তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

পত্নীতলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম

পত্নীতলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নানা অনিয়ম,রোগীরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত
[ভালুকা ডট কম : ১২ জুন]
নওগাঁ জেলার পরেই অতি গুরুত্ব পূর্ন পত্নীতলা উপজেলা। এ উপজেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষের বসবাস। উপজেলার মানুষ গুলোর সেবার জন্য আছে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এই উপজেলাটি জেলার মধ্যবর্তী হওয়ায় আশেপাশের অন্যন্য উপজেলার রোগীরাও পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে থাকে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার সংকট সহ নানা অনিয়মে রোগীরা স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

৫০ শয্যা বিশিষ্ট্য পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রায় সব উপকরনসহ রোগীদের জন্য বহু মূল্যবান ঔষধ পত্র ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা থাকলেও এর সুযোগ সুবিধা থেকে সাধারন ও হতদরিদ্র রোগীরা বঞ্চিত হচ্ছে। রোগীদের নিন্ম মানের খাবার, ঔষধ হরিলুট ও নানা অনিয়ম সহ রোগীদের সাথে কর্তব্যরত স্টাপ ও নার্সদের দূর্ব্যবহারে রোগীরা নাজেহাল। এছাড়াও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কিছু অসাধু স্টাফদের সহযোগীতায় রোগীদের বাহিরের ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসা অপারেশনসহ এম.আর, ডি.এন.সি করার জন্যও কৌশলে পাঠানো হয়।

পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চাহিদা অনুযায়ী প্রসূতী সিজার সহ অন্যান্য ছোট-খাট অপারেশনের ব্যবস্থা থাকলেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নার্সের অভাবে রোগীদের পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে বেড়ে গেছে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি সহ ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালালদের দৌরাত্ব।  রোগীদের অভিযোগ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্যাথলজি পরীক্ষা করা রোগীদেরও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অনেকের সহযোগীতায় এলাকার বেশ কিছু ক্লিনিক ডায়াগোনস্টিক সেন্টারে সুকৌশলে নিয়ে যাওয়া হয়।

সরকার কোটি কোটি টাকা খরচ করে গ্রামের হতদরিদ্র অসহায় রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে আধুনিক যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করলেও দীর্ঘদিন যাবৎ কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু তদারকি ও অব্যবস্থাপনা এবং স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ডাক্তারদের কারনে সাধারন রোগীরা সঠিক স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানাগেছে, ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালে ৩২জন মেডিকেল অফিসার থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মমিনুল ইসলাম এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ খালিদ সাইফুল্লাহ আরো সহ ৩জন।

এদিকে ৫০ শয্যার এ হাসপাতালে আগত রোগীদের অভিযোগ, রোগীর চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত ঔষধ সরবরাহ না থাকায় তাদের বেশীর ভাগ ঔষধ পত্রই বাইরে থেকেই কিনতে হয়। বহির্বিভাগে রোগীর চাহিদা অনুযায়ী ডাক্তারী সেবা না পাওয়ার অভিযোগ করে আসছেন। এবাদেও জরুরী বিভাগে আসা এ্যাক্সিডেন্ট সহ অন্যান্য আঘাত প্রাপ্ত রোগীদের ইঞ্জেকশন, ড্রেসিং, ব্যান্ডিজ সহ জরুরী চিকিৎস্যা সেবা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ওয়ার্ড বয়, সুইপাররাই করে থাকে বলেও রোগীদের অভিযোগ রয়েছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক রোগী এলাকার প্রাইভেট ক্লিনিক গুলোতে চিকিৎস্যার জন্য গিয়ে মানষিক ও অর্থনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে থাকে।

১২জুন মঙ্গলবার রোগীদের অভিযোগে জানাগেছে, হাসপাতাল চলাকালীন সময় জরুরী বিভাগে একজন ডাক্তার থাকলেও পুরো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক ডাক্তার সহ অন্যান্য কোন ডাক্তার ছিলনা। একারনে চিকিৎস্যা নিতে আসা গরীব অসহায় রোগীরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। এবাদেও জরুরী বিভাগ সহ বৈকালিক চিকিৎস্যা সেবাও মূখ থুবড়ে পড়েছে। বেশীর ভাগ সময়ই সহকারী ডাক্তারদের দায় সারা চিকিৎস্যা সহ নানা রকম পরীক্ষা, নিরীক্ষার অজুহাতে রোগীদেরকে বিভিন্ন ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে পাঠানোর অভিযোগ নিত্য নৈমিত্তিক। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা সাধারন রোগীরা বাধ্য হয়ে এসব সহকারী ডাক্তারদের খপ্পড়ে পড়ে ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে যেতে বাধ্য হলেও প্রকৃত সু-চিকিৎস্যা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছে। অপরদিকে হাসপাতাল চলাকালীন সময়ে জরুরী বিভাগ সহ এসব ডাক্তারদের ভিজিট করতে আসা ঔষধ কোম্পনীর প্রতিনিধিদের উপচে পড়া ভিড়েও রোগীরা নাজেহাল হয়ে পড়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক রোগীরাই অভিযোগ করে বলেন, আবাসিক ডাক্তার খালিদ সাইফুল্লাহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসা অবস্থায় ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধিদের বেশীরভাগ সময় দেয়ায় সাধারন রোগীরা তার সাথে কথা বলতে পারেনা। এবাদেও তিনি প্রতিনিয়তই ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাস্নো সহ রোগী দেখে থাকেন।

উপরোক্ত বিষয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চলাকালীন সময়ে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ডাক্তার (আরএমও) ডাঃ খালিদ সাইফুল্লাহকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না পেয়ে মোবাইল ফোনে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সেসময় স্থানীয় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে থাকা অবস্থায় বলেন, এসময় তার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন ডিউটি নেই। তার ডিউটি বিকেলে।

এব্যাপারে রোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পত্নীতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ মমিনুল ইসলাম (ভারপ্রাপ্ত) এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযেগ করা হলে তিনি আবাসিক ডাক্তারের দায়িত্ব সমন্ধে বলেন, এসময় ঐ ডাক্তারের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকাটাই উচিত ছিল। সে অফিস চলাকালীন সময়ে কোন ভাবেই বাহিরের ক্লিনিকে রোগী দেখতে পারেনা। তবে উপরোক্ত অনিয়ম সহ এ বিষয়টি সুষ্ঠু ভাবে দেখার আশ্বাস প্রদান করেন। এবিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা পারভীনের সাথে যোগযোগ করা হলে তিনি বিষয় গুলো দেখবেন বলে আশ্বস্থ করেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই