তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় খোলা বাজারে ধানের দাম ভালো

করোনা ভাইরাসের কারণে
নওগাঁয় খোলা বাজারে ধানের দাম ভালো পাওয়ায় গুদামে ধান দিচ্ছে না কৃষক, সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হওয়া নিয়ে আশঙ্কা
[ভালুকা ডট কম : ১৯ জুন]
উত্তরের খাদ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত জেলা নওগাঁ। নওগাঁয় উৎপাদিত চালের সুনাম রয়েছে দেশজুড়ে। কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারণে চলতি বোরো মৌসুমে নওগাঁর খোলা বাজার ও হাটগুলোতে বোরো ধানের দাম বেশি পাওয়ার কারনে সরকারি খাদ্যগুদামে ধান দিচ্ছে না লটারীতে নির্বাচিত কৃষকরা। ফলে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ অভিযান ব্যাহত হওয়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কর্মকর্তারা বলছেন, ইরি-বোরো ধান সংগ্রহের উদ্বোধনের পর থেকে গত এক মাসে সরকারি ভাবে ধান সংগ্রহ হয়েছে শতকরা ১০ভাগ।

সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে জেলার ১১টি উপজেলার জন্য সরকারি ভাবে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে প্রতি মণ ধান ১০৪০টাকা ধরে কেনার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ৩২হাজার ৩শত ৪০মেট্টিকটন। গত ২৬এপ্রিল থেকে সারা দেশে শুরু করা হয়েছে সরকারি ভাবে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের অভিযান। চলবে আগামী ৩১আগষ্ট পর্যন্ত। ইতিমধ্যেই জেলার ১০টি উপজেলায় সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার জন্য লটারীর মাধ্যমে কৃষকদের নির্বাচন করে তাদের তালিকা প্রতিটি খাদ্যগুদামে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সদর উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করা হয়েছে। কিন্তু চলতি বোরো মৌসুমে করোনা ভাইরাসের কারণে বাজারগুলোতে ধানের সরবরাহ কম থাকার জন্য ধানের দাম ভালো পাচ্ছেন কৃষকরা। তাই অধিকাংশ গুদামগুলোতে নেই ধান কেনার ব্যস্ততা। বিরাজ করছে সুনসান পরিবেশ। কোন কোন গুদামে বরাদ্দের শতকরা ১০শতাংশ ধানই কৃষকরা এখন পর্যন্ত দেয়নি। এছাড়াও বোরো ধানে বাম্পার ফলন পেয়ে খুশি কৃষকরা। কিছু শর্ত মেনে সরকারি খাদ্যগুদামগুলোতে ধান দিতে হয়। যে শর্তগুলো অধিকাংশ কৃষকরা পূরণ করতে পারে না বলে গুদামে ধান দিতে গেলে সমস্যায় পড়তে হয়। এছাড়াও নানা রকমের অভ্যন্তরিন সমস্যার কারণে কৃষকরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী নন। তাই চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় সরকারি ভাবে ধানক্রয়ের বরাদ্দকৃত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে দেখা দিয়েছে চরম আশঙ্কা। অপরদিকে খাদ্য বিভাগ বলছে সরকারি গুদামে ধান দেওয়ার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং লটারীতে নির্বাচিত কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে গুদামে দ্রুত ধান দেওয়ার সকল পজেটিভ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে।

জেলার রাণীনগর উপজেলার ঐতিহ্যবাহি ত্রিমোহনী হাটে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক আব্দুল হালিম, করিম উদ্দিনসহ অনেকেই জানান স্বাধীনতার পর চলতি বোরো মৌসুমে ফলন ও দাম ভালো পাচ্ছি। গুদামে ধান দিতে গেলে নানা সমস্যা ও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। আর হাটে ধান বিক্রি করতে আসলে তেমন কোন ঝামেলায় পড়তে হয় না। তাই আমরা হাটেই ধান বিক্রি করছি।

মিলার বকুল হাজী বলেন হাটে বর্তমানে জিরাশাইল ধান প্রতি মণ ১০৫০-৬০টাকা, ব্রি-২৯ ধান ৮৭০-৮০টাকা ও কাটারী ভোগ ধান ৯৫০-৬০টাকা বিক্রি হচ্ছে। দাম ভালো পাওয়াই কৃষকরা হাটে ধান বিক্রি করে অনেক খুশি।

রাণীনগর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম লিটন বলেন বর্তমানে খাদ্যগুদাম প্রাঙ্গনে সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে। নির্বাচিত কৃষকরাও গুদামে ধান দিতে আসছে না। সরকারের সংগ্রহ মূল্য থেকে বাজারে ধানের দাম বেশি থাকায় কৃষকরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী হচ্ছে না। তবে আমরা নির্বাচিত কৃষকদের গুদামে ধান দিতে উদ্বুদ্ধ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে সক্ষম হবো।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জিএম ফারুক হোসেন পাটোওয়ারী বলেন সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করার লক্ষ্যে প্রতিটি উপজেলায় কৃষকদের আগ্রহী করার লক্ষ্যে আমাদের সকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়াও লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য এক কৃষকের কাছ একাধিক টন ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে।

গত ইরি-বোরো মৌসুমে জেলায় মোট ১লাখ ৮২হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ করা হয়েছিলো যা লক্ষমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি। গুদামে ধান দেওয়ার শর্তগুলো কিছুটা শিথিল করে গুদামের প্রতি কৃষকদের আগ্রহী করার জন্য কৃষকদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং রাজনৈতিক সিন্ডিকেট ও দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সচেতনমহল।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই