তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকার মাঠে সরিষা ফুলের মৌয়ালী গন্ধ

ভালুকার মাঠে সরিষা ফুলের মৌয়ালী গন্ধ
[ভালুকা ডট কম : ০১ জানুয়ারী]
পৌষালী দুপুরে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত সরিষার হলদু ফুলে হালকা বাতাসে যেন নৃত্যরত ভালুকার গ্রামে ফসলের মাঠ। মাঝে মাঝে হলুদ গালিচার মত ফুল ফুটা সরিষা ক্ষেত হাতছানি দেয় পথচারির নয়ন তৃঞ্চা মিটাতে। সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধ যেন অজানা অনুভূতির ছোঁয়া জাগায় সকলের প্রাণে। গ্রাম বাংলার মাঠের শোভা হারিয়ে যাওয়া ফসল সরিষার আবাদ এ বছর অনেক বেড়েছে বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

আদিকাল হতেই সরিষা গ্রামের মানুষের খাদ্য তালিকায় অতি গুরুত্বপুর্ণ স্থান দখল করে আছে। এক সময় গ্রামের আনাচে কানাচে যে দিকে চোখ যেতো দেখা মিলতো শুধু সরিষা ফুলের দিগন্ত জোড়া  হলুদ চাদরে ছাওয়া মাঠের পর মাঠ। কৃষকের উঠান ভরে উঠতো সরিষার দানায়।

গ্রামের কুলু সম্প্রদায় নিজস্ব প্রযুক্তির ঘানি চালিয়ে সরিষা হতে তৈরী করতেন ঘন ভোজ্য তেল যা রান্না সহ শরীরে মাখানোর কাজে ছিল সকলের প্রিয়। ঘানি টানা সরিষার তেল ছারা এক সময় মুখরোচক সবজি ভর্তা ভাজি রান্না যেন অকল্পনীয় বিষয় ছিল। প্রবীনদের কাছে শোনা যায় খাটি সরিষার তেল নিয়মিত খেলে অনেক রোগ বালাই হতে মুক্ত থাকা যায়।

সরিষা গাছে ফুল আসার পূর্বে কাঁচা পাতা শাখ হিসেবে খেতে সুস্বাদু। আমসত্ব,বড়ই, চালতা,জলপাই ইত্যাদি আচার তৈরীতে সরিষার তেল অত্যাবশ্যকীয়। পিঠা পুলি তৈরীতে খাটি সরিষার তেলের জুরি নেই। সরিষার ইলিশবাটা, কাশান্দি কার না প্রিয়। আধুনিকায়ন ও বিজ্ঞানের উন্নত প্রযুক্তির কাছে আদিকালের কাঠের তৈরী ঘানিকল এখন হারানো দিনের স্মৃতি চারণ মাত্র। বিদেশের উৎপাদিত সোয়াবিন,পামওয়েল এক সময় এদেশের বাজার দখল করে নেয়ায় ঘানি শিল্পের সাথে জড়িত পরিবার গুলো ব্যবসায়িক লোকসানের মুখে পরে যায়। দিন রাত যেসব বাড়ীতে ঘানি টানা যাতা কলের কেচাং কেচাং শব্দ হত যা কালের বিবর্তনে এক সময় নিশব্দে মিলিয়ে যায়। সরিষার বিকল্প ভোজ্যতেল বাজারে আসায় প্রভাব পরে কৃষকের অর্থকরি ফসল সরিষার উপর। অনেকে মনে করেন মূলত ওই কারনেই চাষীরা সরিষা আবাদে অনাগ্রহী হয়ে পরেন। সম্প্রতি সরিষা আবাদে কৃষকের মধ্যে নতুন করে সারা জাগলেও হারিয়ে গেছে ঐতিয্যবাহী ঘানি কল।

এ বছর ভালুকায় সরিষার ফলন খুবই ভাল হয়েছে। সরিষা ফুল হতে প্রাকৃতিক ভাবে ভাল মধু পাওয়া যায়। আবার অনেকে রবি মৌসুমে মধু উৎপাদনের জন্য সরিষার আবাদ করে বাক্সে মৌমাছি পালনের মাধ্যমে লাভবান হচ্ছেন। উপজেলার কাচিনা, হবিরবাড়ী, ধীতপুর, বিরুনিয়া,মল্লিকবাড়ী, ডাকাতিয়া, মেদুয়ারী ও উথুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে এ বছর কমবেশী সরিষার আবাদ হয়েছে।

উপ সহকারী উদ্বিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা এনামুল হক জানান চলতি মৌসুমে ৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ মাত্রা ধরা হলেও অর্জিত হয়েছে ১৩০ হেক্টর। ৫০০ কৃষককে ১ বিঘা করে জমি আবাদের জন্য সার বীজ সরকারী প্রনোদনা দেয়া হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১.১৫ মেট্রিক টন ফলন পাওয়া যায়। মাঘের শেষে সরিষা মাড়াই করে ওই জমিতে কৃষকরা বোরো ধানের আবাদ করে থাকেন।বর্তমানে ২০০০ থেকে ২২ শত টাকা মণ দরে সরিষা বিক্রি হচ্ছে। সোয়াবিন তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সরিষা আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে বলে তিনি মনে করেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই