তারিখ : ২৯ মার্চ ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শ্রীপুরে খাস পুকুর পাড় দখল করে মার্কেট নির্মাণ

শ্রীপুরে খাস পুকুর পাড় দখল করে মার্কেট নির্মাণ
[ভালুকা ডট কম : ২২ আগস্ট]
গাজীপুরের শ্রীপুরের মুলাইদ এলাকায় সরকারী খাস পুকুর পাড় দখল করে মার্কেট গড়ে তুলেছেন স্থানীয়রা। এসব মার্কেটের দোকান ঘর থেকে জামানত গ্রহন করে মাসে লাখ টাকা ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বছর জুড়ে  স্থানীয়দের দখলের কারণে ধীরে ধীরে পুকুরের অধিকাংশই ভরাট হয়ে গেলেও  কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ নোটিশ করেই নিজেদের দায় পালন করছেন।

ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের মুলাইদ মৌজার ১নং খতিয়ানভুক্ত এসএ ৯ আর এস ১২ দাগের ১একর ৯৩ শতাংশ জমির সরকারী খাস পুকুর।  এছাড়াও ১নং খতিয়ান ভুক্ত পুকুর পাড়ে এসএ ৮ ও আর এস ১১দাগে জমি রয়েছে ১একর ৬৯শতাংশ। স্থানীয়ভাবে পুকুরটি বাওয়া পুকুর নামে পরিচিত। একসময় পুকুরটি এলাকার গ্রামীণ অর্থনীতিতে ব্যাপক অবদান রাখলেও বর্তমানে শিল্পায়ণের যুগেও  গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা ছিল। স্থানীয় বাজার মূল্যে সরকারী এই পুকুর ও এর পাড়ের ৩একর ৬২শতাংশ জমির বর্তমান মৌজাওয়ারী সরকারী বাজারমূল্য প্রায় ১১ কোটি টাকা। ভূমি অফিসের হিসেবে পুকুর পাড়ের অবৈধ দখলদারের সংখ্যা ৩৪জন।  দখলের কারনে বর্তমানে সরকারী এ সম্পত্তি বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, মুলাইদ গ্রামের এই পুকুরটি নানা কারনে অর্থনৈতিক গুরুত্ব ছিল। ২০১০ সালের পর এলাকায় শিল্পায়ন হলে বাড়ী ভাড়ার চাহিদা তৈরী হয়। এরই কারনে মূলত স্থানীয়দের দৃষ্টি কাড়ে সরকারী এই সম্পত্তি। বিভিন্ন সময় ভূমি কর্মকর্তাদের যোগসাজসে পুকুর পাড়ের অধিকাংশ ভূমি দখল করে ঘর বাড়ী ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়। দোকান ঘর থেকে মোটা অংকের জামানত গ্রহন করে যেমন লাখ টাকা ভাড়া আদায় করা হয় তেমনি সরকারী জমিতে বাসা ভাড়া দিয়েও লাখ টাকা ভাড়া আদায় করে স্থানীয়রা। পুকুর পাড়ের জমি গিলে এখন মাটি বালি দিয়ে পুকুর ভরাট করে বাড়ী ঘর নির্মানের দৃষ্টি পড়েছে অনেকের।

তেলিহাটি ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড সদস্য মোবারক হোসেন বলেন, এটি একটি ঐতিহ্যবাহী পুকুর। একসময় এলাকার অনেকেই সরকার হতে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করলেও এখন আর সে ব্যবস্থা নেই। পুকুর পাড়ের বসবাসকৃত লোকজনই পুকুরটি গিলে খাচ্ছে। পুকুর পাড়ে অনেক বৃক্ষ ছিল, সেগুলোও এখন আর নেই।  অনেকেই পুকুর ভরাট করে জমি নিজেদের করে নিচ্ছে। পুকুর পাড়ের সরকারী জমিতে এতো বাড়ীঘর হয়েছে যে, এখন আর পুকুরই নেই। তবে মানুষের বেঁচে থাকার প্রয়োজনে পুকুরটি রক্ষা করতে হবে।

স্থানীয় রহমত আলী বলেন, সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় পুকুর পাড়ের বিভিন্ন ঘরবাড়ী ও জমি খোলা স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রি হয়। স্থানীয় বিভিন্ন ব্যক্তিদের ছাড়াও অন্যান্য এলাকার লোকজনও পুকুর পাড়ের জমি কিনে বাড়ী ঘর নির্মান করেছেন। দখলের বিষয়টি বিভিন্ন সময় স্থানীয় ভূমি অফিসকে জানালেও তারা দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি আজ পর্যন্ত।

তেলিহাটি ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (বর্তমানে সহকারী কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব) আব্দুল লতিফ বলেন, পুকুর পাড়ের বিভিন্ন দোকান ঘর গড়ে তোলা ও ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হওয়ায় সরেজমিন পরিদর্শন করে ৩৪জনের তালিকা তৈরী করে তাদেরকে উচ্ছেদ নোটিশ প্রদান করা হয়। সে নোটিশে গত ৩০জুনের মধ্যে তাদের স্থাপনা নিজ উদ্যোগে সরিয়ে নেয়ার জন্য বলা হলেও এখনো তারা সরাননি। ইতিমধ্যেই পুকুর পাড়ে আমরা সরকারী সম্পত্তির ফলক টানিয়ে দিয়েছি। এ বিষয়ে পুকুর ও পাড়ের জমি দখলমুক্ত কতে আমরা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেছি।

শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উজ্জল কুমার হালদার বলেন, এ সংক্রান্ত বিষয় তার নজরে রয়েছে। পুকুরটি রক্ষায় অবৈধ দখল মুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, বিধি অনুযায়ী সরকারী পুকুর বা এর পাড় এলাকায় কারো বসবাস ,দোকান, বাড়ী ঘর নির্মান করে ভাড়া আদায়ের কোন সুযোগ নেই। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরকারী পুকুর রক্ষায় উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এর ধারাবাহিতায় এই পুকুরটি রক্ষায় অবৈধ দখলমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই