তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শ্রীপুরে সরকারী সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা

বন কেটে রাস্তা বানালো “রেইন ফরেষ্ট”
শ্রীপুরে ৩০বিঘা সরকারী সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা
[ভালুকা ডট কম : ১২ অক্টোবর]
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাতখামাইর বিটের অধিনে সংরক্ষিত বনাঞ্চল শতবছর ধরে এলাকার ঐতিহ্যের ধারক। সম্প্রতি সরকারী এই বনাঞ্চলের শাল গজারী কয়েকটি বৃক্ষের মধ্যে ৩০ বিঘা সরকারী জমি নিজের মালিকানা ঘোষনা করে নামফলক দিয়েছেন বরমী বাজারের খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। তার সাইনবোর্ড টানানোর পরই বনের গাছপালা কেটে “রেইন ফরেষ্ট” নামের একটি অবকাশ কেন্দ্র  বনের ভেতর দিয়ে নিজেদের ব্যবহারের রাস্তা তৈরী করেছেন। বন বিভাগের কর্মকর্তারা তাদের বাধা দিয়েও নিবৃত্ত করতে পারেননি। এলাকার মানুষের দাবী, প্রতারকচক্রের হাতে পড়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এলাকার মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদেই বনাঞ্চল রক্ষা করার উদ্যোগ নিতে হবে।

বনবিভাগ ও ভূমি অফিসের দেয়া তথ্য  মতে, সাতখামাইর মোৗজার সিএস ২৬৮৭ দাগ ও আর এস ১৮৯০০ দাগের ৫৮একর ৩৯শতাংশ জমি সরকারী ১নং ও ২নং খাস খতিয়ানভুক্ত।  রয়েছে শত বছরের ঐতিহ্য শাল গজারী বৃক্ষ।সরকারী এই ভূমিতে বনবিভাগের উদ্যোগে তৈরী হয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সরকারী ভাবে এই ভূমি এখন পর্যন্ত কারো অনুকূলে বরাদ্ধ না ইজারা দেয়া হয়নি। সমন্বিতভাবে এই ভুমির ব্যবস্থাপনা করে আসছে জেলা প্রশাসন ও বনবিভাগ। সম্প্রতি এই ভূমি ভাওয়াল এস্টেটের কাছ থেকে ইজারা নেয়ার একটি নামফলক টানিয়ে দেন খোরশেদ আলম নামের এক ব্যক্তি। যদিও শ্রীপুরের কোন মৌজায় ভাওয়াল এস্টেটের জমি নেই বলে নিশ্চিত করেছেন ভাওয়াল এস্টেটের সহকারী ম্যানেজার।

স্থানীয়দের ভাষ্য মতে, সংরক্ষিত এই বনাঞ্চলের ভিতরে কিছু জোত জমি কিনে সম্পতি রেইন ফরেষ্ট নামের একটি অবকাশ কেন্দ্র গড়ে তোলার নির্মান কাজ চলছে। যদিও সংরক্ষিত বনাঞ্চল ঘেঁষা এই অবকাশ কেন্দ্র নির্মানের জন্য সীমানা নির্ধারণের বিধি থাকলেও তারা তা মানেননি। এই অবকাশ কেন্দ্রে প্রবেশের কোন রাস্তা না থাকায় তারা বনের গাছপালা কেটে রাস্তা তৈরী করেছেন। সাথে বনের বেশ কিছু জায়গাও দখলে নিয়ে স্থায়ী স্থাপনা নির্মান কাজ চালাচ্ছেন।

বনের গাছপালা কেটে রাস্তা বানানো ও সাইনবোর্ড টানানোর বিষয়ে রেইন ফরেষ্ট অবকাশ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ শিবলী মিয়া বলেন, সাইনবোর্ড অন্য এক ব্যক্তি টানিয়েছে। তবে রাস্তার কিছু অংশ আমরা বানিয়েছি। সীমানা নির্ধারণ ছাড়া কাজের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা আমাদের সীমানা থেকে বেশ কিছু জমি ছেড়ে দিয়েছি। তবে সীমানানির্ধারণের আবেদনও করেছি।

বরমী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের উপসহকারী কর্মকর্তা ফজলুল হক মোড়ল বলেন,এ জমি সরকারী সম্পত্তি। এখন পর্যন্ত কারো অনুকুলে ইজারা দেয়া হয়নি। কেউ যদি বলেন, এটি ইজারা নিয়েছেন বা জমিতে সাইনবোর্ড স্থাপন করেছেন বিষয়টি স্্েরফ প্রতারণা।

শ্রীপুর উপজেলার ফরেষ্ট রেঞ্জার রানা দেব বলেন, এভাবে সরকারী  বনের গাছপালা কেটে কেউ রাস্তা বানাতে পারেনা। সাথে এক ব্যক্তি সরকারী জমি নিজের ইজারাকৃত জমি বলে দাবী করে সাইনবোর্ড টানিয়ে দিয়েছে।  সরেজমিন গিয়ে তাদের এমন কান্ড দেখে আমরা হতবাক। তাদেরকে বাঁধা প্রদান করেছিলাম তারা নিবৃত্ত হয়নি। আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এছাড়াও আমরা তাদেরকে সীমানা নির্ধারণ ছাড়া কাজ বন্ধের জন্য বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছি আমরা। তবে যেভাবেই হোক সরকারী বন ও ভূমি রক্ষা করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

গাজীপুর ভাওয়াল এস্টেটের সহকারী ম্যানেজার আব্দুল মন্নান বলেন, শ্রীপুরের কোন মৌজায় আমাদের কোন জমি নেই। ১নং খতিয়ানভুক্ত থাকলে তা জেলা প্রশাসনের। আমাদের কাছ থেকে কেউ ইজারা নিয়েছে এমন দাবী সঠিক নয়।

যদিও জমির দাবীদার খোরশেদ আলম মুঠোফোনে  বলেন, ভূমি সংস্কার বোর্ড থেকে তিনি এই জমি ইজারা নিয়েছেন। তবে রাস্তা তিনি নির্মান করেননি। নির্মানাধীন অবকাশ কেন্দ্রের লোকজন জোড় করেই রাস্তা তৈরী করেছেন। ইজারার বিষয়ে ভূমি সংস্কার বোর্ডে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়ে তিনি ফোন কেটে ।

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি জরুরী ভাবে  বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবেন। সাইনবোর্ড টানিয়ে জমির দখল নেয়ার কোন সুযোগ নেই। যদি কোন অসঙ্গতি দেখতে পান তাহলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নিবেন।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই