তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

আত্রাইয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম প্রকল্পের কার্যক্রম

আত্রাইয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে মাতৃস্বাস্থ্য ভাউচার স্কীম প্রকল্পের কার্যক্রম
[ভালুকা ডট কম : ১৪ অক্টোবর]
নওগাঁর আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে “মাতৃ ভাউচার স্কীম” (ডিএসএফ) প্রকল্পের কার্যক্রম মুখ থুবরে পড়ে রয়েছে। ফলে এ প্রকল্পের আওতায় সেবা ও সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার বিপুল সংখ্যক অন্তঃসত্ত্বা মহিলা। এক সময় এলাকার অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের সুষ্ঠ চিকিৎসার অভাবে যার পর নেই দুর্ভোগ পোহাতে হতো। এমনকি প্রয়োজনীয় পরিমান অর্থ যোগান দিতে না পারায় সু-চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু মুখে পতিত হতো শত শত গর্ভধারিনী মাদের। এসব মহিলাদের সু-চিকিৎসা, অন্তঃসত্ত্বাকালীন তাদের চেকআপ ও নিরাপদ প্রসবের জন্য এ উপজেলায় ২০০৮ সাল থেকে চালু করা হয় মাতৃ ভাউচার স্কীম (ডিএসএফ) প্রকল্প। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এ প্রকল্প এলাকা জুড়ে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়।

জানা যায়, অন্তঃসত্ত্বাকালীন সময় মহিলাদের একটি স্পর্শকাতর সময়। এ সময় অন্যান্য সময়ের তুলনায় দেহের অনেক বেশি যত্ন নিতে হয়। এ ছাড়াও পরিচর্যা এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে ব্যাপক সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়। সেই সাথে পুষ্টিকর খাবারের প্রতিও অধিক পরিমান লক্ষ্য রাখতে হয়। উপজেলার অধিকাংশ দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলা এসব ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে থাকতেন। এ জন্য তাদের দুর্ভোগও পোহাতে হতো অনেক বেশি। ২০০৭ সালের শেষের দিকে দেশের হাতে গোনা কয়েকটি উপজেলার মধ্যে আত্রাইয়েও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অর্থায়নে চালু করা হয় মাতৃ ভাউচার স্কীম প্রকল্প।

এ প্রকল্পের আওতায় দরিদ্র অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের বিনা মূল্যে চিকিৎসা সেবা, মাতৃত্বকালীন চেক-আপ, প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারের জন্য অর্থ প্রদানসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়। এ ছাড়াও এ প্রকল্প চালু হওয়ায় অনেক বেকার যুবক যুবতির হয়েছে কর্মসংস্থান। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মাতৃ ভাউচার স্কীমের আওতায় একজন গর্ভধারীনি মাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে একটি কার্ড প্রদান করা হয়। এ কার্ড প্রাপ্তির পর সন্তান ভুমিষ্টের পূর্ব পর্যন্ত ৫বার বিনা মূল্যে চেক-আপ করানো হয়। আর এ চেক-আপের জন্য ৫বার হাসপাতালে যাতায়াত বাবদ তাকে দেয়া হয় ৫০০ টাকা। মার পুষ্টিকর খাবারের জন্য দেয়া হয় ২ হাজার টাকা এবং শিমু পরিচর্যার জন্য দেয়া হয় ৫০০ টাকা। এ ছাড়াও যদি সন্তান ভুমিষ্টের সময় সিজার করতে হয় তা হলে বিনা মূল্যে তাদের সিজার করানো হয়। আর এ জন্য রয়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অভিজ্ঞ ডাক্তার। এসব সুযোগ সুবিধা চালু হওয়ায় এ উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদের লাঘব হয়েছে দুর্ভোগ।

জানা যায়, প্রতি মাসে গড়ে ১৫০ থেকে ২০০জন গর্ভধারীনি মা মাতৃ ভাউচার স্কীমের এ সুযোগ ইতোপূর্ব পর্যন্ত গ্রহন করছেন। কিন্তু বর্তমানে প্রায় এক বছর যাবৎ এ প্রকল্পের অনুকূলে কোন টাকা বরাদ্দ না আসায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এ প্রকল্পের কার্যক্রম। বিগত বেশ কিছুদিন থেকে অজ্ঞান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় এখানে সিজারও বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মাদের।

উপজেলার ব্রজপুর গ্রামের ফাহিমা বেগম (২০), থাঐপাড়া গ্রামের আছমা খাতুন (২৪) বলেন, আমরা দরিদ্র ঘরের বউ নিজস্ব অর্থ খরচ করে সিজার করার মত আর্থিক সঙ্গতি আমাদের নেই। এই হাসপাতাল থেকে কার্ড করায় আমাদের বিনা মূল্যে সিজার করানো হয়েছে। আমাদের সন্তান ভুমিষ্ট হয়ে প্রায় একবছর হয়ে গেল এখন পর্যন্ত আমরা কোন টাকা পাইনি।

ডিএসএফ’র প্রজেক্ট সহকারী আসাদুজ্জামান বলেন, এ প্রকল্পের বরাদ্দ চেয়ে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ না আসায় আমরা মাদের টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. মোর্শেদ মনিরুজ্জামান বলেন, চলতি বছরে আমরা কোন বরাদ্দ পাইনি। বরাদ্দের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধতন মহলকে জানানো হয়েছে। আশা করি ২/১ মাসের মধ্যে বরাদ্দ আসবে। বরাদ্দ এলে সকলেই টাকা পেয়ে যাবেন। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই