তারিখ : ২৮ মার্চ ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

সংগীতকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চান ওস্তাদ আব্দুল মান্নান

সংগীতকে নিয়ে বেঁচে থাকতে চান ওস্তাদ আব্দুল মান্নান
[ভালুকা ডট কম : ০২ নভেম্বর]
নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের মঙ্গলপাড়া গ্রামের প্রয়াত সংগীত শিল্পী তাজিম উদ্দিনের ছেলে ওস্তাদ আব্দুল মান্নান। আব্দুল মান্নান ১৯৬১সালের ডিসেম্বরের ২০তারিখে এক সংগীত প্রেমী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। এরপর বাবার কাছেই সংগীত জগতে প্রবেশের হাতে খড়ি হয় তার। বাবাও একজন সংগীত শিল্পী হওয়ার কারণে ছেলেকে সংগীত জগতের একজন পুরোদস্তুর শিল্পী হিসেবে গড়ে তোলার চেস্টা করেছেন।

আব্দুল মান্নান প্রথমে ১৯৭৬সালে রাজশাহী বেতারে শিল্পী হিসেবে সুযোগ পেলেও পারিবারিক সমস্যার কারণে পেশাদার শিল্পী হিসেবে গান গাওয়া সম্ভব হয়ে ওঠেনি। এরপর ১৯৮০সালে রাণীনগর উপজেলা পরিষদ সৃষ্টি হলে সেখানে সাংস্কৃতিক সংস্থায় যোগ দেন এবং এই অঞ্চলে সুস্থ্যধারার সংগীত চর্চাকে ছড়িয়ে দিতে মনোনিবেশ করেন। গজল, রবীন্দ্র, নজরুল সংগীত ও আধুনিক গানসহ সংগীতের সকল শাখায় আব্দুল মান্নানের জুড়ি মেলা ভার। পরবর্তিতে ২০০৫সালে উপজেলা শিল্পকলা একাডেমী সৃষ্টি হলে সেখানে তিনি প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং এখন পর্যন্ত তিনি এই প্রতিষ্ঠানে সংগীত প্রশিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। শিল্পকলা একাডেমী থেকে ওস্তাদ আব্দুল মান্নানের হাতে সংগীত জগতে হাতে খড়ি পেয়েছে এই অঞ্চলের অনেকে। চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজের শিশু শিল্পী প্রীতি আব্দুল মান্নানের হাতে গড়ে ওঠা এক জ্বলন্ত উদাহরন। আব্দুল মান্নানকে ৪কন্যা সন্তানসহ তার পরিবারের মোট ৭জন সদস্যের ভোরনপোষন করতে হয়।

২০১৪সালে ব্রেইন স্ট্রোক করার কারণে তার বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় এবং কথা অস্পষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে এই গুনী শিল্পী এখন আর তেমন আগের মতো গান গাইতে পারেন না। অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে সাধ্যমতো চিকিৎসা করেছেন। কিন্তু অর্থের অভাবে যথাযথ চিকিৎসা করতে পারেননি। এরপর থেকে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে ওস্তাদ আব্দুল মান্নানের জীবন চাকা। বিশেজ্ঞ চিকিৎকদের পরামর্শ অনুযায়ী আব্দুল মান্নান যদি ভারতে উন্নত চিকিৎসা নিতে পারেন তাহলে তিনি অনেকটাই আগের জীবনে ফিরে আসতে পারবেন এবং তার কথা স্পষ্ট হতে পারে। সেই সঙ্গে তিনি আগের মতো করে গান গাইতে পারবেন। কিন্তু অর্থের অভাবের কারণে বিদেশে চিকিৎসা নেয়া আব্দুল মান্নানের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।

ওস্তাদ আব্দুল মান্নান জানান প্রায়ত সাংসদ ইসরাফিল আলমের সুপারিশ নিয়ে তিনি সরকারের আর্থিক সহযোগিতা পাওয়ার আশায় সংস্কৃতি মন্ত্রনালয় বরাবর লিখিত আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসন বরাবর অনেকবার আবেদন করেছেন তাতেও কোন লাভ হয়নি। বর্তমানে তিনি সরকার ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে চিকিৎসা করে সুস্থ্য হয়ে ফিরে আসতে চান সংগীত জগতে। আবার তিনি গজল, ক্লাসিক ও আধুনিক গান গেয়ে দর্শকদের মাতিয়ে রাখতে চান। (সহযোগিতা প্রদানের জন্য যোগাযোগ করতে আব্দুল মান্নানের মুঠোফোন নম্বর: ০১৭৩৬-৪১৫৬২৬)

উপজেলা শিল্পকলা একাডেমীর সাধারন সম্পাদক ও যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা আশিষ কুমার ঘোষ বলেন এই সব গুনী মানুষদের জন্য সকলের উচিত সাধ্যমতো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া। ওস্তাদ আব্দুল মান্নান আমার জীবনে দেখা সংগীত জগতের একজন দক্ষ গুনী শিল্পী। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতা ওনাকে বেশি দূর এগোতে দেয়নি। কিন্তু একজন মানুষ যদি ওনার কন্ঠে একটি গান শোনেন বার বার তা শুনতে চাইবেন। শিল্পকলা একাডেমীর নিজস্ব কোন তহবিল না থাকায় ওস্তাদের চিকিৎসার জন্য বেশি কিছু করার সামর্থ প্রতিষ্ঠানের নেই। যদি সরকার এবং সমাজের বিত্তবানরা এই গুনী মানুষটির জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তাহলে আমি মনে করি ওস্তাদ আবার তার পূর্বের জীবনে ফিরে আসতে পারবেন আর শ্রোতারা নতুন করে মেধাবী এই শিল্পীর কন্ঠের যাদুতে বিমোহিত হয়ে উঠবেন এবং এই অঞ্চলের ছেলে-মেয়েরা ওস্তাদের কাছ থেকে সংগীতের আরো কিছু শেখার সুযোগ পাবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পাঠক মতামত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই