তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটিতে চাষ হচ্ছে বলসুন্দরী বড়ই

নওগাঁর ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটিতে চাষ হচ্ছে নতুন চমক বলসুন্দরী বড়ই, আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন অনেকেই
[ভালুকা ডট কম : ১৫ মার্চ]
নওগাঁর ঠাঁ ঠাঁ বরেন্দ্র অঞ্চল হচ্ছে সাপাহার, ধামইরহাট, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলা উপজেলা। এক সময় পানির অভাবে এই সব অঞ্চলে সারা বছর একটি মাত্র ধান চাষ করা হতো অনেক কষ্টে। কিন্তু বর্তমানে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ছোঁয়াই এই অঞ্চলের মাটিতে বর্তমানে সোনার চেয়েও দামী হরেক রকমের ফসলের চাষ করা হচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে বলসুন্দরী বরই নতুন চমকের সৃষ্টি করেছে।

জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল সাপাহার উপজেলায় স্বল্পসময়ে অধিক মুনাফা আয়ের জন্য সুমিষ্ট ফল বলসুন্দরী বড়ই কৃষকের ভাগ্য উন্নয়নে নতুন চমক সৃষ্টি করেছে। এই বড়ই উৎপাদনে জেলার শ্রেষ্ঠ চাষী হিসেবে ইতিমধ্যেই সুনাম কুড়িয়েছেন সাখোয়াত হোসেন নামে এক যুবক। বর্তমানে তার ১১২বিঘা জমিতে উৎপাদিত হচ্ছে বিষমুক্ত, সুস্বাদু ও সুমিষ্ট বলসুন্দরী বড়ই। কুল বড়ই, রাজ বড়ই, কাশমিরী বড়ই থেকে অধিক সুমিষ্ট হওয়ায় ইতিমধ্যেই নতুন জাতের বল সুন্দরী বড়ই বাজার দখল করে নিয়েছে। বর্তমানে এই অঞ্চলে সবচেয়ে সুস্বাদু হওয়ায় বলসুন্দরী বেশী চাষ হচ্ছে। সাখোয়াত তার বাগান থেকে এপর্যন্ত ৪৫লাখ টাকার বলসুন্দরী বিক্রি করেছেন। আরো প্রায় ৪০লাখ টাকার বিক্রি করবেন এমন আশা তার। আর কৃষি বিভাগ সাখোয়াতসহ জেলার সকল বরই চাষীদের সার্বিকভাবে সহযোগীতা করছেন।

বলসুন্দরী বড়ই চাষী সাখোয়াত হোসেন বলেন বেকারত্ব থেকে মুক্তির আশায় বাড়ির পার্শ্বের এক সহকর্মীর কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে নতুন জাতের বলসুন্দরী বড়ই চাষ করে নিজেকে স্বাবলম্বী করার স্বপ্ন থেকে শুরু করেন বড়ই চাষ। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বরই এর চারা নিয়ে আসেন ২০২০ সালে। প্রতি বিঘা জমি ১৯০০০টাকায় মোট ১১২বিঘা জমি লিজ নিয়ে শুরু করেন বড়ই চাষ। এরপর থেকে আর তাকে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অল্প সময়ে আর্থিক ভাবে লাভবান হতে চাইলে বলসুন্দরী বড়ইয়ের মতো অধিক লাভজনক ফসল চাষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। তাই শিক্ষা জীবন শেষ করে চাকরী নামক সোনার হরিণের পেছনে না ছুটে বেকার যুবকরা এমন উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারেন। এতে করে নিজে যেমন আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হওয়া যায় তেমনি স্থানীয় অনেক বেকার মানুষের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রও সৃষ্টি হয়।

বাগানের কর্মচারী হালিম, জব্বারসহ অনেকেই বলেন এই বাগানে কীটনাশক ছাড়াই প্রাকৃতিক ভাবে বিষমুক্ত বলসুন্দরী বড়ই চাষ করা হচ্ছে। বড়ইটি অত্যন্ত সুস্বাদু ও সুমিষ্ট হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও বাগানে কর্মসংস্থান হয়েছে শতাধিক বেকার মানুষের। সাখোয়াতের এমন বড়ই বিপ্লব দেখে আশেপাশের অনেক মানুষই অনুপ্রাণিত হয়ে শুরু করছেন বলসুন্দরী বড়ই চাষ।

জেলার মান্দা উপজেলার বাসিন্দা কাজী কামাল হোসেনসহ অনেকেই বলেন বাজার থেকে সুস্বাদু ও মিষ্ট বলসুন্দরী বড়ই কিনে খাওয়ার পর বাগান দেখার লোভ হলো। তাই সাপাহার উপজেলার সাখোয়াত ভাইয়ের বলসুন্দরী বড়ই বাগান দেখতে এসেছি। এতো বড় বাগান মনে হয় দেশের আর কোথাও নেই। ছোট ছোট গাছ কিন্তু পাতার চেয়েও বেশি সুন্দর সুন্দর বড়ই ঝুলে আছে ডালে ডালে। আমিও এমন একটি বাগান সৃজন করার ইচ্ছে পোষন করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল ওয়াদুদ বলেন বলসুন্দরী বড়ই অত্যন্ত সুমিষ্ট ও স্বুসাদু হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি। দামও ভালো। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি বলসুন্দরী বড়ই ৮০-১০০টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। সাখোয়াতসহ বলসুন্দরী বড়ই চাষীদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক ভাবে সহযোগীতা করা হচ্ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলে বলসুন্দরী বড়ই চাষ কৃষিখাতে একটি নতুন সম্ভাবনাময় অর্থনৈতিক দ্বার উন্মোচন করবে বলে আশাবাদি এই কৃষি কর্মকর্তা। এছাড়াও অন্যরা যদি এই বড়ইয়ের বাগান তৈরি করতে চান তাদেরকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই