিলেন।

শার্শা উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও বেনাপোল পৌরসভা নিয়ে জাতীয় সংসদের ৮৫ যশোর-১ (শার্শা) নির্বাচনী এলাকা গঠিত। বর্তমানে এই নির্বাচনী এলাকার মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৫৩ হাজার ৪৮১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৬ হাজার ১৮১ জন। আর নারী ভোটারের সংখ্যা ১ লাখ ২৭ হাজার ৩০০ জন।

এই নির্বাচনী আসনটিতে একক ভোটের হিসাবে বিএনপির তুলনায় আওয়ামী লীগ কিছুটা এগিয়ে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য ও বিভিন্ন সময়ে অনুষ্ঠিত ভোটের হিসাব-নিকাশে দেখা যায় একক রাজনৈতিক দল হিসেবে এই আসনে আওয়ামী লীগের রিজার্ভ ভোটের সংখ্যা ৪০-৪৫ শতাংশ। বিএনপির একক ভোটের সংখ্যা ৩৫-৪০ শতাংশ। বিএনপি জোটের শরীক জামায়াতে ইসলামীর একক ভোটের সংখ্যা ১৫-২০ শতাংশ। এক্ষেত্রে জোটগত হিসাবে আওয়ামী লীগের তুলনায় বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোটের সংখ্যা প্রায় ৬০ শতাংশ। যা কিনা আওয়ামী লীগ জোটের চেয়ে ১০-১৫ শতাংশ বেশী। অপরদিকে এই আসনে ২-৩ শতাংশ ভোট পায় জাতীয় পার্টি। বাদবাকি অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর কোন তৎপরতা নেই।

শার্শা আসনে এবার সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, আওয়ামীলীগের প্রার্থীদের মধ্যে যশোর জেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি ও বর্তমান জাতীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।  অপরদিকে বিএনপি ও জামায়াত ইসলামের  প্রচার প্রচারণা বেশী একটা না থাকলেও বহিস্কৃত নেতা কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মফিকুল হাসান তৃপ্তি, কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মহসিন কবির, শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান মধু, সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান  আবুল হাসান জহির। যশোর জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির আজিজুর রহমান ও জাতীয় পার্টির যশোর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও শার্শা উপজেলা সভাপতি আক্তারুজ্জামান।

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন জনগণের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে দলীয় ব্যানারে শিল্পপতি শেখ আফিল উদ্দিন পর পর দুইবার জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিগত দিনের কিছু বিতর্কিত কর্মকান্ডে মানুষের কাছে সমালোচনায় রয়েছেন। আওয়ামীলীগের অন্যপক্ষ ও নিজ পক্ষের দলীয় নেতাকর্মীরা অভিযোগ তোলেন-সন্ত্রাস, লুটপাট, দলীয় কোন্দল, জনগণের প্রতি প্রভাব বিস্তার, মুক্তিযোদ্ধাদের নামে বাওড় দখল, ক্ষমতার অপব্যবহার, শিক্ষার মান্নোনয়নে অনেকটা ব্যর্থ। কিছু কর্মীরা বলছেন যে এলাকার উন্নয়নে শেখ আফিল উদ্দিন যত কাজ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার। কিন্তু তার সময়ে এখানে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন বেশী হয়েছে।

অপরদিকে  যশোর জেলা আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন রয়েছে দলীয় কোন্দলের একটা গ্রুপে। জেলা আওয়ামীলীগ কর্ণধার শাহীন চাকলাদারের আশীর্বাদপুষ্ট লিটনের সঙ্গে দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি ও সু-সম্পর্ক। দলের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে যারা আওয়ামীলীগের কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের অধিকাংশই লিটনকে চেনেন এবং জানেন। বেনাপোল পৌরসভার দৃশ্যত যেসকল উন্নতি লিটনকে রাজনীতির মাঠে সামনের সারিতে দাঁড় করিয়েছে  তার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি বেনাপোলে মাসব্যাপী বাণিজ্য মেলায় উল্লাস নামে র‌্যাফেল ড্র নিয়ে রয়েছেন আলোচনায়। তবে আাগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লিটন এই আসন থেকে নিজেকে দলীয় প্রার্থী হিসাবে প্রচার করে মাঠ দখলে রাখার চেষ্টা করছেন। ইতিমধ্যে তিনি উপজেলার সব ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে নিজ পক্ষীয় নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে কাজ শুরু করেছেন।

সীমান্তের এ আসনটি আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের দ্ব›েদ্ধ হাত ছাড়া হওয়ার ভয় রয়েছে অনেকের মনে। তাই আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে এনে অনেক তৃণমুল নেতা-কর্মীদের মনে একটা কি যেন কি কাজ করছে। এ আসনটিকে ধরে রাখতে হলে সৎ, নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, জ্ঞানী, বিচক্ষণতা ও সর্বোপরি প্রধান মন্ত্রীর আস্তাভাজন একজন সুখ্যাতি পূর্ণপ্রার্থী। একজন নতুন মুখ যদি এ আসন থেকে মনোনয়ন পান তাহলে দলীয় নেতা-কর্মীরা ও সাধারণ ভোটাররা তা সাদরে গ্রহণ করবেন বলে অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেছেন।

ইতিমধ্যেই শার্শা-বেনাপোল এলাকার পাড়া-মহল্ল¬ায়, হাট-বাজার, মাঠ-ঘাট, গ্রামের অলি-গলিসহ সকল স্থানেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে একজন নতুন মুখ। বর্তমান সংসদ সদস্য ও বেনাপোল পৌর মেয়র এই দুইজন এখন দলীয় কোন্দলে দু’মেরুতে অবস্থান। দ্ব›েদ্ধর এই টানা পোড়নে কেউ কারো মুখ দেখতে পর্যন্ত চায়না। এই অবস্থায় আওয়ামী ঘরানার বহু কর্মী-সমর্থকরা মনে করছে আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসাবে তৃতীয় কোন ব্যক্তি নতুন করে নৌকার হাল ধরুক। যিনি হতে হবে সৎ, সাহসী,  বিনয়ী, ভদ্র, দূরদর্শী, জ্ঞানী, প্রধান মন্ত্রীর আস্তাভাজন। তাই অনেকেই মনে করেন এই মুহুর্ত্যে মুক্তিযুদ্ধকালীন শার্শা থানার মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার, সাবেক এডিশনাল আই.জি.পি, সাবেক মহা-পরিচালক পাসপোর্ট  ও ইমিগ্রেশন,  বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আলহাজ্ব মো ঃ আব্দুল মাবুদ (পিপিএম) যদি নৌকার হাল ধরে, তবে এ পর্যায় রক্ষা পেতে পারে শার্শা উপজেলার নৌকার আদর্শের সৈনিকেরা। হাফ ছেড়ে বাচতে পারে এলাকার সর্ব স্তরের সাধারণ জনগণেরা। সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর তিনি এলাকায় এ পর্যন্ত তেমন একটা সরব হননি। মাঠ পর্যায়ে তার কোন কর্মকান্ড চোখে না পড়লেও সম্প্রতি ঈদ শুভেচ্ছা ব্যানারে ছেয়ে গেছে শার্শা উপজেলার অলিগলি।

১১নং নিজামপুর ইউনিয়নের কেরালখালী গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, দু’জন দু’মেরুতে থাকায় নতুন মুখ হিসাবে মুক্তিযুদ্ধকালীন শার্শা থানার মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার, সাবেক এডিশনাল আই.জি.পি, সাবেক মহা-পরিচালক পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল মাবুদ (পিপিএম) নৌকা প্রতীক পেলে জয় পাওয়া সম্ভব।

১নং ডিহি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ যুগ্ম-সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, মাবুদ সাহেব একজন সম্মানী ব্যক্তি। প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক যার হাতে তুলে দেবেন, আমরা তার হয়ে কাজ করব ?

৭নং কায়বা ইউনিয়নের সাবেক আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক রবিউল ইসলাম বলেন, শার্শা উপজেলার আওয়ামীলীগ এখন দু’খন্ডে বিভক্ত। বর্তমান সংসদ সদস্য ও বেনাপোল পৌর মেয়র দ্বারা তরী পার হওয়া সম্ভব নয়। যদি এই সময়ে নেত্রী আব্দুল মাবুদ ভাইকে নৌকা প্রতীক তুলে দেন তাহলে শার্শার মাটিতে আওয়ামীলীগের অস্তিত্ত টিকে থাকবে।

মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী বলেন, দেশ মাত্তৃকার টানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধকালীন শার্শা থানার মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার আব্দুল মাবুদ ভাইকে প্রধান মন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নৌকা প্রতীক দিলে আমরা আবারো ৭১ সালের রনাঙ্গণের মত ঝাপিয়ে পড়ব। ১৯৭১ সালের পর থেকে যশোরের শার্শা আসনটি অতি মর্যাদাকর আসন। এই আসনটি ধরে রাখতে হলে গভীর পর্যবেক্ষণ ও চুলচেরা বিশ্লেষণ, হিসাব-নিকাশ করতে হবে। শার্শা বাসীর আশা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা যেন একজন  সৎ, সাহসী,  বিনয়ী, ভদ্র, দূরদর্শী, জ্ঞানী বিবেচনায় রেখে নৌকা প্রতীক তুলে দেন।

ইতিমধ্যে এলাকায় চাউর হয়েছে তৃপ্তির বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে তাই এই আগমনকে মাঠ পর্যায়ে স্বাগত জানাতে প্রস্তুতির পাশাপাশি বিরোধিতাও কম নেই। নেতা-কর্মীদের বক্তব্য ওয়ান ইলেভেন সরকারের পর থেকে তৃপ্তি রাজনীতির মাঠে অনুপস্থিত। বিগত দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে শার্শার জাতীয়তাবাদী শক্তি যে কঠোর ভূমিকা পালন করেছে সেখানে তৃপ্তির কোন অংশগ্রহণ ছিল না। বর্তমানে শার্শা উপজেলার বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের প্রায় ১০ হাজার নেতাকর্মী এলাকা ছাড়া। হামলা-মামলার শিকার হয়ে এসব পরিবারগুলোর ছন্নছাড়া অবস্থায়। অনেকেই সহায় সম্বল সব হারিয়ে আজ শুধু রাজনৈতিক কারণে নিঃস্ব। তৃপ্তি এসব বিপদ-আপদগ্রস্থ নেতাকর্মীর পাশে দাঁড়াননি এমনকি তিনি কোন রাজনৈতিক মামলার আসামী হয়ে কারাবরণ করেননি। অথচ আজ সুদিনে হুট করে দলে ফিরে প্রার্থী হবেন সেটা নেতাকর্মীরা মেনে নেবে না।

অপরদিকে তৃপ্তি অনুসারীরা বলছে তিনি দল থেকে বহিস্কার হলেও শার্শার মানুষের বিশেষ করে জাতীয়তাবাদী ঘরনার নেতা-কর্মীদের শক্তি ও প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করেছে। রাজনৈতিক কারণে মাঠে সরব না থাকলেও পরামর্শ ও দিকনির্দেশনার অভাব হয়নি।

কেন্দ্রীয় সেচ্ছাসেবক দলের সহ-সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব মহসিন কবির প্রচার-প্রচারণায় স্তিমিত হয়ে পড়েছে। তিনি তার ব্যবসার কাজ নিয়ে বেশী ব্যতিব্যস্ত থাকায় মাঠে তার কোন কর্মী-সমর্থকদের দেখা পাওয়া যায় না।

শার্শা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব খায়রুজ্জামান মধু জন্মলগ্ন থেকেই বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৮৮ সালে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরে সভাপতি হিসাবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। তিনি এপর্যন্ত দলীয় অনেক হামলা-মামলার শিকার হন। অপারেশন ক্লীনহার্টে অনেক নির্যাতনের শিকার হয়ে কারা বরণ করেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রাণ স্বরূপ। ওয়ান ইলেভেন সরকারের তার রাজনীতির মাঠে  উপস্থিতি ছিল দেখার মত। বিগত দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে শার্শার জাতীয়তাবাদী শক্তি যে কঠোর ভূমিকা পালন করেছে সেখানে অবদান সামান্যতম কম করে দেখা যায়না। এসমস্ত কারণেই তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী।

সাধারণ সম্পাদক ও শার্শা সদর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান  আবুল হাসান জহির এপর্যন্ত দলীয় অনেক হামলা-মামলার শিকার হন। অনেক নির্যাতনের শিকার হয়ে কারা বরণও করেন। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছে নতুন উদ্দিপনা। ওয়ান ইলেভেন সরকারের তার রাজনীতির মাঠে  উপস্থিতি ছিল দেখার মত। বিগত দিনে সরকার বিরোধী আন্দোলন সংগ্রামে শার্শার জাতীয়তাবাদী শক্তি যে কঠোর ভূমিকা পালন করেছে সেখানে অবদান কম নয়। এসমস্ত কারণেই তিনি মনোনয়ন প্রত্যাশী।

অপর দিকে আগামী নির্বাচনে যদি জামায়াত বিএনপির সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করে এবং দলীয় প্রার্থীরা ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করেন তাহলে এই আসনের শক্ত দাবিদার জামায়াত নেতা মাওলানা আজিজুর রহমান। সর্বশেষ প্রতিদ্বন্ধিতা পূর্ণ নির্বাচনে সামান্য ভোটের ব্যবধানে মাওলানা আজিজুর রহমান পরাজিত হয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমানে জামায়াতের সেই অবস্থান নেই বলে মনে করছেন অনেকেই। তাছাড়া হামলা মামলা খেয়ে দলের নেতাকর্মীরা ছিন্নভিন্ন এবং মাওলানা আজিজুর রহমান রাজনীতিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকার কারণে এলাকার সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ নেই।

জাতীয় পার্টির যশোর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ও শার্শা উপজেলা সভাপতি আক্তারুজ্জামান জাতীয় পার্টির একমাত্র কান্ডারী হিসাবে মনোনয়ন প্রত্যাশী। তিনি সৎ, মিষ্ট ভাষার অধিকারী। তিনি এ পর্যন্ত শার্শায় জাতীয় পার্টিকে টিকিয়ে রেখেছেন। দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোলের অবস্থান এই সংসদীয় আসনে। বেনাপোল বন্দরকে বলা হয় দেশের পশ্চিমাঞ্চলের প্রবেশদ্বার। ভারত হয়ে এশিয়া হাইওয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে এই বেনাপোল বন্দর দিয়েই। স্থল পথের বাণিজ্যের শতকরা ৭০ শতাংশই সম্পন্ন হচ্ছে এই বন্দর ব্যবহার করে। বর্তমানে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রয়েছে সর্বোচ্চ সুসম্পর্ক। ফলে বেনাপোল বন্দর দিয়ে সব রকমের আমদানি রপ্তানি বেড়েছে বহুগুণে। সরকার এই বন্দর থেকে প্রতি বছর কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে।

এসব কারণে সরকারের কাছে বা দেশের ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর কাছে বেনাপোল বন্দর তথা শার্শা নির্বাচনী আসনটির গুরুত্ব সব সময় বেশী। প্রতিটি রাজনৈতিক দল এই আসনটি তাদের দখলে রাখতে চেষ্টা করে সব সময়। অতীতের নির্বাচনী ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এই আসনটির দাবিদার উভয় দল। তাই আগামী নির্বাচনে হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে যেমন মরিয়া বিএনপি অন্যদিকে দখলে থাকা এই আসনটি ধরে রাখতে মরিয়া আওয়ামীলীগ। এই দুই দলেই অভ্যন্তরীণ বিরোধ তুঙ্গে। একপক্ষ অন্যপক্ষকে সামান্যতম ছাড় দিতে নারাজ। এই কারণে এই আসনে আগামীতে জয়-পরাজয় নির্ভর করছে প্রার্থী নির্বাচনে কোন দল কতটা কর্মীনির্ভর হতে পারে তার ওপর। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

নির্বাচন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই