তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রায়,১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের রায়,১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল
[ভালুকা ডট কম : ০৮ জানুয়ারী]
রাজধানীর পিলখানা সদর দপ্তরে ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে হাইকোর্টে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি আজ প্রকাশ করা হয়েছে। এ রায়ে তিন বিচারপতি আলাদা আলাদা রায় দিয়ে আসামিদের মৃতুদণ্ডের পক্ষে একমত হয়েছেন।

দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক আসামির ফাঁসির আদেশ দেয়া হয়েছে  এ মামলার রায়ে। ২০০৯ সালের ২৫/২৬ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ রাইফেলসের মহাপরিচালকের দরবারে সশস্ত্র আক্রমণ এবং পিলখানায় মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পূর্বাভাস সংগ্রহে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ব্যর্থতার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা সংস্থাসহ দায়িত্বে অবহেলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার সুপারিশ করেছে হাইকোর্ট।

উচ্চ আদালত এ মামলায় প্রদত্ত এগারো দফা সুপারিশের সর্বশেষ দফায় উল্লেখ করেছে, (ক) সমাজের সব স্তরে নৈতিকতা পুনরুদ্ধার ও জাতি গঠনের জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষায় বাধ্যতামূলক নীতিশাস্ত্র (Ethics) শিক্ষাদান অতি জরুরি। নৈতিকতার অবক্ষয়ের কারণে সমাজের প্রতিটি স্তরে অসম প্রতিযোগিতা দৃশ্যমান। আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় নীতিশাস্ত্রের  অধ্যয়ন বাধ্যতামূলক হওয়া অপরিহার্য।

(খ) রাষ্ট্র ও সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের বসবাস উপযোগী উন্নত ও টেকসই সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিজ নিজ ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুশাসনে শিশুদের চরিত্র গঠনের মাধ্যমে মানবিক গুণাবলিসম্পন্ন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার বিশুদ্ধ পরিবেশ সৃষ্টি করা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

হাইকোর্ট তার পর্যবেক্ষনে আরো উল্লেখ করেছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২৪/০২/২০০৯ তারিখে পিলখানায় বাংলাদেশ রাইফেলসের কুচকাওয়াজে সালাম গ্রহণ করেছেন, অথচ সরকারের সংশ্লিষ্ট গোয়েন্দা বাহিনী ও নিরাপত্তাকর্মীদের বাহ্যিক তৎপরতা দৃশ্যমান হলেও ভেতরে অন্তঃসার শূন্যতা পরিলক্ষিত হয়।

বিডিআরে তীব্র অসন্তোষ এবং প্রকাশ্যে লিফলেট বিতরণ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতাসহ কমান্ডিং অফিসারদের নজরে আসা সত্ত্বেও তারা উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগ গ্রহণ না নিয়ে উদাসীনতার পরিচয় দিয়েছেন।

পিলখানায় নিহত সামরিক, আধা-সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান করা।এবং  নিহতদের সন্তান বা পরিবারের উপযুক্ত সদস্যদের আর্থিক, সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তা বিধানে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরির ব্যবস্থা গ্রহণ করারও সুপারিশ করেছে আদালত।

আলোচিত এ মামলায় ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর ১৫২ জন বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন বিচারিক আদালত। ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স এবং আপিলের ওপর হাইকোর্ট ২০১৭ সালের ২৬ ও ২৭ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

আজ বুধবার (৮ জানুয়ারী) আলোচিত এ মামলার রায় প্রকাশের পর সুপ্রিম কোর্টে নিজ কার্যালয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের জানান বিডিআর বিদ্রোহের মামলায় হাইকোর্টে খালাসপ্রাপ্তদের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। ফৌজদারি নিয়ম অনুসারে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করা যাবে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে তিনজন মারা গেছে। যাবজ্জীবন দেয়া হয়েছে ১৮৫ জনকে। তাদের মধ্যে একজন মৃত্যুবরণ করেছে। ১৩ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ২ জনকে। ১৫৭ জনকে ১০ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন, তাদের মধ্যে ২ জন মারা গেছে। এছাড়া ১৩ জনকে সাত বছর, ১৪ জনকে ৩ বছর, ১ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে ২ জনকে। আসামিদের মধ্যে মোট ৫৫২ জনকে সাজা এবং ২৮৩ জনকে খালাস দেয়া হয়েছে। মোট আসামিদের মধ্যে মারা গেছেন ১৪ জন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অপরাধ জগত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই