তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলে ঐতিহ্যবাহী লাঠি ও ঢেঁকি খেলা

নওগাঁয় অনুষ্ঠিত হয়ে গেলে ঐতিহ্যবাহী লাঠি ও ঢেঁকি খেলা
বিলুপ্ত প্রায় গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যবাহী খেলাগুলো ধরে রাখতে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি স্থানীয়দের
[ভালুকা ডট কম : ১৪ মার্চ]
বাংলাদেশের একটি সুপরিচিত সংস্কৃতি লাঠি খেলা। নানা রকমের কিষ্ট্রি-ক্যালচারে ভরা আমাদের এই দেশ। অঞ্চল ভেদে রয়েছে নানা রকমের খেলাধূলা। কিন্তু কালের বির্বতনে ও পৃষ্ঠপোষকতা ও আয়োজনের অভাবে দিন দিন এই সব ঐতিহ্যবাহী খেলাধূলাগুলো আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে। লাঠি ও ঢেঁকি খেলা তেমনি এক ঐতিহ্যবাহী গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া খেলা। লাঠির নানা কলা-কৌশলে একে অপরকে ঘায়েল করার কৌশলই হচ্ছে এই খেলার প্রধান উপজিব্য।

নওগাঁয় আত্রাইয়ের প্রত্যন্ত এলাকায় মারিয়া গ্রামে আয়োজন করা হয়েছিলো গ্রাম বাংলার বিলুপ্ত প্রায় লাঠি ও ঢেঁকি খেলাসহ বিভিন্ন খেলার। শনিবার বিকেলে মারিয়া গ্রামের খেলার মাঠ না থাকায় একটি জমিতে এ খেলার আয়োজন করা হয়। খেলা দেখতে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধসহ হাজারো দর্শক আসেন। প্রায় বিলুপ্ত গ্রাম বাংলার এ খেলাগুলো বেশি করে আয়োজনে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার দাবি জানানো হয়েছে।

এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: আনোয়ার হোসেন হেলাল। আত্রাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবাদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইখতেখারুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ দত্ত দুলাল, সাধারণ সম্পাদক আক্কাস আলী প্রমূখ।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার মারিয়ে গ্রামে স্থানীয় একটি এনজিও’র আয়োজনে গত ৮বছর থেকে গ্রাম বাংলা থেকে প্রায় বিলুপ্তি খেলা লাঠি, ঢেঁকি, শরীরের উপর একাধিক ব্যক্তি উঠে দাঁড়ানো, খেঁজুর গাছে উঠা, কলসি ভর্তি পানি দাঁত দিয়ে তোলাসহ বিভিন্ন খেলার আয়োজন করা হয়। গ্রামে খেলার মাঠ না থাকায় গ্রামের গ্রামের একটি জমিতে এর আয়োজন করা হয়। স্থানীয় লাঠিয়ালরা লাঠি খেলায় অংশগ্রহণ করতে দুপূরে আসেন গ্রামে। এ সময় বাদ্যযন্ত্রের তালে তালে খেলোয়ারা শারীরিক কসরত দেখাতে শুরু করেন লাঠিয়ালরা। তাদের লাঠি খেলাসহ অন্যান্য খেলা দেখতে মারিয়া গ্রামে আসেন হাজারো দর্শক। শিশু, নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ, পরিবার-পরিজন নিয়ে গোল হয়ে উপভোগ করেন গ্রাম বাংলার এই খেলাগুলো। দর্শক মরিয়ম বেগম জানান, আমরা এই খেলাগুলো ভুলে গিয়েছিলাম। খুব ভালো লেগেছে।

খেলায় অংশ নেওয়া লাঠিয়াল আমজাদ হোসেন, কবির শেখসসহ অন্যরা জানান, বংশ পরম্পায় এই ঐহিত্যবাহী খেলাগুলো শিখেছেন। এই খেলাগুলো ধরে রাখতে তাদের নতুন প্রজন্মেদের শিখিয়েছেন।স্থানীয় প্রবীন শিক্ষক সিদ্দিকুর রহমান জানান, আগে এই খেলাগুলো প্রতি বছর বিভিন্ন গ্রামে অনুষ্ঠিত হতো। গ্রাম বাংলা থেকে প্রায় বিলুপ্তি এই খেলাগুলো আরো বেশি করে আয়োজন করা হলে সমাজে বিভিন্ন ধরনের অপরাধ প্রবণতা কমার পাশাপাশি বাঙ্গালিদের মধ্যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠার আশা ব্যক্ত করে সচেতন মহল।

সচেতন মহল মনে করছেন, দেশে মাদক, দূর্নীতি, সন্ত্রাস, বাল্য বিবাহ, কুসংষ্কার মুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে প্রায় বিলুপ্ত গ্রাম বাংলার এ খেলাগুলো বেশি করে আয়োজনে সরকারি ও বে-সরকারি ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা প্রয়োজন। 

মারিয়া গ্রামে পূর্ণিমা পল্লী উন্নয়ন সংস্থার পরিচালক এস এম হাসান সেন্টু জানান, সমাজের বৃত্তবান ও সরকারের বিভিন্ন দপ্তর এগিয়ে এলে গ্রাম বাংলার প্রায় বিলুপ্ত হওয়া এই খেলাগুলো আরো বেশি করে আয়োজন করা সম্ভব। তা না হলে আগামী প্রজন্মরা আধুনিক প্রযুক্তির মাঝে এই সব খেলাগুলোকে হারিয়ে ফেলবে চিরতরে।

নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মো: আনোয়ার হোসেন হেলাল বলেন সরকার দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি ও খেলাধূলাকে পুনরায় নতুন প্রজন্মের কাছে নতুন করে তুলে ধরার নানা পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করছেন। এই গ্রামীণ খেলাগুলো ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে সকল সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করছি। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

খেলাধুলা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই