তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে সুবিধা পাচ্ছে মানুষ

নওগাঁয় ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রে সুবিধা পাচ্ছে প্রত্যন্ত ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলের সাধারণ মানুষ
[ভালুকা ডট কম : ০১ আগস্ট]
নওগাঁর প্রত্যন্ত ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল সাপাহার। এই উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নের ডিজিটাল সেন্টার বা ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে তথ্য সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ তথ্য সেবা নেওয়ার জন্য আর উপজেলা পর্যায়ে যেতে হয় না। প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করে এখন এ সেবা পাওয়া যায়। বাড়তি টাকা খরচ করতে হয় না গ্রামের সাধারণ মানুষদেরকে। ঘরে বসেই সব ধরনের সেবা নিতে পারছেন তারা। আর এসব সেবা পেয়ে গ্রামের সাধারণ মানুষ অনেক খুশি।

জানা গেছে, আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে জনগণের কাছে স্বল্প সময়ে কম খরচে দ্রুত তথ্য সেবা পৌঁছে দেওয়ার এবং অনলাইন সুবিধা প্রদান করে সারা দুনিয়ার অবারিত জ্ঞান ভান্ডারের সাথে সমাজের সর্বস্থরের জনগণের সংযোগ ঘটানোই ডিজিটার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য। তৃণমূল পর্যায়ের জনগণকে জাতীয় উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সংযুক্ত করার অভিপ্রায়ে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অনস্বীকার্য। এ লক্ষ্যেই দেশের সকল ইউনিয়ন পরিষদে ‘ইউনিয়ন তথ্য সেবাকেন্দ্র’ (ইউআইএসসি) সফলভাবে  প্রতিষ্ঠিত করে ধনী-দরিদ্র, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সমাজের সর্বস্তরের জনগণকে তথ্য সেবা প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষের কাছে ইউআইএসসি’র গ্রহণযোগ্যতা ও এর কার্যকারিতার কথা ভেবে সরকার জনগণ ও উদ্যোক্তাদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি ব্যবসায়িক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ইউআইএসসি’র ‘সরকার-উদ্যোক্তা-জনগণ’ প্রক্রিয়া অনুযায়ী ইউনিয়ন পর্যায়ের কমপক্ষে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও কম্পিউটার কাজে অভিজ্ঞ নারী ও পুরুষকে তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে নির্বাচন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় উদ্যোক্তা নির্বাচন করে থাকেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। সকল ইউআইএসসি’র বাস্তবায়নের ফলে দেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ভেতর থেকে ৯ হাজারের বেশি মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে।

আশার কথা এই বিশাল জনশক্তির অর্ধেকই নারী। ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে একেবারে গ্রাম পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির আধুনিক সেবা পৌঁছে  দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে মানুষের জীবনযাত্রা হয়েছে সহজ, আনন্দময় ও গতিশীল।সাপাহার উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮-২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাতাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় পরিষদের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে তথ্যসেবা নিচ্ছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।

তথ্যসেবা কেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন, কম্পিউটার কম্পোজ ও প্রিন্ট, ছবি তোলা ও ছবি প্রিন্ট, সার্টিফিকেট, জন্ম নিবন্ধন, লেমিনেটিং করা, ফটোকপি করা, পাসপোর্ট ফরম পূরণ করা, ই-মেইল, ইন্টারনেট, ভিডিও কলিং, চাকরির তথ্য প্রাপ্তি ও আবেদন করা, স্কুল-কলেজে ভর্তি, জমির ক্ষতিয়ান তুলতে পারা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ এজেন্ট ব্যাংকিং ইত্যাদি সেবাগুলো দিচ্ছে পাতাড়ী ইউনিয়ন তথ্যসেবা কেন্দ্র। আর এসব সেবাগুলো পেয়ে ওই ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষ খুশি হচ্ছেন।

পাতাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন শত শত মানুষ তথ্যসেবা নিচ্ছেন। তথ্যসেবা সুবিধা পাওয়ার জন্য টাকা এবং সময় অপচয় করে উপজেলা শহরে আসতে হতো। বর্তমান সরকারের যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসাবে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার তথ্যসেবা কেন্দ্র গড়ে তোলার কারণে ঘরে বসেই সেই সেবা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নে চালু রয়েছে তথ্যসেবা বা ডিজিটাল সেন্টার। ৬ টি ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার বা তথ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর অবাধ তথ্য প্রবাহের কারণে সাধারণ মানুষ আর ভোগান্তির মধ্যে পড়ে না। যে কোনো সময় তথ্যকেন্দ্র থেকে সেবাগুলো পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

পাতাড়ী ইউনিয়নের করমুডাঙ্গা গ্রামের সারোয়ার হোসেন বলেন, মেয়ের জন্য জন্ম সনদ নিতে এসেছি। কোনো ঝামেলা ছাড়াই জন্ম সনদ পেলাম। একই গ্রামের নাদিয়া সুলতানা এবার এইচএসসি তে সফলতার সাথে কৃতকার্য হয়। সুলতানা বলেন, রেজাল্ট ও কলেজের ভর্তির আবেদন তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে পেয়েছি। এখান থেকেই বিভিন্ন কলেজে আবেদন করে সাপাহার চৌধুরী চাঁন মোহাম্মদ ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়েছি।

পাতাড়ী ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা আব্দুর রাকিব বলেন, গত এক বছরে পাতাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ তথ্যসেবা কেন্দ্র থেকে প্রায় অর্ধ-লক্ষাধিক মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করা হয়েছে।

পাতাড়ী ইউপি’র সচিব মেহেদী হাসান জানান, ইউনিয়ন ডিজিটাল ল্যাবে বর্তমানে ১৫ জন শিক্ষার্থীসহ এ পর্যন্ত ৫০ জন কম্পিউটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। পাতাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুকুল মিঞা বলেন, আমার ইউনিয়ন উপজেলা থেকে প্রায় ১৮-২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আগে ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা শহরে গিয়ে তথ্যসেবা নিতেন। এখন আর শহরে যেতে হয় না। ডিজিটাল সেন্টার বা তথ্যসেবা কেন্দ্রের মাধ্যমে সব রকমের তথ্য পাওয়ার কারণে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ খুব খুশি।

সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহা: সবুর আলী বলেন, সাধারণ মানুষের বিভিন্ন সেবা প্রদানের পাশাপাশি ডিজিটাল সেন্টারে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে বেকার যুবসমাজ দক্ষতা অর্জন করছে এবং বিভিন্ন আয় বৃদ্ধির কাজে অংশগ্রহণ করতে পারছেন। সেবা নিতে আসা জনগন যেন হয়রানীর শিকার না হয় সে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে উপজেলা প্রশাসন বলেও তিনি জানান। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই