তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বয়স গোপন করে দলিল লেখকের লাইসেন্স নেওয়ার ঘটনা ফাঁস

বয়স গোপন করে দলিল লেখকের লাইসেন্স নেওয়ার ঘটনা ফাঁস
[ভালুকা ডট কম : ২৪ নভেম্বর]
নওগাঁর রাণীনগরে বয়স না হলেও জন্ম তারিখ গোপন করে দলিল লেখকের সনদপত্র নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক সাংবাদিক পরিচয়ধারীর বিরুদ্ধে। প্রায় সাড়ে ৬বছর পর ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি অনেকের জানা থাকলেও সাংবাদিক পরিচয় প্রচার করায় কেউ মুখ খোলার সাহস পায়নি বলেও অভিযোগ উঠেছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নওগাঁ জেলা রেজিস্ট্রারের নিকট লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কাটরাশইন গ্রামের অজিত চন্দ্রের ছেলে সুকুমল কুমার জন্ম  তারিখ জালিয়াতির মাধ্যমে দলিল লেখকের লাইসেন্স নেওয়ার প্রায় সাড়ে ৬ বছর পর বিষয়টি ফাঁস হয়ে পড়ায় রাণীনগর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নিবন্ধন অধিদপ্তরের মহা-পরির্দশক মো: মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত ২০০৩ সালের ৩১ মে’র প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী দলিল লেখার লাইসেন্স পাওয়ার  নূন্যতম যোগ্যতা এসএসসি পাশ এবং প্রার্থীর বয়স ২১বছর হতে হবে।

কিন্তু সুকুমল কুমার প্রাং নামের এই ব্যক্তি উপজেলার মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১২সালে এসএসসি পাশ করে ২০১৪সালে দলিল লেখকের লাইসেন্স অর্জন করে। পাশের সনদ অনুযায়ী তার জন্ম তারিখ ৭অক্টোবর ১৯৯৭। পরে ২০১৪ সালের আগষ্ট ৮তারিখে (স্মারক নং নিপ/৩০২৩) অনুযায়ী তৎকালীন নওগাঁ জেলা রেজিস্ট্রার (২০১৪সালের এপ্রিল মাসের ২৪ইং তারিখে) মাত্র ১৬বছর ৬মাস ১৭দিন বয়সের  অপ্রাপ্ত বয়স্ক সুকুমল কুমার প্রামাণিকের নামে প্রজ্ঞাপন বর্হিভ’ত দলিল লেখার লাইসেন্স (নং-১১৫) দেন। কিন্তু এটি কিভাবে সম্ভব হয়েছে তা নিয়েই প্রশ্ন দেখাদিয়েছে ?

এছাড়াও সুকুমল কুমার প্রামাণিকের ২টি জন্ম  তারিখ নিয়েও গভীর রহস্যের রয়েছে বলে সচেতন মহল প্রশ্ন তুলেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্ম তারিখ ১৯৯১ সালের ৭অক্টোবর হলেও এসএসসি পাশের সনদে জন্ম তারিখ ১৯৯৭ সালের ৭ অক্টোবর । যা একটির সঙ্গে অপরটির মিল নেই এবং সাংঘর্ষিক।

অনেক আগেই জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে কানাকানি হলেও সুধীমহল, দলিল লেখক সমিতিসহ বিভিন্ন সরকারী ও বে-সসরকারী অফিসে-আদালতে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে দাপট দেখানোর কারণে অনেকেই ভয়ে মুখখোলেনি বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভ’ক্তভুগি অভিযোগ করেছে। প্রসঙ্গত: শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জালিয়াতি করার অপরাধে মিরাজুল ইসলাম, এরশাদ আলী, ইলিয়াস কাঞ্চন, সাদেকুল ইসলাম, আব্দুল মতিন ও রুহুল আমিনের দলিল লেখার লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

মধুপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর বলেন সুকুমল আমার বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলো। সে আমার বিদ্যালয় থেকে ২০১২সালে জিপিএ ২.৬৩পয়েন্ট নিয়ে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পাশ করেছে।

সুকুমল কুমার প্রামাণিক মুঠোফোনে জানান সেই সময় লাইনঘাট করে আমিও সনদপত্র নিয়েছিলাম। তবে দলিল লেখকের সনদপত্র নেওয়ার জন্য কত বয়স লাগে তা আমার জানা ছিলো না। পরবর্তি সময়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও যখন আমাকে দলিল লেখক হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে কাজ করার সুযোগ না দেওয়ার কারণে আমি চলতি বছরে দলিল লেখকের সনদপত্রটি কর্তৃপক্ষের কাছে সমর্পন করেছি।

রাণীনগর উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সাধারন সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন সুকুমলের এই ভ’য়া লাইসেন্সের সত্যতা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে চলতি মাসের ১৫তারিখে কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন দেওয়া হয়। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তার লাইসেন্স বাতিল মর্মে আদেশ জারি করেছে।

জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুস সালাম বলেন প্রজ্ঞাপন অনুসারে একুশ বছরের নিচে কেউ দলিল লেখকের সদনপত্র পেতে পারে না। তবে যদি কেউ পেয়ে থাকে সেটা কিভাবে সম্ভব তা আমার জানার বাহিরে। তবে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে সুকুমলের লাইসেন্স বাতিল করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও জমিজমা সংক্রান্ত এমন গুরুত্বপূর্ন বিভাগে স্বচ্ছতা ফিরে আনতে চাইলে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়কে আরো কঠোর হতে হবে। যারা এই দলিল লেখকের মতো গুরুত্বপূর্ন বিভাগে অবৈধ ভাবে সনদপত্র নিয়ে কাজ করে আসছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই