তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকার সাবেক সাব রেজিস্টারসহ তিনজনের নামে দুদকে মামলা

সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে
ভালুকার সাবেক সাব রেজিস্টারসহ তিনজনের নামে দুদকে মামলা
[ভালুকা ডট কম : ১২ সেপ্টেম্বর]
গত ২০১৭সালে ১২ডিসেম্বর ‘ভালুকায় মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে জমি রেজিস্ট্রি’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর দুদকের দীর্ঘ তদন্তের পর ৯কোটি টাকা আত্নসাত করার অভিযোগে ভালুকার তৎকালীন সাব রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম,দলিল লেখক ও জমি গ্রহিতার প্রতিনিধির নামে দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন সূত্রধর বাদী হয়ে ২টি মামলা করেছেন।

সূত্রে জানাযায়,নয় কোটি টাকার আত্মসাতের প্রমাণ পেয়ে বুধবার বিকেলে সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলমসহ তিনজনের নামে দুটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদুক)।  দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ময়মনসিংহ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন সূত্রধর বাদী হয়ে ভালুকার সদ্য বিদায়ি সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম, অফিসের দলিল লেখক সিরাজুল ইসলাম সুজন ও  জমি গ্রহিতা আজমল কবীরের প্রতিনিধি আবু রাসেল চৌধুরীর নামে ২টি মামলাটি দায়ের করেছেন। উল্লেখ্য,সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম এক মাস আগে ভালুকা থেকে যশোরের ঝিনাইদহ সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে বদলি হয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ভালুকার সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম, অফিসের দলিল লেখক সিরাজুল ইসলাম সুজন এবং ঢাকা ব্যবসায়ী আজমল কবীরের প্রতিনিধি আবু রাসেল চৌধুরীর যোগসাজশে প্রতারণা করে নয় কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে ভালুকা উপজেলার ভরাডোবা ইউনিয়নের পুরুড়া মৌজার এক মৃত ব্যক্তি ও বিদেশে অবস্থান করা ব্যক্তির নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে ভুয়া দলিল দাতা সাজিয়ে কমিশনের মাধ্যমে মসাজিদ,মাদ্রাসা,কবরস্থান জমি  ২০১৭ সালে ২টি ভুয়া দলিলের মাধ্যমে সতের একর তিরাব্বাই শতাংশ জমি সাব রেজিস্ট্রারের মধ্যমে নিবন্ধন করেন। এতে প্রায় ৯ কোটি টাকা মূল্যের জমি জাল দলিলের মাধ্যমে আত্মসাৎ করে টাকা ভাগাভাগি করে নেন তারা। এ ঘটনা জানাজানি হলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জমি আত্মসাৎ ও দলিল জালিয়াতির সত্যতা পায় দুদক।

বুধবার বিকেলে ময়মনসিংহ দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে  তাদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেন। এ জালিয়ত চক্রের সাথে ভরডোবা গ্রামের ইদ্রিস মাস্টার,আনোয়ার হোসেন মিলন,বালা,ইসমাঈল,আরিফ পুরুড়া গ্রামের ইকবাল হোসেন, শহিদ,খলিলে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

আরও জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৮সেপ্টেম্বর ভালুকা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে যোগদান করেন জাহাঙ্গীর আলম। যোগদান করার পর তিনি সাব কবলা,হেবা,বন্ধকি,দানপত্রসহ সব ধরণের রেজিস্ট্রিকৃত দলিলে জমির মূল্যের শতকরা ৫শতাংশ হারে ও উপর পিফি নামে প্রতি দলিলে ২শত টাকা করে সেরেস্তা ফি ধার্য করে দেন। সেই টাকা অগ্রিম আদায়ের জন্য অফিসে দু’জন কর্মচারী অফিস সহকারী আবুল হাশেম ও মোহরার আন্বিয়া খাতুনকে নিযুক্ত করেন। কোনো দলিল লেখক ধার্যকৃত সেরেস্তা ফি কম দিতে চাইলে অফিস সহকারী প্রতিস্বাক্ষর না করে দলিল ফেরত পাঠিয়ে দিতো। এ নিয়ে ওই সময় দলিল লেখক ও জমি ক্রেতাদের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। লাইসেন্স হারানোর ভয়ে কোন দলিল লেখক প্রকাশ্যে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এ ঘটনায় ২০১৭সালে ২৬শে সেপ্টেম্বর উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় সাবরেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম দলিল মূল্যের শতকরা ৫ শতাংশ হারে সেরেস্তা ফি নামে প্রকাশ্যে দলিল লেখকদের মাধ্যমে দলিল গ্রহীতার কাছ থেকে অবাধে ঘুষ গ্রহণ বন্ধের জন্য সর্ব সম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। তারপরও  ওই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন হয়নি।

চলতি বছরের ৫মে সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার কাদিগড় মৌজার ১৭ কোটি টাকা দামের সাড়ে নয় একর জমি আমমোক্তা দলিল করেন। অথচ ওই জমির দুই মালিক ১৪ বছর আগে সৌদি আরবে মারাযান। মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে মৃত ব্যক্তির নামের জমির ভূয়া দাতা সাজিয়ে ওই দলিল নিবন্ধন করেন সাব-রেজিস্ট্রার জাহাঙ্গীর আলম। পরে অবশ্য বিষয়টি জানাজানি হলে প্রশাসন ও স্থানীয় সাংবাদিকদের চাপের মুখে ওই দলিল বাতিল করেন তিনি।

জাহাঙ্গীর আলম ভালুকা কর্মরত থাকা অবস্থায় ভালুকা এস,আর অফিসের দলিল লেখক গোলাম মোস্তফা (লাইসেন্স নং ৬১০৮) উপজেলার পালগাঁও গ্রামের আব্দুর রহিম,পানিভান্ডা গ্রামের আবুল কালাম,গোলাম মোস্তফা ও সখিপুরের উপজেলার সোহেলের যোগসাজশে লোহবৈ,মেদুয়ারী মৌজার ১বিঘারও বেশি জমি নরসিংদী ও ঢাকা বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে আমোক্তানামা দলিল করে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন। এ ছাড়া তিনি ভালুকা থাকা কালীন বহু বনের জমি বিভিন্ন ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের কাছে থেকে মোট অংকের ঘুষ নিয়ে দলিল নিবন্ধন করে দেন।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সাধন সূত্রধর জানান, আমরা বিভিন্ন সূত্র থেকে অবগত হয়ে স্ব-উদ্যোগে দীর্ঘ তদন্ত শেষে কমিশনের অনুমতি স্বাপেক্ষে এ মামলা ২টি করেছি। যদি কোনো সরকারী কর্মকর্তা অনিয়মকে প্রশ্রয় না দেন সাধারণ মানুষ কোনো সময়ই এ ধরণের দুর্নীতি করতে পারবে না। তাই সাব-রেজিস্ট্রারকে প্রধান আসামী করা হয়েছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই