তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

মান্দায় গ্যাস বড়ি খেয়ে মাদরাসা ছাত্রের আত্মহত্যা

মান্দায় গ্যাস বড়ি খেয়ে মাদরাসা ছাত্রের আত্মহত্যা
[ভালুকা ডট কম : ২২ সেপ্টেম্বর]
নওগাঁর মান্দায় প্রেমে শিক্ষকদের বাঁধা, মৃদ্যু শাসন এবং মারপিট করে মাদরাসা থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনায় অভিমানে গ্যাস বড়িপানে আত্মহত্যা করেছে জয়নাল আবেদীন সরদার (১৫) নামের এক শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।

নিহত জয়নাল আবেদীন উপজেলার বৈলশিং পানাতাপাড়া গ্রামের জামিদুল ইসলাম সরদারের ছেলে উপজেলার দোসতি দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র। এদিকে স্থানীয় কিছু স্বার্থনেষি মহল মাদরাসার সুনাম ক্ষুন্ন ও শিক্ষকদের ফাঁসাতে ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিতের অপচেষ্ঠা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি করেছে।

ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থীর বাবা জামিদুল ইসলাম সরদার বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে দোসতি দাখিল মাদরাসার সুপার বিন ইয়ামিন, শিক্ষক হারুন অর রশিদ এবং আবদুর রাজ্জাককে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। সুপার বিন ইয়ামিনকে রাতেই আটক করেছে থানা পুলিশ। মামলার পর মাদরাসা সুপার বিন ইয়ামিনকে আটক দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, তানিয়া নামে মাদরাসার ৭ম শ্রেণীর একজন ছাত্রী চিঠি দেওয়া-নেওয়া করত বলে শোনা যায়। জয়নাল কমন রুমের দিকে একটি চিঠি নিয়ে ঘোরাঘুরি শুরু করলে ঘটনাটি জানাজানি হলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। মাদরাসায় বিরুপ প্রভাব পড়তে পারে বলে শিক্ষকরা তাকে মারধোর করেন। পরে মাদরাসা সুপার বিন ইয়ামিন মাদরাসা থেকে  জয়নালকে বের করে দেন। এতে অভিমানে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফিরে দুপুরে গ্রামের মন্টুর কলা বাগানে গিয়ে গ্যাসবড়ি পান করে। টের পেয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দেন জয়নালের চাচা হামিদুল ইসলাম সরদার।

মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ফয়সাল ইকবাল জানায়, ঘটনার দিন মঙ্গলবার মাদরাসার ওয়ালে (দেওয়ালে) তার বন্ধু জয়নাল এবং একই শ্রেণীর ছাত্রী জান্নাতুন নেছার নাম ইংরেজিতে জে+জে লেখা ছিল। এনিয়ে শ্রেণীতে ব্যাপক কথা ছড়িয়ে পড়লে জান্নাতুন বলে আমি জয়নালকে নয়, আবদুর রাজ্জাক নামে অন্য একজনকে ভালবাসি। বেলা সাড়ে ১১টার সময় জয়নালকে শ্রেণীর মধ্যেই মারপিট শুরু করেন শিক্ষক হারুন অর রশিদ এবং আবদুর রাজ্জাক। আমাকেও সামান্য মারপিট করেছে। তবে ভয়ে আমি বাড়িতে কিছু বলিনি। জয়নাল মারা গেলে বৃহস্পতিবার রাতে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আমাকে ভর্তি করে দেন পরিবার।

জয়নাল আবেদিনের চাচা হামিদুল ইসলাম জানান, ভর্তির সময় ডাক্তার জানিয়েছে জয়নাল গ্যাসবড়ি (বিষপান) করেছে। অবস্থার অবনতি হলে মঙ্গলবার রাতেই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যায় জয়নাল।

জয়নাল আবেদিনের পিতা জামিদুল ইসলাম জানান, গত মঙ্গলবার তিনি সতিহাটে গরু কিনতে যান। পরে জানতে পারেন মাদরাসা চলাকালে খারাপ আচরণের কারণে নাকি মাদরাসার শিক্ষক হারুন অর রশিদ এবং আবদুর রাজ্জাক তার ছেলে জয়নাল আবেদীন ও তার সহপাঠি ফয়সাল ইকবালকে আম গাছের ডাল দিয়ে মারপিট করে। এসময় জয়নাল আবেদীন অসুস্থ হয়ে পড়লে তড়িঘড়ি একটি ভ্যানে করে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়। বাড়িতে জয়নাল আবেদীনের অবস্থার অবনতি হলে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তাকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায় তার ভাই হামিদুল ইসলাম।

থানার পরিদর্শক (ওসি) মাহবুব আলম জানান, শিক্ষার্থী জয়নাল আবেদীন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেলে বাবা-মাসহ আত্মীয়-স্বজনরা ময়না তদন্ত না করে গোপনে লাশ বৃহস্পতিবার রাতে বাড়ি নিয়ে আসে। পরে গোপনে দাফনের চেষ্টা চালায়। খবর পেয়ে জামিদুল সরদারের বাড়ি থেকে রাতেই লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে ময়না তদন্তের জন্য নিহত জয়নাল আবেদীনের লাশ নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। মৃত্যুর পর থেকে দুই শিক্ষক হারুন অর রশিদ এবং আবদুর রাজ্জাক পলাতক রয়েছেন। আটক মাদরাসা সুপার বিন ইয়ামিনকে শুক্রবার আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর দুই শিক্ষককে আটক করতে অভিযান চলছে। তবে এটি আত্মহত্যা নাকি মারপিটের কারণে মৃত্যু ঘটেছে তা ময়না তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জীবন যাত্রা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই