তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় আমনের চারা রোপনে ব্যস্ত কৃষক

ভালুকায় কঠোর লক ডাউন উপেক্ষা করে আমনের চারা রোপনে ব্যস্ত কৃষক
[ভালুকা ডট কম : ২৭ জুলাই]
বৈষ্যিক মহামারি নিয়ন্ত্রনে সরকার ঘোষিত ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন চললেও ভালুকার বিভিন্ন গ্রামে নানা প্রতিকুলতার মাঝেও শুরু হয়েছে কৃষক পরিবারের সারা বছরের খাবার প্রধান ফসল আমন ধান রোপনের কাজ। লক ডাউনের কারনে অনেক স্থানে শ্রমিক সংকটে আমন ধানের চারা রোপনে কৃষকরা হিমসিম খাচ্ছেন। সময় মত চারা রোপন করতে না পারলে ভাল ফলন পাওয়া যাবেনা।

২৬ জুলাই সোমবার দুপুরে উপজেলার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের বর্তা গ্রামে গেলে চোখে পরে দোসর কাদা মাটিতে সবুজ ধানের গোছা পুঁতে চলেছে একদল শ্রমিক। ওই  গ্রামের কৃষক রমজান আলীর জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করছেন কয়েকজন স্থানীয় আদিবাসী শ্রমিক। সর্ব কনিষ্ট শ্রমিক রতন বর্মণ (১৯) জানান তিনি এস এস সি পাস করার পর আর্থিক অনটনে আর লেখাপড়া করতে পারেননি। সংসার চালাতে স্থানীয় একটি ফ্যাক্টরীতে অল্প বেতনে শ্রমিকের কাজ শুরু করেন। লকডাউনের কারনে ফ্যক্টরী বন্ধ থাকায় মা-বাবার খাবার যোগাতে এখন প্রতিবেশীদের সাথে কৃষি শ্রমিকের কাজ করছেন। শ্রমিক বিশ্বনাথ বর্মণ (৬০) জানান তার স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে ৫ জনের সংসার। তারা করোনা ও সরকার ঘোষিত লকডাউনের কথা শোনেছেন কিন্তু কাজ না করলে ছেলে মেয়েদের খাওয়াবেনকি ? কেননা এ পর্যন্ত তারা কারও কাছ থেকে কোন সাহায্য ও সহযোগিতা পাননি বেঁচে থাকতে হলে কাজই তাদের একমাত্র ভরসা। যতক্ষন দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণ ঘরে খাবার আসে। একই কথা জানান জয় মোহন বর্মণ, অনিল বর্মণ সহ ধান রোপনে ব্যস্ত শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার সারাদিনে তারা ৯ জন শ্রমিক মিলে ওই কৃষকের ১১ কাঠা জমিতে আমন ধানের চারা রোপন কাজ সম্পন্ন করবেন। বিশ্বনাথ বর্মণ জানান প্রতি কাঠা জমি রোপন ৩৫০ টাকা চুক্তিতে ১১ কাঠা জমি রোপন করে তারা মজুরী পাবেন ৩ হাজার ৮৫০ টাকা যা ৯ জন শ্রমিক সমহারে বন্টন করে  একেক জন পাবে ৪২৭ টাকা করে। যা দিয়ে তারা পরিবারের খাবার সহ বিভিন্ন চাহিদা পুরন করতে সক্ষম হবে।

কৃষক রমজান আলী জানান আমন ধান রোপনের এটি উপযুক্ত সময়। এ সময় ধানের চারা লাগাতে না পারলে ফসলের ফলন ভাল হবেনা। তিনি মোট ১৩ কাঠা জমিতে কৃষি বিভাগের নতুন উদ্ভাবিত রণজিৎ জাতের উচ্চ ফলনশীল আমন ধানের চারা লাগাচ্ছেন। ১৩ কাঠা জমি চাষ করা হতে চারা রোপন পর্যন্ত তিনি ১৪ হাজার ৩০০ টাকার মত খরচ করেছেন। পরবর্তীতে সার ও কীটনাশক  বাবদ আরও কিছু টাকা খরচ হবে। তিনি জানান ওইযে লালন কয় সময় গেলে সাধন হবেনা, তেমনি সময়ের ফসল সময়ে না রোইলে ঘরের গোলায় ধান তো উঠবেনা, ছেলে মেয়ের মুখে খাবার জুটবেনা। তিনি জানান শ্রাবণ মাস আমন ধান রোপনের সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। মহামারি করোনার কারনে সরকার ঘোষিত লকডাউনের কারনে শ্রমিক পাওয়া যায়না। স্থানীয় কয়েকজন আদিবাসী শ্রমিক পেয়েছেন বলে জমিতে চারা রোপন করতে পেরে নিশ্চিন্ত হয়েছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন জাহান  জানান চলতি মৌসুমে আমনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৯ হাজার ৫৯৫ হেক্টর, উফসি ১৭ হাজার ২৯৫ হেক্টর, হাইব্রিড ৫৫০ ও স্থানীয়জাত ১ হাজার ৭৫০ হেক্টর। চলতি মৌসুমে আমন ধান আবাদের জন্য কৃষকদের সরকারী প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। এছারা কৃষকদের প্রযুক্তিগত বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। তবে চারা রোপনে শ্রমিক সংকটের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত তিনি কোন অভিযোগ পাননি।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই