তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে জোরপূর্বক উন্মুক্ত জলাশয় জোবর দখলের অভিযোগ

রাণীনগরে জোরপূর্বক উন্মুক্ত জলাশয় জোবর দখলের অভিযোগ,বঞ্চিত হচ্ছে এলাকাবাসী
[ভালুকা ডট কম : ১৫ নভেম্বর]
নওগাঁর রাণীনগরের মিরাট ইউনিয়নের বৈঠাখালী গ্রামের উন্মুক্ত বৈঠাখালী দহ জোরপূর্বক কাঠা দিয়ে জোবর-দখল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে করে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে। এই জোবর-দখলের কারণে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষসহ শত শত মৎস্যজীবীরা। এই ঘটনায় প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নটি হচ্ছে খাল ও বিল অধ্যুষিত এলাকা। এই ইউনিয়নের অধিকাংশ বাসিন্দারা মৎস্যজীবী। তারা এই সব মুক্ত খাল-বিল-দহ থেকে মাছ আহরন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। এছাড়া পূর্বে এই দহের আশেপাশের অনেক মানুষই এখান থেকে মাছ ধরতো। কিন্তু বিগত ৩বছর যাবত উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের নয়া হরিশপুর গ্রামের প্রভাবশালী ব্যক্তি ইনছের ও তার সহযোগিরা এই বৈঠাখালী উন্মুক্ত দহটি জোরপূর্বক কাঠা দিয়ে ভোগ-দখল করে আসছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ও মৎস্য অফিসের সঙ্গে আতাত করে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের ছত্র-ছাঁয়ায় ইনছের ও তার কিছু অনুসারীরা এবারো ওই দহে গাছের ডাল-পালা দিয়ে কাঠা দিয়ে জোবর-দখল করেছে। এতে করে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্খকা করছেন স্থানীয়রা। গত ৩বছর যাবত ইনছের বিভিন্ন বাহানায় অন্যায় ভাবে এই উন্মুক্ত দহটি জোবর-দখল করে আসছে। অপরদিকে স্থানীয়সহ এলাকার শত শত গরীব মৎস্যজীবীরা এই উন্মুক্ত দহ (জলাশয়) থেকে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন দীর্ঘদিন যাবত। স্থানীয়রা উপজেলা মৎস্য অফিস বরাবর একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোন লাভ হয়নি বলে স্থানীয়রা জানান। স্থানীয় ভাবে বসে বিষয়টি মিটমাট করতে ইচ্ছুক নন প্রভাবশালী ইনছের।

নয়া হরিশপুরগ্রামের সাধারণ মৎস্যজীবী মকবুল হোসেন, জয়েদ আলী, হাদেশসহ আরো অনেকেই জানান, প্রায় ৩বছর যাবত প্রভাবশালী মৎস্যজীবী ইনছের এই বৈঠাখালী দহটি (জলাশয়) তার কিছু অনুসারীদের নিয়ে জোরপূর্বক কাঠা দিয়ে জোবর-দখল করে আসছে। কিন্তু এই দহটি সরকারি ভাবে উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে অনেক বছর আগে। পূর্বে আমরা ইচ্ছে মতো এই দহ থেকে মাছ ধরেছি। কিন্তু বিগত ৩বছর যাবত ইনছের এই দহটি জোরপূর্বক ভোগ-দখল করে আসছে। আর বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের মতো গরীব সাধারণ মৎস্যজীবীরা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: আজিজুল ইসলাম জানান, সরকার অনেক বছর আগে এই সব বিল-দহকে উন্মুক্ত ঘোষনা করেছেন। পূর্বে স্থানীয়রা এই দহ থেকে ইচ্ছে মতো মাছ ধরেছেন। কিন্তু বিগত কয়েক বছর ইনছের নামের প্রভাবশালী মৎস্যজীবী কতিপয় ব্যক্তিদের সহায়তায় জোরপুর্বক এই দহটি দখল করে ভোগ করে আসছে। এতে করে আশেপাশের অন্যান্য সাধারণ মানুষরা এই দহ থেকে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন দীর্ঘদিন যাবত। আমি বিয়ষটি একাধিকবার নিরসনের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। এরপর বিষয়টি মৎস্য অফিসকে লিখিত ভাবে জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এবছরও ইনছের জোরপূর্বক কাঠা দিয়ে এই দহটি দখল করেছে। এতে করে স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটতে পারে।

মিরাট মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি সাহার আলী সরকার ও অন্যান্য সদস্যরা জানান, আমাদের সমিতির দেওয়া বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে পেশীবলের জোরে ইনছের অবৈধভাবে দীর্ঘদিন যাবত এই দহ ভোগ-দখল করে আসছে। সে কতিপয় ব্যক্তিদের নিয়ে আমাদের আহার একক ভাবে ভোগ করে আসছে। আমরা এই অন্যায়ের বিচার চাই। ইনছের আমাদের কাউকেই মানতে চায় না। তার খুটির জোর কোথায় আমরা তা দেখতে চাই।

আতাইকুলা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি খোকন ও অন্যান্য সদস্যরা জানান, ইনছের কি এমন প্রভাবশালী ব্যক্তি বনে গেছে সে আমাদের দুই মৎস্যজীবী সমিতির কোন বাধা-নিষেধই মানতে চায় না। আমরা স্থানীয় নেতার কাছে বিষয়টি জানিয়েছি। তিনি আমাদের নিয়ে পুনরায় বৈঠক করা আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা অন্যায়কারী এই ব্যক্তির দৃষ্টান্তর মুলক শাস্তি চাই। ইনছের একক ভাবে আমাদের সবার আহার জোর করে ভোগ-দখল করে আসছে।

প্রভাবশালী মৎস্যজীবী ইনছের জানান, কয়েক বছর যাবত আমরা এই দহটি কাঠা দিয়ে ভোগ-দখল করে আসছি। তাই এবারো সেখানে কাঠা দিয়েছি। দহটি উন্মুক্ত কি না তা আমি জানতে চাই না। আমরা ওই দহটি ভোগ-দখল করে আসছি এবারোও আমরাই এই দহটি ভোগ করবো।

মিরাট ইউপি আ’লীগের সভাপতি শ্রী রনজিত সাহা জানান, এই বিষয়টি নিয়ে দুইটি মৎস্যজীবী সমিতির সদস্যরা আমার কাছে এসেছে। কিন্তু বিষয়টি আমার একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। অচিরেই আরো স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে বসে বিষয়টি মিটমাট করার আশ্বাস আমি তাদের দিয়েছি।

উপজেলায় মৎস্য কর্মকর্তা মো: মাকসুদুর রহমান জানান, বিষয়টি পূর্বে আমার জানা ছিলো না। কারণ আমি সবেমাত্র এই উপজেলায় যোগদান করেছি। আমি অতিদ্রুত এই বিষয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়া এই দপ্তরে জনবলের চরম সংকট থাকায় ইচ্ছে করলেও সব জায়গায় যাওয়া যায় না।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই