তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ঢাকায় বায়ু দূষণের নতুন আতঙ্ক,মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী

ঢাকায় বায়ু দূষণের নতুন আতঙ্ক,মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে নগরবাসী
[ভালুকা ডট কম : ২১ জানুয়ারী]
ঢাকার বায়ু দূষণের মাত্রা মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর পর্যায় পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক সংস্থা এয়ার ভিজ্যুয়ালের হিসাব অনুযায়ী, ১৯ ও ২০ জানুয়ারী বাংলাদেশ সময় রাত ১১টার দিকে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় ঢাকা ছিল এক নম্বরে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল নয়াদিল্লি। আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী সায়েন্স অব দ্য টোটাল এনভায়রনমেন্ট এবং এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড পলুশন রিসার্চ- চলতি মাসে তাদের পৃথক দুটি গবেষণাপত্রেও ঢাকায় বায়ু দূষণের মারাত্মক ঝুঁকির কথা প্রকাশ করেছে।

বিশ্বব্যাংকের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বায়ু দূষণের ৫৮ শতাংশ উৎস হচ্ছে মহানগরীর আশেপাশের অঞ্চলে স্থাপিত ইটভাটা। আর রাস্তাঘাটের ধুলা এবং মোটরগাড়ি ও কারখানার দূষণ মিলে ২৬ শতাংশ। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবে পাঁচ বছর আগেও বায়ুদূষণে ওই তিন খাতের অবদান ছিল ১৫ শতাংশ।

পরিবেশ বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অনিয়ন্ত্রিত নির্মাণকাজ, তীব্র যানজট, মেয়াদোত্তীর্ণ মোটরযান ও শিল্পকারখানা থেকে নির্গত বিষাক্ত ভারী ধাতু ধুলার সঙ্গে যোগ হচ্ছে। এর ফলে রাস্তাঘাট বা খোলা স্থান ছাড়াও বাড়িঘর, অফিস-আদালত, হাসপাতাল,  শ্রেণিকক্ষ ও খেলার মাঠেও বাতাসে ক্ষতিকর অতি ক্ষুদ্র বস্তুকণার উপস্থিতি দেখা দিয়েছে।

গবেষণায় ঢাকার রাস্তার ধুলায় সর্বোচ্চ মাত্রায় সিসা, ক্যাডমিয়াম, দস্তা, ক্রোমিয়াম, নিকেল, আর্সেনিক, ম্যাঙ্গানিজ ও কপারের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মাটিতে যে মাত্রায় ক্যাডমিয়াম থাকার কথা, ধুলায় তার চেয়ে প্রায় ২০০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। আর নিকেল ও সিসার মাত্রা দ্বিগুণের বেশি। খুব সহজেই এসব ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বস্তুকণা ত্বকের সংস্পর্শে আসছে; শ্বাসপ্রশ্বাস, খাদ্য ও পানীয়র মাধ্যমে মানুষের শরীরেও প্রবেশ করছে। এতে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে পড়ছে নগরবাসী, বিশেষ করে শিশুরা। শ্বাসকষ্ট থেকে শুরু করে শরীরে বাসা বাঁধছে ক্যানসারসহ রোগবালাই।

বাংলাদেশ ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট-এর সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক কাজী রাকিবুল ইসলাম বলেছেন, বাতাসে ভারী ধাতু ও সূক্ষ্ম বস্তুকণা বেড়ে গেলে ক্যানসার, শ্বাসকষ্ট, স্নায়ুজনিত সমস্যা বেড়ে যায়, বুদ্ধিমত্তা কমে যায়। পাঁচ বছর ধরে এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা ৫০ শতাংশ বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেন, মারাত্মক দূষণকারী ইটের ভাটার কালো ধোঁয়া এবং যানবাহন ও কারখানার ক্ষতিকারক ধোঁয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। তাছাড়া  উন্নয়ন মূলক কাজ, ইমারত নির্মাণ এবং রাস্তাঘাট খোড়াখুড়ি ও মেরামতকাজে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যাতে এগুলি থেকে বায়ু দূষণ সর্বনিম্ন পর্যায়ে থাকে।

ওদিকে, ঘরের মধ্যে বাতাসে সূক্ষ্ম বস্তুকণা ও গ্যাসীয় পদার্থের দূষণ বিষয়ে ভিন্ন একটি গবেষণায় ঢাকার মিরপুর, খিলক্ষেত, রামপুরা, দোলাইরপাড় ও টঙ্গী- এই  পাঁচটি আবাসিক এলাকার একতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত ভবনের ভেতরে বায়ুতে ভাসমান ক্ষতিকর সূক্ষ্ম বস্তুকণার ঘনত্ব বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত নিরাপদ মাত্রার চেয়ে বেশি পাওয়া গেছে।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাইরের দূষিত বায়ুর ৪২ শতাংশ ঘরে চলে আসে। একই সঙ্গে ঘরের মধ্যে ময়লা-আবর্জনা, ডিটারজেন্ট, রান্না ও টয়লেট থেকেও দূষিত পদার্থ বাতাসে যুক্ত হয়। ফলে ঘরের ভেতরের বাতাসেও দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাজধানীর সড়কগুলোতে ধুলা নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন সকালে সিটি করপোরেশন থেকে রাস্তায় পানি ছিটানোর কথা থাকলেও তা নিয়মিত ও যথাযথভাবে করা হচ্ছে না বলে নগরবাসী অভিযোগ করেছেন। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পরিবেশ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই