তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

কিট নিয়ে প্রশাসনের বক্তব্য ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কিট নিয়ে ঔষুধ প্রশাসনের বক্তব্য ও বিশিষ্ট নাগরিকদের প্রতিক্রিয়া
[ভালুকা ডট কম : ২৭ এপ্রিল]
বিশ্ব মহামারী কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ শনাক্তকরণে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের সরকারি অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা বা কোনোপ্রকার ঘুষের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বাংলাদেশ সরকারের ঔষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

আজ (সোমবার) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কোনো দেশেই বর্তমানে র‍্যাপিড টেস্ট কিটের অনুমোদন দেয়নি। তা সত্ত্বেও গণস্বাস্থ্যকে টেস্ট কিট প্রস্তুতের ব্যাপারে আমরা আগেও সহযোগিতা করেছি, এখনও সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সক্ষমতা নেই- এটা বলছে না সরকার। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম মেনে কাজ করে তারা সফল হলে সরকার তাদের স্বাগত জানাবে।

এ প্রসঙ্গে জনস্বাস্থ্য সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ডাক্তার ফায়েজুল হাকিম ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেছেন, যেখানে মানুষের জীবন বাঁচানোর প্রশ্ন সেখানে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দ্রুত ছাড়পত্র প্রদানে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় কালক্ষেপণ করা হচ্ছে। এতে দেশের জনগণ রোগ শনাক্তকরণের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

করোনাভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার মধ্যেই ‘চিকিৎসকদের হয়রানি ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের উদ্ভাবিত কিটের পরীক্ষা ও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় সরকারের অনীহায়’ উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫৫ জন বিশিষ্ট নাগরিক।বিবৃতিতে স্বাক্ষরদানকারীদের মধ্যে নিজ নিজ ক্ষেত্রে অবদান রাখা অধ্যাপক, চিকিৎসক, লেখক, গবেষক, সাংবাদিক, রাজনৈতিক কর্মী, আইনজীবী, মানবাধিকার কর্মী, নারী আন্দোলন কর্মী, শিল্পী ও আলোকচিত্রী রয়েছেন।

তারা বলেন,বাংলাদেশে কোভিড-১৯-এর সংক্রমণের দ্রুত বিস্তার রোধে সরকারের প্রতিকার এবং প্রতিরোধমুলক ব্যবস্থাগ্রহণের সীমাবদ্ধতা দেশের মানুষকে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। এই সীমাবদ্ধতা আরও ব্যাপকতা পেয়েছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের নেওয়া নিবর্তনমূলক পদক্ষেপের কারণে এবং সমাজ ভিত্তিক গণস্বাস্থ্য-আরএনএ বায়োটেক লি. কিটের পরীক্ষা, অনুমোদন ও উৎপাদনের অনুমতি প্রদানে সরকারের অনীহা এবং গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জনসমক্ষে ‘মিডিয়া ট্রায়াল’ করে হেয় প্রতিপন্ন করার মাধ্যমে।

করোনা রোগী শনাক্তের গুরুত্ব সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিবৃতিতে তারা বলেন, কোভিড-১৯-এর এখনও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, ফলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রধান উপায় হচ্ছে ব্যাপকভাবে টেস্ট, টেস্ট এবং টেস্ট করা, যা বর্তমানে এককভাবে আইইডিসিআরের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। এই অবস্থায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য আন্দোলনের অত্যন্ত পরিচিত ও দীর্ঘদিন সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের মাধ্যমে দেশে বিদেশে সুনাম অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র এগিয়ে এসেছে আরএনএ বায়োটেক লি. এর উদ্ভাবিত ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ কিট নিয়ে। এই কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দ্রুত জানা যাবে যে রোগী করোনায় আক্রান্ত কিনা। সংস্থাটি সরকারের কাছে আবেদন করে বলেছে, অনুমোদন পেলে এই কিট উৎপাদন এবং ব্যাপকভাবে স্বল্প খরচে ব্যবহার করতে পারবেন।

এ প্রসঙ্গে বিবৃতিদাতাগণ  বলেন,আমরা লক্ষ করেছি সরকার বিদেশ থেকে অনেক কিট ও পিপিই আমদানি করছে বা অনুদান নিচ্ছে কিন্তু নিজ দেশের উদ্ভাবনকে সময়মত প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে না। শেষ পর্যন্ত কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ কিট চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য ২৫ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তরের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। কিন্তু সরকারের, বিশেষ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কেউ সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। দেশের এই দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষের সহায়তার জন্যে উদ্ভাবন করা নমুনা কিটের উৎপাদনের অনুমতি প্রক্রিয়া শুরু করতে সরকারের অনীহা নগ্নভাবে প্রকাশ পেয়েছে।এর মধ্যে আবার জাফরুল্লাহ চৌধুরীকে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন ও তার উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন তারা।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাগণের মধ্যে রয়েছেন, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, অধ্যাপক পারউইন হাসান, ভাইস-চ্যান্সেলর, সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি; অধ্যাপক আকমল হোসেন, শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক আহমেদ কামাল, শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; শামসুল হুদা, নির্বাহী পরিচালক, অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রিফর্ম (এএলআরডি); ডা. নায়লা জামান খান, অধ্যাপক, ঢাকা শিশু হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক নিউরোসায়েন্স; শহিদুল আলম, আলোকচিত্রী, লেখক; অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক মেঘনা গুহঠাকুরতা, গবেষক; ফরিদা আক্তার, নারী অধিকার আন্দোলন কর্মী, অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অধ্যাপক সৌভিক রেজা, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, আ-আল মামুন, শিক্ষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ড. সামিনা লুৎফা, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, মাইদুল ইসলাম, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, তানভীর মুরাদ, শিক্ষক, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইন্সিটিউট, ড. সিউতি সবুর, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, রোজীনা বেগম, গবেষক, তাঞ্জিম ওয়াহাব, কিউরেটর, তাসলিমা আখতার, আলোকচিত্রী, শিক্ষক, পাঠশালা সাউথ এশিয়ান মিডিয়া ইন্সিটিউট, অধ্যাপক মির্জা তাসলিমা সুলতানা, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; অধ্যাপক সাইদ ফেরদৌস, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; গোলাম মোর্তোজা, সাংবাদিক; অধ্যাপক মাহমুদুল সুমন, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; ওমর তারেক চৌধুরী, লেখক-অনুবাদক; নাসরিন সিরাজ, নৃবিজ্ঞানী ও চলচ্চিত্রকার; ড. রুশাদ ফরিদী, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; অরূপ রাহী, সঙ্গীতশিল্পী, লেখক; ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; পার্সা সাঞ্জানা সাজিদ, লেখক, গবেষক, শিক্ষক, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়; নাজনীন শিফা, পিএইচডি গবেষক; ঋতু সাত্তার, শিল্পী; মুনেম ওয়াসিফ, শিল্পী; অধ্যাপক আজফার হোসেন, শিক্ষক, গ্র্যান্ড ভ্যালি স্টেট ইউনিভার্সিটি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; ড. সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও সাংবাদিক; সায়েমা খাতুন, শিক্ষক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; কবিতা চাকমা, মানবাধিকারকর্মী; হাসনাত কাইয়ুম, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; নাসরিন খন্দকার, পিএইচডি গবেষক; সাদাফ নূর, পিএইচডি গবেষক, ল্যাঙ্কাসটার বিশ্ববিদ্যালয়; মোহাম্মদ আলী হায়দার, প্রধান নির্বাহী , বটতলা; ফিরোজ আহমেদ, লেখক, রাজনীতিবিদ, গণসংহতি আন্দোলন; মেহজাবীন রহমান, শিক্ষক, স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়; ড. মোবাশ্বার হাসান, গবেষক এবং লেখক; সাইমুম পারভেজ, পিএইচডি গবেষক (ইউনিভার্সিটি অফ সিডনি) এবং শিক্ষক, নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটি; আব্দুল্লাহ আল নোমান, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট; সাইমুম রেজা পিয়াস, শিক্ষক, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়; জাকির হোসেন, প্রধান নির্বাহী, নাগরিক উদ্যোগ; মুশফিক ওয়াদুদ, গ্রাজুয়েট টিচিং এসিটেন্ট, ইউনিভা‌র্সিটি অব নেভাডা, যুক্তরাষ্ট্র; অধ্যাপক জোবাইদা নাসরীন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; রেজাউর রহমান লেনিন, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী; রেহনুমা আহমেদ, লেখক; মুক্তাশ্রী চাকমা সাথী, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী এবং  খাদিজা মিতু, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

জাতীয় বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই