তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

মান্দায় ভেজাল সার ও কীটনাশক তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ

মান্দায় ভেজাল সার ও কীটনাশক তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি জব্দ
[ভালুকা ডট কম : ১৫ সেপ্টেম্বর]
নওগাঁর মান্দা উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের বৈদ্যপুর বাজারে ভেজাল সার ও কীটনাশক কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে। মান্দা থানা পুলিশ শনিবার ওই বাজারে অভিযান চালিয়ে ওই কারখানার সন্ধান পান। ওই কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদিসহ আরিফ হোসেন (৪৮) নামে একজন মালিককে করে পুলিশ।

গ্রেপ্তার আরিফ হোসেন যশোরের ফুলতলা উপজেলার শিরোমনি উত্তরপাড়া এলাকার মৃত শওকত হোসেনের ছেলে। গত এক বছর ধরে আরও তিন ব্যক্তির সঙ্গে আরিফ যৌথভাবে ওই বাজারে কারখানাটি পরিচালনা করে আসছিলেন। শনিবার পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন ও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান।

মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুব আলম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক রবিউল ইসলাম শুক্রবার সন্ধ্যায় বৈদ্যপুর বাজারের অদূরে কারখানাটি আবিষ্কার করেন। এরপর তিনি আরও অনুসন্ধ্যান চালিয়ে চালিয়ে ভেজাল সার ও কীটনাশক তৈরির কারখানার সত্যতা পান। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে শনিবার কারখানাটিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে গিয়ে সার ও কীটনাশক তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। এসময় কারখানারটির মূলহোতা আরিফ হোসেনকে পাশের একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে আরিফ হোসেনসহ কারখানার অন্য তিন মালিক মুকুল হোসেন (৪০), মধু চন্দ্র (৩২) ও এমদাদুল হক (৩৬) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আরিফ গ্রেপ্তার হলেও অন্যরা পলাতক রয়েছেন তাদেরকেও গ্রেপ্তার করার চেষ্টা চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের কথা বলে জানা যায়, এক বছর আগে যশোর থেকে এসে আরিফ হোসেন বৈদ্যপুর বাজার এলাকায় আনিছুর রহমান নামে এক ব্যক্তির তিনটি ভবন ভাড়া নিয়ে কারখানাটির কার্যক্রম শুরু করেন। পরবর্তীতে ভালাইন গ্রামের মুকুল হোসেন, বৈদ্যপুর গ্রামের মধু চন্দ্র ও এমদাদুল হকও তাঁর সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে যৌথভাবে ব্যবসা শুরু করেন। কারখানাটি বাজার থেকে একটু দূরে নির্জন এলাকায় হওয়ায় সেখানে কি তৈরি হচ্ছে এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন অবহিত ছিলেন না। তবে কারখানাটির সামনে প্রতিনিয়ত ট্রাক ভর্তি করে বালু ও মাটি নিয়ে আসা হত। এগুলো দিয়ে কারখানার ভেতরে কি কাজ করা হত সেটি তারা জানতেন না। পুলিশের অভিযানের পর সেখানে ভেজাল সার ও কীটনাশক তৈরির কথা জানতে পেরে এলাকার লোকজন বিস্মিত হয়েছেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ইসলাম, গোলাম মোস্তফাসহ আরও অনেকে জানান, কারখানার মালিকরা একটি মার্কেটের তিনটি ভবনের ছয়টি কক্ষ মাসিক ২ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম চালু করেন। মাসিক বেতনে ৩৫ জন কর্মচারি সেখানে নিয়মিত কাজে নিযুক্ত ছিল।

মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম প্রমানিক বলেন, কারখানার তিনটি ভবনের একটিতে জিংক সার তৈরির উপকরণ, মিক্সার মেশিন, খোলাসহ অসংখ্য মাটি ভর্তি বস্তা ও মোটা দানার বালুর স্তুপ পাওয়া গেছে। এ ভবনের অন্য একটি কক্ষে বালুতে রঙ মিশিয়ে তৈরি করা হতো দানাদার কীটনাশক। অপর ভবনে মিক্সার মেশিন, বালু ভর্তি বস্তা, বাসুডিন, ফুরাডান, ব্রিফার ৫জি, থিয়োভিট পাউডারসহ বিভিন্ন নামী দামি কোম্পানির মোড়কে নকল কীটনাশক পাওয়া গেছে। অন্য ভবনটিতে মোড়ক সেলাই করার মেশিনসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন,কারখানাটির কার্যক্রম দেখে আমি বিস্মিত ও হতবাক হয়েছি। এখানে উৎপাদিত সার ও কীটনাশক নকল বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। যা কৃষকের সঙ্গে চরম প্রতারণা। জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি হওয়া দরকার।

পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন জানান, কারখানাটির সন্ধান পাওয়া পুলিশের একটি বড় ধরণের সাফল্য। কারখানার মালামাল জব্দ ও তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অপরাধ জগত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই