তারিখ : ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় বনবিভাগের জমিতে বহুতল শতশত ভবন নির্মাণ

ভালুকায় বনবিভাগের জমি দখলে নিয়ে বহুতল শতশত ভবন বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ
[ভালুকা ডট কম : ২৪ মার্চ]
বর্তমান রেঞ্জার ও বিট অফিসার ভালুকা রেঞ্জ অফিসে যোগদান করার পর হবিরবাড়ি এলাকার দখলদাররা যেন বনের জমি দখলে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। রেঞ্জ অফিসের নাকে ডগায় বনের জমি দখল করে প্রভাবশালীরা বহুতল ভবনসহ দু’শতাধিক বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। এসব বিশাল আকারের বসতবাড়ি নির্মাণে অসাধূ বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। খুদ বনের দুই কর্মকর্তা বনের জমিতে ঘর নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে। এতে বনভূমি বেহাত হওয়ার পাশাপাশি এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ হুমকীর সম্মুখিন হয়ে পড়েছে।

এলাকবাসী সূত্রে জানা গেছে, হবিরবাড়ি ইউনিয়নে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় শ্রমিকসহ অতিরিক্ত লাখ লাখ লোকজন বসবাস করছে। তাই এলাকায় আবাসনের ব্যাপক চাহিদা। ফলে আশপাশ ভালুকাসহ উপজেলার লোকজন এসে বনের এক খন্ড জমি সস্তায় দখল সূত্রে ক্রয় শ্রমিক স্থানীয় বন বিভাগের লোকজনকে ম্যানেজ করে বাড়ি নির্মাণ করে। কোনো রকমের একটি রুম হলে ভাড়া ৩থেকে ৫হাজার টাকা দেয়া যায়। বাসা ভাড়া ব্যাপক থাকায় বনের জমিতে ঘর নির্মাণে প্রতিযোগিতা চলছে। সম্প্রতি ব্যাপকহারে গড়ে উঠছে বেশ কয়েকটি বিশাল আকারের বহুতল ভবনসহ ইট দিয়ে টিনসেটর দু’শতাধিক বসতবাড়ি।

স্থানীয় বন অফিসের কয়েক’শ গজ দূরে এসব বহুতল ভবন ও বসতবাড়ি প্রকাশ্যে নির্মাণ হওয়ায় অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, এলাকার বন বিভাগ কি ধ্বংসের দার প্রান্থে। বসত বাড়ি নির্মাণকারী একাধিক ব্যক্তি ও স্থানীয়রা জানান, এ সব স্থাপনা নির্মাণে বন বিভাগের কতিপয় অসাধূ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দিতে হচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, ভালুকা রেঞ্জ অফিসের অদূরে হবিরবাড়ি মৌজার ৯ নম্বর দাগে প্রকাশ্যে গড়ে তুলছেন ৬ তলা ভবনের কাজ, একই দাগে আওলাতলি সড়কে বেশ কয়েকজন ১০/১২ রুমের বিশাল বাড়ি সহ একটি গার্টেনের  বিশাল ঘর গড়ে তোলা হয়েছে। ১৫৬ নম্বর দাগে বেলাশিয়া পাড়ায় বন বিভাগে নোয়াখালীতে কর্মরত সহকারী ফরেস্টার শাহজাহান ও নজরুলসহ বেশ কয়েকজন নির্মাণ করছেন বিশাল বিশাল বসতবাড়ি।একই মৌজার ১৮৫ নম্বর দাগে বহুতল ভবন নির্মাণ করছেন, আজিজুল ইসলাম, জসিম উদ্দিন, খোকা মিয়া, আইনুল ইসলমসহ বেশ কয়েকজন, ১৫৪ নম্বর দাগে নজরুল ইসলামসহ বেশ কয়েক জন, একই মৌজার ৮৭ নম্বর দাগে আব্দুর রাজ্জাক, তার ভাই ও বোন জামাই হাবিবুর রহমান বিশাল ৫০ থেকে ৫৫ টি বিশাল ঘর ,আব্দুল হামিদ,স্বাধীণ সংমা ও অর্জুন বিশ্বাস বাড়ি নির্মাণ করছেন। একই দাগে জাহিদ হোসেন নির্মাণ করছেন ৫ তলা বাড়ি।  ১৭০ দাগে রফিকসহ বেশ কয়েকজন, কাঠালী মৌজার ২৭৬ নম্বর দাগে ফজলু মিয়া নির্মাণ করছেন বহুতল ভবন ও ধামশুর মৌজার ১১০৮ দাগে আব্দুর রাজ্জাক ও একই মৌজার ১২০৭ দাগে আখালিয়াপাড়ায় ডাক্তার শাহিন করছেন বহুতল ভবনসহ ৭/৮ টি রুমের বিশাল বাড়ি। মেহেরাবাড়ি মৌজার ৭৪ নম্বর দাগে জনৈক ওয়াহাব মুন্সী, ১৬০ নম্বর দাগে সুজন মিয়া, মানিক মিয়া, কিবরিয়া, আলিম, শামীম মিয়া ও মিলন মিয়ার বাড়ি সহ বিভিন্ন মৌজায় বহুতল ভবনসহ প্রায় দু’শাতাধিক বাসা-বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। তা ছাড়া ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে মাষ্টারবাড়ি থেকে ধামশুর পর্যন্ত প্রভাবশালীরা বনবিভাগের কোটি কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলে নিয়ে সীমাণাপ্রাচীর নির্মাণসহ শিল্পপ্রতিষ্ঠাণ গড়ে তুলার অভিযোগ রয়েছে ।

এদিকে, একটি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যু ও কাঠ পাচারকারীদল হাবিরবাড়ির বারশ্রী গ্রামে ১১ গড় নামক এলাকার কয়েক কিলোমিটার জুড়ে গজারি বনের বিশাল আকারের হাজার হাজার গজারি গাছ রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে বন সাবার করার অভিযোগ উঠেছে। প্রকাশ থাকে যে, বন এলাকার ১০ কিলোমিটারের ভেতর কড়াতকল স্থাপন নিষিদ্ধ থাকলেও ভালুকা রেঞ্জ অফিস সিডস্টোর বাজার,মহাসড়কের মাস্টারবাড়ি বাসস্ট্যান্ডে কড়াতকলসহ গজারি বনের ভেতর ও আশাপাশ এলাকায় অর্ধশতাধিক অবৈধ কড়াতকল রয়েছে। সেসব কড়াতকলে দিনরাত এসব গজারী ও আকাশমনি গাছ চেড়াই করে যাচ্ছে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। আর এ সব প্রতিটি কড়াতকল থেকে বন বিভাগের অসাধূ ব্যক্তিরা প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে মাসুয়ারা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

ভালুকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শিহাব আমীন জানান, উপজেলা নির্বাচনের পর এক সাথে ৫শত বাড়ির নির্মাণ শুরু করা হবে।দেখি বনবিভাগ আমাদের বিরুদ্ধে কী করতে পারে।ভালুকা রেঞ্জার মোজাম্মেল হোসেন জানান, আমরা ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছি। ভালুকা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেরাবাড়ি মৌজায় বন বিজ্ঞপ্তিত জমিতে স্থাপনা নির্মাণ করছেন। তবে এ সব বাসা-বাড়ি নির্মাণের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে, তবে এখন মামলার ব্যাপারে বলা যাবে না, আদালত যদি আমলে নেয়, তখন বলতে পারবো।

ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) ভালুকা অঞ্চলের সহকারী বন সংরক্ষক আবু ইউসুফ জানান, তিনি উপস্থিত থেকে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছেন। তা ছাড়া স্থানীয় বন কর্মকর্তাকে অবৈধ স্থাপনাকারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।#             



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই