তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় মাল্টা ও লেবু চাষে সাত বন্ধুর নীরব বিপ্লব

ভালুকায় মাল্টা ও লেবু চাষে সাত বন্ধুর নীরব বিপ্লব
[ভালুকা ডট কম : ১৪ জুলাই]
ভালুকা উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নে কাদিগড় গ্রামে লেবু ও মাল্টা চাষে ৭ বন্ধু নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছেন 'প্রয়াস এগ্রো' নামের একটি কৃষি খামার করে। লেবু মাল্টার পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে লাউ, ক্যাপ্সিকাম, পেঁপে, পেয়ারা,  হলুদ- আদা'সহ নানান জাতের ফসল। চারদিকে সবুজের সমারোহ গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা সিডলেস লেবু ও বারি-১ জাতের মাল্টা।

পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ওয়েব ইঞ্জিনিয়ার মাজহারুল ইসলাম শামীম, কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাবেক জি এম জালাল উদ্দিন, মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানীর ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন ও চারজন আইটি প্রকৌশলী শামিম, শরীফ, কাজল ও বাদল স্থানীয় মজিবর রহমানকে নিয়ে ২০১৭ সালে ভালুকা উপজেলার কাদিগড় নিজ গ্রামে ১০ একর জমিতে মাল্টা ও লেবু চাষ শুরু করেন। বর্তমানে তাদের ১৫ একর জমিতে 'প্রয়াস এগ্রো', ৪ একরে 'বারাকাহ এগ্রো', ও ২ একরে 'মেম্বার এগ্রো অ্যান্ড নার্সারী' নামে ৩টি মাল্টা ও লেবুর বাগান রয়েছে।১৫ একর জমিতে বারি-১ জাতের মাল্টা ও ১০ একর জমিতে সিডলেস জাতের বিচিবিহীন লেবু চাষ  করেছেন।

শামীম জানান দু'হাজার উনিশ সালে ১৭ শ মাল্টা গাছ থেকে আড়াই টন, দু'হাজার বিশ সালে ২৫শ মাল্টা গাছ থেকে ১৮-২০ টন মাল্টা উত্তোলন করেছেন। এছাড়া উনিশ সালে সারে পাঁচ হাজার গাছের লেবু বিক্রি করেছেন ১২ লাখ টাকা। দু'হাজার বিশ সালে এ পর্যন্ত তারা ৯ হাজার গাছ থেকে ২০ লাখ টাকার লেবু বিক্রি করেছেন । মাল্টা ও লেবু চাষের পাশাপাশি চারা বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করছেন । স্থানীয় বাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে  মাল্টা বিক্রি করা হয়। বিচিহীন, গন্ধযুক্ত, সুস্বাদু বারমাসি সিডলেস লেবু সারা বছর বিক্রি হয়। এ অঞ্চলের মাটি মাল্টা ও লেবু চাষের জন্য বেশ উপযোগী। সাত বন্ধুর বাগান দেখে অনেকেই মাল্টা ও লেবু চাষে উৎসাহী হচ্ছেন।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বাগানীরা লেবু তোলায় ব্যস্ত। মাল্টা বাগান পরিচর্যায় এলাকার বেকার নারী পুরুষকে কাজে লাগিয়ে তদারকি করছেন। লেবু নিতে আসা এক ফরিয়া জানান এক হাজার লেবু আট শ' টাকায় কিনে নিচ্ছেন যা গত মাসে ১ হাজার লেবু সাত হাজার টাকায় কিনতে হয়েছে। কর্মসংস্থান ব্যাংকের সাবেক জিএম জালাল উদ্দিন জানান অবসর জীবনে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হতে প্রথমে মৎস, মুরগী ও গরুর খামার করেন। মাল্টা চাষের সফলতা দেখে উদ্ভুদ্ব হয়ে তারা ৭ জন যৌথ ভাবে কৃষি বাগানটি গড়ে তোলেছেন। মাল্টা যেহেতু বছরে একবার ফলন আসে তাই কম সময়ে ফলনযোগ্য অর্থকরী ফসল লেবুর আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন তারা। লেবু বিক্রির টাকায় তাদের মাল্টা বাগানের খরচ হয়েও নিজেরা নিতে পারছেন। বাগানের আর একজন অংশিদার লোকমান হোসেন জানান মুলত কৃষির প্রতি আকুষ্ট হয়ে লেবু ও মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। বারোমাসি লেবু তাদের বাগান থেকে প্রতিদিন পাইকাররা এসে কিনে নেয়। আর মাল্টা গতবছর থেকে উৎপাদন শুরু হলেও এবার বাণিজ্যিক ভাবে বাজার জাত করনের লক্ষে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

বাগানের আরেক অংশিদার জানান, চলতি মৌসুমে মাল্টার ব্যাপক ফলন হয়েছে। এ বছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে বলে তারা আশাবাদী। মাল্টা চাষি ও বাগানের তত্বাবধানে থাকা সুরুজ মেম্বার ও মজিবুর রহমান জানান তারা নতুন করে আরও ৩টি বাগান করেছেন। এ পর্যন্ত ৬০ লক্ষ টাকা এই বাগানে মুলধন হিসেবে বিনিয়োগ করেছেন। সরকারি বা বেসরকারি কোন ঋন তারা এখনো গ্রহন করেননি। মাল্টা চাষি বাদল মিয়া জানান লেবু ও মাল্টা চাষে শুধু তারাই স্বাবলম্বী হচ্ছেন না, পাশাপাশি এই বাগানে কাজ করে এলাকার ৩০ জন শ্রমিক সংসারে স্বচ্ছলতা পেয়েছেন। প্রয়াস এগ্রোর সফলতা দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে শামীমের অন্য আরও পাঁচ বন্ধু নতুন ২ একর জমিতে মাল্টা বাগান ও চারা উৎপাদনের জন্য আলাদা নার্সারি করেছেন।

কাচিনা ইউনিয়নের উপ সহকারি কৃষি কর্মকর্তা আল আমিন জানান, লেবু ও মাল্টা কম খরচে বেশী উৎপাদনশীল অর্থকরী ফসল। ভালুকায় এটি উল্লেখযোগ্য কৃষি বাগান। তারা সার্বক্ষণিক তদারকি ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। চলতি বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এক একরের একটি মাল্টা বাগান দেয়া হয়েছে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই