তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে কক্ষ সংকটের কারণে বারান্দায় পাঠদান

রাণীনগরে কক্ষ সংকটের কারণে বারান্দায় পাঠদান,নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বেঞ্চ
[ভালুকা ডট কম : ০৫ আগস্ট]
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার শেষ সীমানার প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত খাস পারইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে শুধু শ্রেণি কক্ষের সংকটই নয়, কমলমতি শিক্ষার্থীদের বসার জন্য নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ বেঞ্চ, কক্ষে নেই বৈদ্যুতিক ফ্যান এরকম নানা সমস্যায় জর্জড়িত এই বিদ্যালয়টি। তবুও থেমে নেই কার্যক্রম। প্রত্যন্ত এই এলাকার অবহেলিত শিশুদের মাঝে দীর্ঘদিন যাবত বিদ্যালয়টি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। কক্ষের সংকটের কারণে বারান্দায় পাঠদান করানো হয় বিদ্যালয়ে আসা কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পারইল ইউনিয়নের পারইল গ্রামে  অবস্থিত খাস পারইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। এই প্রত্যন্ত এলাকার শিশুদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষে ১৯৮০ সালে স্থানীয় কিছু শিক্ষিত মানুষরা নিজেদের অর্থে ৩৩শতাংশ জমি কিনে স্থাপন করেন এই বিদ্যালয়টি। গত ২০১২ সালে এই বিদ্যালয়টি রেজিষ্ট্রার্ড থেকে সরকারি করা হলেও বিদ্যালয়টিতে এখনো আধুনিকতার কোন ছোঁয়া লাগেনি। নেই আধুনিক মান সম্মত ভবন। চরম শ্রেনি সংকটের কারণে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিশুদের বিদ্যালয়ের বারান্দায় মাদুর বিছিয়ে পাঠদান করাতে বাধ্য হচ্ছেন। দীর্ঘদিন আগে নির্মাণ করা একতলা একটি ভবনে রয়েছে শুধুমাত্র ৩টি পাঠদান কক্ষ অথচ প্রতিদিন এই বিদ্যালয়ে প্রায় ১৫৬জন শিক্ষার্থীরা পাঠগ্রহণ করে। আর ভবনের সিঁড়ি কক্ষ অফিস কক্ষ হিসাবে ব্যবহার করছেন শিক্ষকরা। তাই বাধ্য হয়েই দুই শিফটে পাঠদান করান শিক্ষকরা। বিদ্যালয়ের জন্মলগ্ন থেকে ছিলো না বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। সম্প্রতি বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ পাওয়ার পর অভিভাবক, শিক্ষক ও এলাকাবাসীরা নিজেদের অর্থ দিয়ে কয়েকটি ফ্যান কিনলেও এখনো রয়েছে ফ্যানের সংকট। প্রতিটি কক্ষে ৪টি করে ফ্যান থাকার কথা থাকলেও রয়েছে ১টি কিংবা ২টি। তাই প্রচন্ড গরমে গাদাগাদি করে শিশুদের পাঠগ্রহণ করতে হয়। অপরদিকে প্রতিবছর বিদ্যালয়ের পিএসসি ফলাফল শত ভাগ। বিগত সময়ে এই বিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেয়েছে অনেক গরীব মেধাবী শিক্ষার্থীরা।

অভিভাবক রিনা খানম, সমিতা রানী পালসহ আরো অনেকেই বলেন, আমাদের এই বিদ্যালয়টি উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে একেবারেই বঞ্চিত। আমাদের সন্তানরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষাগ্রহণ করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান সমস্যা হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রেণি কক্ষ নেই। অনেক জায়গা রয়েছে। তাই সরকার যদি একটি আধুনিক মান সম্মত নতুন ভবন নির্মাণ করে দিতো তাহলে বারান্দায় মাদুরে বসে আমাদের সন্তানদের আর শিক্ষা গ্রহণ করতে হতো না।

বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি মো: আনছার আলী বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের নেই নিজস্ব কোন তহবিল। তাই আমরা এলাকাবাসীরা মিলে যতটুকু করতে পারি। তবে বড় সমস্যা হচ্ছে শ্রেণি কক্ষ সংকট। একটি নতুন ভবন হলে কক্ষ সংকট থেকে আমরা মুক্তি পেতাম। পর্যাপ্ত পরিমান আধুনিক মান সম্মত বেঞ্চ থাকলে শিক্ষার্থীরা বেঞ্চে বসে আনন্দের সঙ্গে পাঠগ্রহণ করতে পারতো। আমরা একাধিকবার এই সমস্যাগুলো উপর মহলকে জানিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা: শেফালী বেগম বলেন আমরা অনেক কষ্ট করে বিদ্যালয়ে পাঠদান করায়। এলাকার অনেক মানুষ বিদ্যালয়ের এহেন অবস্থা দেখে তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করায় না। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষই খেটে-খাওয়া গোত্রের। বিদ্যালয়ে শ্রেনি কক্ষ সংকটসহ রয়েছে বেঞ্চের সংকট, জরুরী কাগজপত্র রাখার জন্য নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ আসবাবপত্র, নেই অফিস কক্ষ। এছাড়াও দীর্ঘদিন পর বিদ্যুৎ এলেও শ্রণি কক্ষে নেই পর্যাপ্ত পরিমাণ ফ্যান। তবুও শিক্ষার্থীরা শত সংকট কাঁধে নিয়ে প্রতি বছর ভালো ফলাফল করছে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আতোয়ার রহমান বলেন, আমি এই বিদ্যালয়ের সকল সমস্যা চিহ্নিত করে আমার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশা রাখি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এই সকল সমস্যা সমাধানে পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

শিক্ষাঙ্গন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই