তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় গুলশান স্পিনিং মিলের ভাড়াটিয়াদের অত্যাচারে দিশেহারা নিরিহ পরিবার

জমি সংক্রান্ত বিরোধ
ভালুকায় গুলশান স্পিনিং মিলের ভাড়াটিয়া গুন্ডাদের অত্যাচার ও হুমকীতে চারটি নিরিহ পরিবার দিশেহারা
[ভালুকা ডট কম : ২২ সেপ্টেম্বর]
ভালুকায় জমি সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে গুলশান স্পিনিং মিলের (প্রস্তাবিত) গুন্ডাদের অত্যাচার ও অব্যাহত হুমকীতে নিরিহ চারটি পরিবার দিশেহারা হয়ে পড়েছে। ইতেমধ্যে রাতের আঁধারে বসতবাড়িতে হামলা, শিশু ও নারীদের রক্তাক্ত জখম, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং বার বার কাটাতারের বেড়া দিয়ে জমি দখলের চেষ্টা,  একের পর এক মিথ্যে ও বানোট মামলা দিয়ে একাধিকবার কারাগারে প্রেরণ, এমনকি ১৮ সেপ্টেম্বর জমি থেকে ১০ টি বিভিন্ন প্রজাতীয় গাছ কেটে নেয়া ঘটনা ঘটিয়েছে।

এদিকে ওইসব গুন্ডারা অব্যাহত হুমকী দিয়ে আসছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনদের অভিযোগ। এসব ঘটনায় মিলের জিএম ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা চলমান রয়েছে।

অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার ধামশুর মৌজার ১১৩৯ নম্বর দাগে আখালিয়া গ্রামের আব্দুল জব্বার ফকিরের ছেলে রমজান আলী ফকির গংদের সাথে জমি নিয়ে গুলশান স্পিনিং মিলের (প্রস্তাবিত) বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের হিসেবে ১৯ ফেব্রুয়ারী গভীর রাতে গুলশান স্পিনিং মিলের এজিএম জামির আলী ও উর্ধ্বতণ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে  মাইক্রোবাস নিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক লোক বসতবাড়িতে ঘুমন্ত অবস্থায় হামলা চালায়।

এ সময় সেলিনা আক্তার (৩৮), লাভলি আক্তার (৩৬) দিলারা বেগম (২০) নাছিমা (২১), শেফালী (২৩), শেফালীর শিশুকন্যা রাবেয়া (চার মাস), লাকীর শিশু কন্যা তায়েবা (১৪ মাস), রমজান আলী ফকির (৩৫), শিহাব ফকির (১৭), বাছির ফকির (২০) রোকেয়া (৪৪) আহত হন। আহতদের মাঝে সেলিনা আক্তার, লাভলি আক্তার, দিলারা বেগম, নাছিমা ও শেফালীকে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। হামলাকারীরা যাওয়ার সময় বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি সাধন করে।

জমির মালিক রমজান আলী ফকির ভালুকা ডট কম কে জানান, কমদামে জমি বিক্রি না করায় গুলশান স্পিনিং মিলের এজিএম জামির আলী ও উর্ধ্বতণ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে মাইক্রোবাস নিয়ে প্রায় দেড় শতাধিক লোক নিয়ে আমাদেরকে উচ্ছেদ করার জন্য এ হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এমনকি আমাদের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকার মিথ্যা চাঁদাবাজিসহ বেশ কয়েকটি মামলা দিয়ে হয়রানী করছেন। পুলিশের ভয়ে আমারা কয়েকটি পরিবারের কলেজ ছাত্রসহ ২৫/৩০ জন নারী পুরুষ বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

তিনি আরো জানান, গুলশান স্পিনিং মিলের গুন্ডাদের অত্যাচার ও অব্যাহত হুমকীতে আমারা নিরিহ চারটি পরিবারের সদস্যরা দিশেহারা হয়ে পড়েছি। ওদের মিথ্যে মামলায় ইতোমধ্যে আমাকে দু’বার হাজতবাস করতে হয়েছে। অথচ টাকার অভাবে আমি আমার মামলা পরিচালনা করতে পারছিনা। গুলশান স্পিনিং মিল কর্তৃপক্ষ আমাদের চারটি পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো ও এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টির জন্য এখানে জিয়াউল হক নামে একটি হত্যা মামলার আসামীকে নিরাপত্তা কর্মী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। সে সব সময় বন্দুক উচিয়ে বিভিন্ন ধরণের নোংরা গালমন্দসহ ভয়ভীতি ও হুমকী প্রদর্শন করে চলেছে।

জিয়াউল হক নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার ভলিপাড় গ্রামের মৃত: আব্দুল জব্বারের ছেলে। সে ২০১৪ সালে গুলশান স্পিনিং মিলের পক্ষে শ্রীপুর থানার ধনুয়া মৌজায় এটিএনটি স্পিনিং মিলের তফসিলভূক্ত জমি দখল করতে গেলে আব্দুল ছালাম (৩০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক খুন হন। পরে এ ঘটনায় জিয়াউল হকসহ বেশ কিছু ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে এনার গ্রুপের পরিচালক (প্রশাসন) শাহজাদা প্রধান বাবুল বাদি হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা (নম্বর-৪৬) দায়ের করেন। যার ধারা নম্বর-১৪৩,৩২৬,৩০২,২০১ ও ৩৭৯। ওই হত্যা মামলার একজন চার্জসিটভূক্ত আসামী এবং মামলাটি থানা থেকে আদালতে চুড়ান্ত রিপোর্টও (নম্বর-১৩১, তারিখ-১৪,০১,১৪) দেয়া হয়েছিল।

রমজান আলী ভালুকা ডট কম কে জানান, ওসব ঘটরনায় গুলশান স্পিনিং মিলের এজিএম জামির আলী, উর্ধ্বতণ কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান চৌধুরী, ভাড়াটিয়া গুন্ডা জামাল মিয়া ও খোরশেদ আলমসহ বেশ কিছু লোকের বিরুদ্ধে আদালতে দ্রুতবিচার আইনে মামলা করা হলেও প্রায় প্রতিদিনই প্রকাশ্যে তাদেরকে ভালুকা সদরে ঘুরতে দেখা গেছে। এদিকে ১৮ সেপ্টেম্বর মামলা চলমান থাকার পরও আমার জমি থেকে মিলের গুন্ডারা ১০ টি বিভিন্ন প্রজাতীয় গাছ কেটে নিয়েছে।

এ ঘটনায় ২০ সেপ্টেম্বর পৌর মেয়র বরাবর লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এদিকে অসহায়, নিরিহ ও নির্যাতনের শিকার এই পরিবারের সদস্যরা স্থানীয় প্রশাসনসহ উর্ধ্বতণ কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তাসহ সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেছেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই