তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকার কাদিগড়ের বেহাল রাস্তা,পর্যটক নেই জাতীয় উদ্যানে

ভালুকার কাদিগড়ের বেহাল রাস্তা,পর্যটক নেই জাতীয় উদ্যানে
[ভালুকা ডট কম : ২৯ সেপ্টেম্বর]
৬০ পজাতির উদ্ভিদ ও বিশ প্রজাতির বন্যপ্রানীসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখির বসবাস করা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কাদিগড় জাতীয় উদ্যানটি বেহাল রাস্তার কারণে আকৃষ্ট করতে পারছে ভ্রমণপিয়াসীদের। বনভূমি রক্ষার মাধ্যমে জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ ও ইকোট্যুরিজমের কথা চিন্তা করে ২০১০ সালে ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের পালগাঁও ও কাদিগড় মৌজায় প্রায় ৯৫০ একর বন ভূমিতে আকর্ষনীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলার পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু দীর্ঘ নয় বছরেও উদ্যানটির চার পাশের সীমানা প্রাচীর ও যোগাযোগ ব্যবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ভালুকা উপজেলার সীডস্টোর বাজার থেকে পশ্চিম দিকে ৬ কিলোমিটার  যাওয়ার পর ২ কিলোমিটার উত্তরে পালগাঁও চৌরাস্তায় জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশদ্বার। সীডস্টোর-সখীপুর রাস্তাটি প্রায় এক যুগ ধরে সংস্কার করা হয় না।ফলে ভালুকার অংশের কার্পেটিং ওঠে খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। সীডস্টোর বাজার থেকে লাউতি খালের সেতু পর্যন্ত রাস্তার পুরু অংশেই ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত। আমছর আলীর বাড়ীর পাশে রাস্তায় বিশাল গর্তে পানি জমে আছে।রানারের ২নম্বর গেইট এলাকার ভাঙ্গা রাস্তায় পানি জমে ছোট একটি জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়াও রানারের ১নম্বর গেইট, তাহের খানের পাশে, আফছর খাঁ মোড়ে রাস্থার মধ্যে জলাশয় দেখা গেছে। উদ্যানে যাতায়াতের ৮ কিলোমিটার রাস্তাই বেহাল। সীডস্টোর- সখীপুর রাস্তাটি বেহালের কারণে বড় ধরণের কোনো যান চলাচল করে না। তারা বিকল্প রাস্তা হিসেবে পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে বাটাজোর বাজার থেকে ডাকাতিয়া চৌরাস্তার মোড় হয়ে ভালুকা উপজেলা সদরে প্রবেশ করেন। ওই রাস্তাটির সংস্কার হলে ছয় কিলোমিটারের দুর্ভোগ কমে যাবে। কাচিনা বাজার থেকে মল্লিকবাড়ি রাস্তার সংস্কার কাজ শুর হয়েছে। এতে দুই কিলোমিটারের দুর্ভোগ কমে যাবে।

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের সীডষ্টোর বাজার থেকে পশ্চিম দিকের বেহাল রাস্তায় অনুমান ৬ কিলোমিটার যাওয়ার পর দুই কিলোমিটার উত্তরে পালগাঁও চৌরাস্তায় কাদিগড় জাতীয় উদ্যানের প্রধান প্রবেশদ্বার। উদ্যানের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় ছোট একটি জলাশয়।ফটকটি খোলা অবস্থায় আছে।দুই পাশে দুটি টিকিট কাউন্টার রয়েছে।তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। ভেতরে ডুকেই দেখা গেল গরু চড়ানো। কিছুক্ষণ হাটার পর পাওয়া গেল পিকনিক স্পট, বাম দিকে দুটি একতলার ভবন। একটি পর্যটকদের বিশ্রামের জন্য আরেকটি বন কর্মকর্তাদের। সেখানে পাওয়া গেল বন বিভাগের এক মালিকে। তাঁর কাছে এই উদ্যানের কোন তথ্য নেই। বের হয়ে আর একটু দক্ষিণে দেখা গেল ওয়াচ টাওয়ারের।সেখান থেকে পূর্ব-দক্ষিণে দেখা মেলে বানরের পালের। এক গাছ থেকে আরেক গাছে লাফালাফি করছে। দক্ষিণ দিকে বেশ কয়েকজন রাখাল দেশীয় জাতের গরু চরাচ্ছেন। পশ্চিম দিকে দেখা মেলে একটি ছোট লেক ও একটি এক তলা ভবনের । ওয়াচ টাওয়ারের চার দিকেই বিভিন্ন বয়সের অন্তত সতের জন ব্যক্তিকে ধানের ক্ষেতের আইলে বসে থাকতে দেখা যায় ।

সেখানে গেলে ষাট ছুঁই ছুঁই আমছর আলী নামের এক ব্যক্তি জানান, তাঁর জমিতে তিনি ধান লগিয়েছেন।বানর এসে সেই ধান নষ্ট করে ফেলে। তাই তিনি সেখানে বাডুল হাতে নিয়ে বসে আছেন।বানর আসা মাত্রই বাডুল ছুড়া হয়।অন্যরাও একই কাজে ক্ষেতের আইলে বসে আছেন।

সেখান থেকে পশ্চিম দিকের ওই ভবনের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে দেখা মেলে সাত জন কিশোর বয়সের একটি দলের। তারা সেখানে বসে গীটার হাতে মনের আনন্দে গানের চর্চা করছেন। ভবনে গিয়ে দেখা গেল স্থানীয় এক বহিরাগত পরিবারের বসবাস। যদিও পর্যটকদের বিশ্রামগার হিসেবে ব্যবহারের জন্য ভবনটি করা হয়ছে।কিন্তু তাদের দাবি, বেহাল রাস্তার কারণে পর্যটকেরা না আসায় তারা বসবাস করেন।পাশেই পর্যটদের ব্যবহারের জন্য টয়লেটের উপরে লতানো গাছ জন্মেছে।দীর্ঘ দিন ধরে দরজা তালা না খুলায় জম পড়েছে।লেকের পাড়সহ অন্যান্য স্থানের পর্যটকদের বসার স্থান গুলোতে গাছের পাতা পড়ে পঁচে স্যাত স্যাত অবস্থায় রয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সালেহ ইমরান নামের এক ব্যক্তি জানান, সীডস্টোর-সখীপুর রাস্তাটি প্রায় এক যুগ ধরে সংস্কার করা হয় না।এতে এই রাস্তার কার্পেটিং উঠে গর্তে বৃষ্টির পানি জমে যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে এই অঞ্চলের মানুষের বিশেষ করে পোল্ট্রি,মাল্টা ও লেবু চাষীদের বিপাকে পড়তে হয়।

ভালুকার রেঞ্জের কর্মকতা মোজাম্মেল হোসেন জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা বেহালের কারণে কাদিগড় জাতীয় উদ্যানে পর্যটকদের আগমন কম।উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে  জেলা ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান বলেন, কাদিগড় জাতীয় উদ্যানকে জেলা ব্র্যান্ডিং এর আওতায় এনে প্রচারণার কার্যক্রম চালানো হয়েছে। জেলার পর্যটন খাতকে গুরুত্ব দিয়ে ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহন করা হবে। বেহাল যাতায়াত ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন,এই সম্পর্কে ভালুকার ইউএনও কে একটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। সেটি দেখার পর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই