তারিখ : ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

হাঁস পালন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী আত্রাইয়ের শহিদুল

হাঁস পালন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী আত্রাইয়ের শহিদুল
[ভালুকা ডট কম : ০৫ ফেব্রুয়ারী]
মৎস্য ভান্ডার ও শষ্য ভান্ডার হিসাবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাই উপজেলায় বিলের খোলা জলাশয়ে হাঁস পালন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন শহিদুল ইসলাম। অভাবের সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা। তার এই সফলতা দেখে এলাকার অনেক বেকার যুবক বর্তমানে হাঁস পালন শুরু করেছে। তবে প্রাণীসম্পদ বিভাগের সহযোগিতা পেলে আরো বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব বলেও জানান তারা।

উপজেলা সদর থেকে পশ্চিমে ৪ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে একটু উত্তর দিকে তাকালেই দেখা যাবে বিশাল আকারের বির্স্তীণ রসুলপুরের মাঠ। উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের এ মাঠে এখন হাঁসের খামারে পরিণত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার অনেক বেকার যুবক তার এ হাঁসের খামার দেখে নিজেরা গড়ে তুলেছে হাঁসের খামার। এদের মধ্যে শহিদুল ইসলামের হাঁসের খামার সকলের দৃষ্টি কেড়েছে। বর্তমানে তার হাঁসের খামারে হাঁসের সংখ্যা ৫/৬ শত।

সরেজমিনে খামার পরিদর্শন শেষে শহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানান যায়, অভাবের সংসারে আমি অর্থের অভাবে ভালো কিছু করতে পারিনি। নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিছু করার। কিন্তু অর্থের অভাবে সেই স্বপ্নটা সত্যি হয়ে উঠে না। সে অনেক ভেবে চিন্তে ঠিক করেন হাঁসের খামার গড়ে তুলবেন। কিন্তু হাঁস পালন সম্পর্কে কোন ধারণা ছিল না তার। উপজেলার মাধাইমুড়ি এলাকায় খোলা জলাশয়ে বিলের মাঝে হাঁস পালন করা দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে আহসানগঞ্জ হাট থেকে মাত্র ৫০টি হাঁস কিনে শুরু করেন হাঁস পালনের যুদ্ধ। কঠোর পরিশ্রম করে ৩বছরের মধ্যে হাঁস পালন করে ব্যাপক লাভবান হন তিনি। এরপর থেকে তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এতে থেমে থাকেনি শহিদুল, নিজ বাড়িতে গড়ে তুলেছে হাঁসের হ্যাচারী। নিজের হ্যাঁচারীতে তিনি এখন তুষ পদ্ধতিতে হাঁসের বাচ্চা উৎপাদন করছেন।

তিনি আরও জানান বিলে বা নদীর তীরে হাঁসের খামার গড়ে তুলতে তেমন একটি খরচের প্রয়োজন পড়ে না। অল্প খরচে লাভও হয় দ্বিগুন। খামারে একটি হাঁসের জন্য যে পরিমান খরচ হয়, খোলা বিলে সে খরচ অর্ধেকেরও কম। কারণ বিলে হাঁস শামুকসহ বিভিন্ন খাবার সহজেই পায়। ফলে হাঁসের জন্য বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না। বিলের খোলা জায়গায় খাবার খাওয়ার জন্য হাঁস ডিমও দেয় অনেক বেশি। এছাড়া হাঁস রাখার জন্য কোন ঘর বানাতে হয় না। বাঁধের উপর পলিথিন দিয়ে সামান্য খরচে হাঁস রাখার জায়গা বানানো যায়। খোলা বিলে একটি হাঁসের জন্য খরচ হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। ৪ থেকে ৫ মাস পর হাঁস ডিম দিতে শুরু করে। ক্যাম্বেল জাতের প্রতিটি হাঁস ২৫০ থেকে ২৮০ টি পর্যন্ত ডিম দেয়। নিজের হ্যাচরীতে বাঁচ্চা উৎপাদনের কারণে শহিদুল হাঁস পালনের খরচ অন্যদের তুলনায় অনেক কম। বর্ষা মৌসুমে তার ৬ মাস কাটে বিলের বাঁধে। বাঁকি সময় থাকে সে হ্যাচারী নিয়ে। হাঁসের ডিম যখন আকারে ছোট হয়ে আসে বা ডিম দেয়া একেবারে কমে গেলে সেই হাঁস বিক্রয় করে দেয়া হয়। তা থেকে লাভ হয় ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা। শহিদুলের হাঁস পালনের সাফলতা দেখে পার্শ্ববর্তী আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের অনেক বেকার যুবক গড়ে তুলেছেন বিলের বাঁধে হাঁসের খামার। সবাই কম-বেশি লাভবান হচ্ছেন সেই সাথে দুর হচ্ছে এলাকার বেকারত্ব। শহিদুলের পাশাপাশি অন্যদের খামারে হাসের পরিমান ৩ থেকে ৪ শত।

আহসানগঞ্জ ইউনিয়নের ঘোষপাড়া গ্রামের হাঁস পালনকারি মো: ফারুক আহম্মেদ জানান, লেখাপড়া শিখে চাকরির আশায় বসে না থেকে অল্প খরচে হাঁসের খামার গড়ে তুলে সহজেই স্বণির্ভর হওয়া যায়। তার মতে লেখাপড়ার পাশাপাশি হাঁস পালন করাটা কোন কষ্টের নয়। তাই এখন তাদের সবার মুখে মুখে একটি-ই শ্লোগান,করবো মোরা হাঁসের চাষ, থাকবো সুখে বারো মাস।

একই গ্রামের শাহাদ আলী ও মজিদ জানান, আমরা বর্তমানে হাঁস পালন করে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক সুখে আছি এবং হাঁস পালন অনেক লাভবান হওয়া সম্ভব। এদিকে উপজেলার সচেতন মহল মনে করছেন, সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বেকার যুবক-যুবতীরা হাঁসের খামার করে স্ববলম্বী হয়ে নিজেদের ভাগ্য বদল করা সম্ভব হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

লাইফস্টাইল বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই