বিস্তারিত বিষয়
দেশে শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগ বৃদ্ধি,করণীয় সম্পর্কে অভিমত
দেশে শিশুদের মধ্যে ডায়াবেটিস রোগ বৃদ্ধি,করণীয় সম্পর্কে অভিমত
[ভালুকা ডট কম : ১৫ নভেম্বর]
শিশুদের জন্য খেলার মাঠ নেই। শ্রেণিকক্ষ আর গৃহকোণে বন্দী তাদের শৈশব। খাদ্য হিসেবে তাদের বেশি বেশি দেয়া হচ্ছে দোকানের প্যাকেট খাবার, ফাস্টফুড বা কৃত্রিম পানীয়। আর এর ফলে শিশুদের মধ্যেও ডায়াবেটিস রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে গতকাল রাজধানীতে আয়োজিত এক অলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এ অভিমত প্রকাশ করেছেন।
তাদের অভিমত, বড়দের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডায়াবেটিস আক্রান্ত শিশু রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে চলছে। এখনই তা নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে সর্বত্র সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। কয়েকজন বিশেষজ্ঞ শিশুদের বিনামূল্যে ইনসুলিন সরবরাহ এবং ইনসুলিন আমদানির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
আলোচনা অনুষ্ঠানে ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান বলেছেন, ডায়াবেটিস নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবার আগে জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। শারীরিক পরিশ্রম বাড়াতে হবে। নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ-স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকা যায়। এ জন্য সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফ উদ্দীন বলেছেন, ডায়াবেটিস চিকিৎসা ব্যয়বহুল তাই এ ক্ষেত্রে সরকারি বা বেসরকারি পর্যায়ে সহযোগিতা প্রদান জরুরি।
অনুষ্ঠানে শিশুদের ডায়াবেটিস পরিস্থিতি নিয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাডাসের চেঞ্জিং ডায়াবেটিস ইন চিলড্রেন প্রোগ্রামের কো-অর্ডিনেটর ডা. বেদৌরা জাবীন। তিনি বলেন, বর্তমানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছে। শিশুদের খেলাধুলা, খাওয়াদাওয়াসহ স্বাভাবিক জীবনযাপনে অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। তিনি আরও বলেন, টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত শিশু বা বড়দের নিয়ে পরিবারকে অনেক বেশি হয়রানিতে পড়তে হয়। কারণ টাইপ-১ আক্রান্ত শিশুদের ইনসুলিন নিতে হয়। শিশুরা স্কুলে গিয়ে ইনসুলিন নিতে পারে না। শিক্ষক বা সহপাঠীরা বিষয়টিকে সহজভাবে নিতে পারে না। পরিবার তাদের নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। আবার অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য অনেকেরই চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হয়।
ওদিকে আন্তর্জাতিক গবেষণায় বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে ডায়াবেটিসে ৩১ হাজার ৪৬০ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এই অসংক্রামক রোগে ২০৪০ সালে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ৬৯ হাজার ৭৫০ হবে। অর্থাৎ মৃত্যু দ্বিগুণের বেশি হবে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক জনস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সাময়িকী ল্যানসেট গত মাসে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে সপ্তম স্থানে আছে ডায়াবেটিস অন্য রোগগুলো হচ্ছে হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, ক্যানসার, দীর্ঘস্থায়ী বক্ষব্যাধি, নবজাতকের মৃত্যু ও নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ। তবে বর্তমান হারে চললে ২০৪০ সালে ডায়াবেটিস চলে আসবে পঞ্চম স্থানে। =চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায়। ডায়াবেটিস দৃষ্টিপ্রতিবন্ধিতা, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক, কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এই রোগের প্রকোপ বাড়ছে।
অসংক্রামক রোগ নিয়ে সরকারের ২০০৬ সালের জরিপে (স্টেপস ২০০৬) বলা হয়েছিল, প্রাপ্তবয়স্কদের ৫ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। সরকার অতি সম্প্রতি এ বিষয়ে আরও একটি জরিপ (স্টেপস ২০১৮) শেষ করেছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ এই রোগে আক্রান্ত। অর্থাৎ ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ৭৬ লাখের বেশি মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। এ ছাড়া আরও কয়েক লাখ শিশু ডায়াবেটিসে (টাইপ-১) আক্রান্ত।
কোনো পরিবারে যদি সুষম খাদ্যাভ্যাস, সুশৃঙ্খল জীবনপ্রণালির চর্চা করা হয়- তবে সেই পরিবারের সদস্যরা ডায়াবেটিস নামের এই রোগ থেকে সুরক্ষা পেতে পারেন। সুষম খাদ্য বলতে আমরা বুঝি দৈনন্দিন খাবার তালিকায় ৫০-৬০ শতাংশ শর্করা, ২০ শতাংশ আমিষ ও ২০ শতাংশ চর্বি থাকা। অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত খাবার যেমন: ফাস্টফুড, তেল–চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, কোমল পানীয়, কৃত্রিম জুস, বেশি চিনি বা ক্রিমযুক্ত বেকারি এড়িয়ে চলা। বেশি করে শাকসবজি, ফলমূল, আঁশযুক্ত খাবার ও গোটা শস্যের তৈরি শ্বেতসার গ্রহণ করা।
চিকিৎসকরা বলছেন, কায়িক শ্রমের বেলায় পারিবারিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন সুস্থ জীবনযাপনে গুরুত্ব রাখে। পরিবারে বাবা ছেলেমেয়েদের নিয়ে ব্যাডমিন্টন খেলা, তাদের সাইকেল কিনে দেয়া, বাজার করতে নিয়ে যাওয়া বা বাগানে কাজ করার মাধ্যমেও শারীরিক পরিশ্রম অভ্যাস করা যেতে পারে।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।
কমেন্ট
অন্যান্য বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- বার বছর ভুয়া শিক্ষক নিবন্ধন সনদে চাকরি [ প্রকাশকাল : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২.৩০ অপরাহ্ন]
- সাংবাদিককে সহযোগিতা করায় বদলী [ প্রকাশকাল : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- ঈদ যাত্রায় আইজিপির আহবান [ প্রকাশকাল : ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ১২.০০ অপরাহ্ন]
- সাতচল্লিশ বছরের খাজনা চল্লিশ টাকা [ প্রকাশকাল : ৩১ মার্চ ২০২৪ ০৬.৫০ অপরাহ্ন]
- সংস্কারের কয়েক মাস না যেতেই খানা খন্দ [ প্রকাশকাল : ৩০ মার্চ ২০২৪ ০৭.৩০ পুর্বাহ্ন]
- নওগাঁয় কলেজ ফান্ডের টাকা লোপাট করলেন ইউএনও [ প্রকাশকাল : ২২ মার্চ ২০২৪ ০১.১৩ অপরাহ্ন]
- গুরু শিষ্যের প্রেমময় জীবন [ প্রকাশকাল : ১৬ মার্চ ২০২৪ ০১.০২ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন [ প্রকাশকাল : ১০ মার্চ ২০২৪ ০৫.০০ অপরাহ্ন]
- ঝুঁকিপূর্ণ ঘর নিয়ে বিপাকে প্রকল্পের বাসিন্দারা [ প্রকাশকাল : ০৮ মার্চ ২০২৪ ০১.৪০ অপরাহ্ন]
- অনুমোদন ছাড়াই চলছে প্রাণিসম্পদ ব্যাংক [ প্রকাশকাল : ০৪ মার্চ ২০২৪ ০৪.০০ অপরাহ্ন]
- আশ্রয়ণের ঘর নির্মাণে নয়-ছয় [ প্রকাশকাল : ০৩ মার্চ ২০২৪ ০১.১০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হলো দুদকের গণশুনানি [ প্রকাশকাল : ১৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০১.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁর সরকারী হাসপাতাল! [ প্রকাশকাল : ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৯.০০ পুর্বাহ্ন]
- নওগাঁর বলিহার সংরক্ষিত পুরাকীর্তি [ প্রকাশকাল : ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৩.০০ অপরাহ্ন]
- নওগাঁয় দুদকের গণশুনানি ১৮ফেব্রুয়ারী [ প্রকাশকাল : ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ০৭.০০ পুর্বাহ্ন]