তারিখ : ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

দেড় লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ

দেড় লক্ষ কোটি টাকার ঘাটতি বাজেট পেশ,নতুন কোনো কর নয়
[ভালুকা ডট কম : ১৩ জুন]
সমৃদ্ধ আগামী’র প্রত্যাশা সামনে রেখে শেখ হাসিনা সরকারের তৃতীয় মেয়াদে প্রথম অর্থ বছরের (২০১৯-২০) জন্য পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার বাজেট জাতীয় সংসদের সামনে উপস্থাপন করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ (বৃহস্পতিবার) বিকেলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের এই বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। তার আগে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের পর ওই প্রস্তাবে সই করেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ।

অর্থমন্ত্রী সংসদের সামনে যে বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেছেন, তাতে আয় ও ব্যয়ের হিসাবে সামগ্রিক ঘাটতি থাকছে প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার ৩৮০ কোটি টাকা, যা জিডিপির ৫ শতাংশের সমান। অর্থনীতিবিদরা বাজেট ঘাটতির এই পরিমাণকে গ্রহণযোগ্য সীমার মধ্যেই ধরেন। এই ঘাটতি পূরণে অর্থমন্ত্রীর সহায় অভ্যন্তরীণ এবং বৈদেশিক ঋণ। তিনি আশা করছেন, বিদেশ থেকে ৬৩ হাজার ৮৪৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ৭৭ হাজার ৩৬৩ কোটি টাকা ঋণ করে ওই ঘাটতি মেটানো যাবে। এছাড়া বাজেট প্রস্তাবে বৈদেশিক অনুদান থেকে ৪ হাজার ১৬৮ কোটি টাকা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।

এই বাজেট বাস্তবায়ন করতে পারলে মূল্যস্ফীতি ৫.৫ শতাংশের মধ্যে আটকে রেখেই ৮.২০ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাওয়া সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়েছে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়। অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল তার প্রথম বাজেটে ব্যায়ের যে হিসাব ধরেছেন, তা বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১৮.১ শতাংশের সমান। নতুন অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত এই ব্যয় বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ১৮ শতাংশ বেশি। এবার সোয়া পাঁচ লাখ কোটি টাকার বাজেটে উন্নয়ন ব্যয় ধরা হচ্ছে ২ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত উন্নয়ন বাজেটের প্রায় ২২ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার দুই লাখ দুই হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এরই মধ্যে এডিপি অনুমোদন করা হয়েছে। এবার পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে তিন লাখ ১০ হাজার ২৬২ কোটি টাকা, যা বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত অনুন্নয়ন বাজেটের চেয়ে ১৬ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে ৬০ হাজার ১০৯ কোটি টাকা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধেই যাবে, যা মোট অনুন্নয়ন ব্যয়ের ১৯ শতাংশের বেশি।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল আশা করছেন, নতুন অর্থবছরের সম্ভাব্য ব্যয়ের ৭২ শতাংশ তিনি রাজস্ব খাত থেকে পাবেন। তার প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৭৭ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এই অংক বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের ১৯ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে কর হিসেবে ৩ লাখ ২৫ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আদায় করা যাবে বলে আশা করছেন কামাল। ফলে এনবিআরের কর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে ১৬.২৮ শতাংশ।

গতবারের মত এবারও সবচেয়ে বেশি আয়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে, এক লাখ ২৩ হাজার ৬৭ কোটি টাকা। এই অংক বিদায়ী অর্থবছরের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ১৭.২১ শতাংশের মত। বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটে ভ্যাট থেকে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য ধরা ছিল ১ লাশ ১০ হাজার ৫৫৪ কোটি টাকা। লক্ষ্য পূরণ না হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ১ লাখ ৪ হাজার ৭৯৭ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়। আয়কর ও মুনাফার উপর কর থেকে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯১২ কোটি টাকা রাজস্ব পাওয়ার আশা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। বিদায়ী সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ ছিল ৯৫ হাজার ১৬৭ কোটি টাকা।

এছাড়া নতুন বাজেটে আমদানি শুল্ক থেকে ৩৬ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা, সম্পূরক শুল্ক থেকে ৪৮ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা, রপ্তানি শুল্ক থেকে ৫৪ কোটি টাকা, আবগারি শুল্ক থেকে ২ হাজার ২৩৯ কোটি টাকা এবং অন্যান্য কর ও শুল্ক থেকে ১ হাজার ৬৭৭ কোটি টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করেছেন অর্থমন্ত্রী। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রাজস্ব আদায় বাড়াতে তিনি এবার নতুন কোনো কর আরোপ করছেন না। বরং করের আওতা বাড়িয়ে তিনি রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে চান।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিকেলে সোয়া ৩টায় শুরু করে প্রায় ৩০ মিনিটের মতো বাজেট বক্তব্য তুলে ধরেন। অসুস্থ থাকার কারণে বসেই বক্তব্য শুরু করেন তিনি। তারপরও তাঁকে অসুস্থ দেখায়। একপর্যায়ে তিনি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে পাঁচ মিনিটের সময় চান। তবে ওই বিরতির পর ঠিক বিকেল ৪টা ৮ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই দাঁড়ান। স্পিকারকে তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী অসুস্থবোধ করছেন। আপনি অনুমতি দিলে বাকি অংশটুকু আমি পড়তে চাই।’ পরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীকে অনুমতি প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী বাজেট বক্তব্যের বাকি অংশটুকু পড়া শুরু করেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জাতীয় বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই