বিস্তারিত বিষয়
হালুয়াঘাটে গুচ্ছ গ্রামের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই
হালুয়াঘাটে গুচ্ছ গ্রামের মানুষের বেঁচে থাকার লড়াই
[ভালুকা ডট কম : ২৩ মে]
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ২নং জুগলী ইউনিয়নে অবস্থিত চারটি গুচ্ছ গ্রামের পাঁচ শতাধিক মানুষের মাঝে প্রতিনিয়ত চলছে বাঁচার লড়াই। ভালো নেই কেউ। এদের জীবনযাত্রা অতীব দারিদ্র সীমার নিচে। বুধবার সকালে যাদুকুড়া আদর্শ গুচ্ছ গ্রাম, রনকুঠরা গুচ্ছ গ্রাম, জয়মঙ্গল গুচ্ছ গ্রাম ও সংড়া গুচ্ছ গ্রাম থেকে ঘুরে এসে জানা যায় এদের কষ্টের কথা।
সুত্রে জানা যায়, যাদুকুড়া গুছ গ্রামে ৩৫টি, রনকুঠরায় ২৫টি, জয়মঙ্গলে ৩০টি ও সংড়া গুচ্ছ গ্রামে রয়েছে ৪০টি পরিবার। মোট ১৩০টি পরিবারে সদস্য রয়েছে ৫ শতেরও উপরে। ২০-৩০ বছর যাবত বসবাস করে যাচ্ছেন এরা। এদের কোন আলাদা জায়গা জমি নেই। সরকারী খাস জমিতে বসবাস করেন তারা। এদের খবর কেউ রাখেনা।
যাদুকুড়া গুচ্ছ গ্রামের সদস্য আঃ সাত্তার বলেন, ৭০-৮০ বছর ধইরা এইখানেই থাহি। গুচ্ছ গ্রাম অইছে অনেক পরে। আমরা অনেক কষ্ট করে চলি। আমাদের খোঁজ কেউ রাখেনা, কেউ নেইনা। একই গুচ্ছ গ্রামের আহাম্মদ আলী (৫৫) বলেন, ২০-২৫ বছর যাবত এই গুচ্ছ গ্রাম অইছে। প্রতিবছর উপজেলা থেইকা ২০/২৫ কেজি মাছের পোনা দেই। এছাড়া একবার সরকার থেইকা প্রত্যেক পরিবারকে ৩টা কইরা হাঁস দিছিলো, পরে আর কিছুই দেয়নাই।আঃ জব্বার বলেন, অনেক বছর ধইরা এখানে থাকি। কখনো কিছুই পায়নায়।
যাদুকুড়া আদর্শ গুচ্ছ গ্রামের সভাপতি আমজাত আলী বলেন, ৩ একর ৭ কাঠা জায়গা নিয়ে এই গুচ্ছ গ্রাম। একটি পুকুর রয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবছর প্রতি সদস্য ২/৩ হাজার করে টাকা পায়। এই টাকা দিয়া কি চলে? তিনি বলেন, কত বছর আগে সরহার ঘর কইরা দিছিলো। ঐগুলা এহন ভাইংগা (ভেঙ্গে) গেছে। এহন আমরা দাবী জানায় যেনো আমাদের ঘরগুলা আবার কইরা দেয়।
রনকুঠরা গুচ্ছ গ্রামের সভভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, ঝড় তুফানে কতবার আমাদের ঘর ভাইংগা দিছে। পরে আর ঘর মেরামত করতে না পারায় অনেকেই গুচ্ছ গ্রাম ছাইরা ঢাহা (ঢাকা) চইলা গেছে। তিনি বলেন, সেই কবে ৯৪/৯৫ সালে একবার ঘর পাইছিলাম। কতবার আবেদন করছি টিনু (টিএনও) অফিসে। কিছুই দেয়নাই। ঐ যে বৃদ্ধ লোকগুলা পইরা আছে! কতই না কষ্ট কইরা ওরা চলে। কেউ আমাদের খোঁজ নেইনা।
জয়মঙ্গল গুচ্ছ গ্রামের সভাপতি নুরুল (৭৫) বলেন, আমরা কোনমতে টুকটাক কাম কইরা খায়। আমাদের দিন চলেনা। অনেকেই অচল হইয়া ঘরে পইরা আছে। ঘর দরজা ভাইংগা গেছে। আমাদের ঘর যেনো সরহার ঠিক কইরা দেই এই দাবী জানাই সরহারের কাছে। এভাবেই চারটি গুচ্ছগ্রামের অসহায় মানুষগুলো তাদের জীবন সংগ্রামের কথাগুলো এই প্রতিবেদকের কাছে ব্যাক্ত করেন। তদের দাবী একটাই, যেনো সরকারীভাবে পুনরায় ভেঙ্গে যাওয়া ঘরগুলো মেরামত করে দেয়।#
সতর্কীকরণ
সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।