তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ মাল্টা

ভালুকায় গাছে গাছে ঝুলছে সবুজ মাল্টা
[ভালুকা ডট কম : ২১ আগস্ট]
ছোট ছোট গাছে ঝুলছে থোকা থোকা সবুজ মাল্টা ও লেবু। কোনো গাছে ৭০টি কোনো গাছে একশর উপরেও ধরেছে মাল্টা। গাঢ় সবুজ রঙের মাল্টাগুলোর কোনো কোনোটিতে হলুদাভ ভাব এসেছে। ৮ হাজার ৫০ গাছের বাগানে ঢুকতেই মাল্টা ও লেবুর শোভা দেখে মন ভরে যায়। কেবল শোভা নয় এই বাগানের মাল্টা স্বাদেও বেশ মিষ্টি।

তিন বছর আগে ভালুকা উপজেলার কাদিগড় গ্রামের আট একর জায়গা লিজ নিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে লেবু, মাল্টার চাষ শুরু করেন সাত জন ব্যক্তি।বাগানের সাত মালিকের একজন জালাল উদ্দিন। তিনি এক সময় চাকরি করতেন কর্মসংস্থান ব্যাংকে। মূলত তাঁর উদ্যোগের সঙ্গী হয়েই আরও ছয়জন মিলে বাগানটি করেছেন তাঁরা।

সম্প্রতি মাল্টা ও লেবুর বাগানে গিয়ে দেখা যায়, চার পাশে প্লাস্টিকের ঝাল দিয়ে ঘেড়া বাগানের গাছে গাছে ঝুলছে থোকা থোকা সবুজ মাল্টা। তিনটি গাছের মাল্টা গণনা করে দেখা যায় প্রতিটিতেই একশর উপরে মাল্টা রয়েছে। আর বিক্রির জন্য গাছ থেকে লেবু উঠাচ্ছেন দুই জন শ্রমিক।

সেখানে কথা হয় জালাল উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, এক সময় তিনি ছিলেন ব্যাংক কর্মকর্তা এখন কৃষি উদ্যোগক্তা। চাকরিতে থাকা অবস্থায় ১৯৯৬ সনে পত্রিকায় এক প্রতিবেদন দেখে পাঙ্গাশ মাছের চাষ শুরু করেন। ওই বছর মাছ চাষ করে বিক্রির পর লাভ হয় প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। কিন্তু চাকরির কারণে ব্যবসায় সময় দিতে না পারায় মাছের ব্যবসা বেশি দিন ধরে রাখতে পারেননি।

২০১৬ সালে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ইচ্ছা জাগে মাল্টা চাষের। কিন্তু তিনি থাকেন রাজধানীতে আর গ্রামেও বাগান করার মত তাঁর নিজস্ব জায়গা নেই। পরবর্তিতে মাল্টি ন্যাশনাল কম্পানীর ব্যবস্থাপক মোশারফ হোসেন ও চারজন আইটি প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম শামিম, শরীফ,কাজল ও বাদল এবং স্থানীয় মজিবর রহমানকে নিয়ে ২০১৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলার কাগিগড় গ্রামে আট একর জায়গা ১৫ বছরের জন্য লিজ নিয়ে গড়ে তোলেন মাল্টা ও লেবুর বাগান। প্রতি একর জমির ভাড়া দিতে হয় বছরে আট হাজার টাকা। বর্তমানে তাদের চৌদ্দ একর জমিতে পঁচিশশ পঞ্চাশটি মাল্টা এবং সাড়ে পাঁচ হাজার লেবুর গাছ রয়েছে। এ বছর মাল্টা বাগানের পাশেই আড়াই একর জমির একটি পুকুর কিনেছেন। আগামী মৌসুম থেকে সেখানে বাণিজ্যিক মাছ চাষ শুরু করবেন তাঁরা।

মাল্টা ও লেবু গাছের পরিচর্যার বিষয়ে মজিবর রহমান বলেন, চারা রোপণের আগে জমিতে প্রথমে গর্ত করা হয়েছে। এরপর প্রতিটি গর্তে ২০ কেজি গোবর, ২০০ গ্রাম পটাশ, ৪০০ গ্রাম টিএসপি, ২০০ গ্রাম চুন এবং ২০ থেকে ২৫ কেজি মাটি মিশিয়েছেন। ১৫-২০ দিন পর গর্তে বারি মাল্টা-১ জাতের মাল্টার চারা এবং লেবুর বাগানের জন্য নির্ধারিত স্থানে সীডলেস জাতের লেবুর চারা রোপণ করেছেন। এরপর সাত মাসের মধ্যেই ৭০-৮০ শতাংশ গাছে মাল্টা ধরেছে। এখন বছরে তিন বার করে একেকটি গাছে অনুমান ১৫ কেজি পুরাতন গোবর, ২০০ গ্রাম টিএসপি,১০০ গ্রাম পটাশ ৫০ গ্রাম ইউরিয়া সার প্রয়োগ করেন। মাল্টা গাছে মাসে দুইবার করে এবং লেবু গাছে দুই মাস পরপর ছত্রাক নাশক স্প্রে করেন।

গত তিন বছরের বাগানের আয়-ব্যয়ের বিষয়ে মাজহারুল ইসলাম শামিম বলেন, এ পর্যন্ত তাদের ষাট লাখ ব্যয় হয়েছে। গত দুই বছরে দুই বছরে বিশ লাখ টাকার মাল্টা ও লেবু বিক্রি করেছেন। এ বছর লেবু বিক্রি করেছেন ১২ লাখ টাকা এবং বর্তমান বাজার মূল্যে আরও ১০ টাকার লেবু রয়েছে বাগানে। মাল্টা এখনো পরিপক্ক হয়নি। ফলন দেখে তাদের প্রত্যাশা,গতবারের ন্যায় বাজার পেলে এ বছর ২২-২৩ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি হবে। অর্থাৎ এ বছর থেকেই বাগানের সম্পর্ণ খরচ উঠে গিয়ে লাভের মুখ দেখতে শুরু করবেন। লেবু ও মাল্টার বিক্রির পাশাপাশি গাছ থেকে কলমের মাধ্যমে চারা তৈরি করে বিক্রি করা হয়।

এ বিষয়ে ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নারগিস আক্তার বলেন, কাদিগড়ের ওই বাগানটি উপজেলায় সবচেয়ে বড়। বাগানের পরিচর্যায় নিয়মিত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। মানুষের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য এ রকম বড় বড় ফলের বাগান আরও প্রয়োজন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই