তারিখ : ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

সান্তাহারে ৬৯০টি রেল কোয়ার্টার বেদখল

সান্তাহারে ৮৭৪টি রেল কোয়ার্টারের মধ্যে ৬৯০টি বেদখল
[ভালুকা ডট কম : ১০ ফেব্রুয়ারী]
নওগাঁ শহর সংলগ্ন সান্তাহারে সরকারি রেলওয়ের ৮৭৪টি কোয়ার্টারের মধ্যে ৬৯০টি দখল করে রেখেছেন অবৈধ দখলদাররা। ইয়ার্ড কলোনি, লোকো পূর্ব ও পশ্চিম কলোনি, সাহেবপাড়া, বাবুপাড়া, স্টেশন কলোনি এসব এলাকায় রেলওয়ের কোয়ার্টার দখল করে বসবাস করছেন দখলদাররা। দখল হওয়া সত্বেও আজ পর্যন্ত দখলদারদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেইনি রেলওয়ের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ। ফলে বছরের পর বছর এসব দখলে যাওয়া কোয়ার্টার সরকারের বেদখলেই থেকে গেছে।

রেল সূত্রে জানা যায়, বগুড়ার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন এলাকায় সর্বমোট ৮৭৪টি কোয়ার্টার রয়েছে। এর মধ্যে ১৫২টি বৈধ, ৩২ টি পরিত্যক্ত এবং বাকি ৬৯০ টি দখল করে রেখেছেন অবৈধ দখলদাররা। এসব কোয়ার্টারগুলো ১ কক্ষ, ২কক্ষ, ৩ কক্ষসহ বিভিন্ন ধরনের। আবার পরিত্যক্ত ৩২টি কোয়ার্টার থাকলেও তার কোন হদিস নাই। যদিও বা হদিস পাওয়া যায় তাহলে দেখা যায় সেখানে কেউ দখল নিয়ে অবৈধভাবে ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। আর সেখান থেকে মাসোহারা নিয়ে ফায়দা লুটছেন স্থানীয় প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নিয়ম মতাবেক সরকারি রেলওয়ের চাকরিতে কর্মরত অবস্থায় কর্মকর্তা বা কর্মচারী এই কোয়ার্টারে বসবাস করতে পারবে। চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর কর্তৃপক্ষকে ওই কোয়ার্টার ছেড়ে দিতে হবে। কিন্তু অনেকে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পরেও অবৈধভাবে দখল করে আছেন। আবার অনেকে কোয়ার্টার ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে গেলে সেটা দখল করে রেখেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা। পরে ওই কোয়ার্টার স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ও প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে যোগসাজস করে পজিশন বিক্রি করছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের কাছে। ধরন অনুযায়ী প্রতিটি বাসা ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকায় চলছে কেনাবেচা। যে কারনে এখন সরকারি চাকরি না করেও রেল কোয়ার্টারে বসবাস করতে পারছেন ডাক্তার, ব্যবসায়ী, বেসরকারি চাকরিজীবীসহ অনেকেই। ফলে প্রতি মাসে রেল কোয়ার্টার থেকে যে ভাড়া পেতো তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, এসব কোয়ার্টার অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন সরকারি অবসর প্রাপ্ত চাকরিজীবী, বেসরকারি চাকরিজীবী, ডাক্তার,ব্যবসায়ী। দখলদাররা কর্তৃপক্ষকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে বছরের পর বছর বসবাস করে আসছেন। আবার অনেকে কোয়ার্টারের সামনে পিছনের জায়গায় গাছ লাগিয়ে বা জ্বালানি কাঠ, খড়ের পালা দিয়ে দখল করে রেখেছেন। কেউ আবার আরাম আয়েশের জন্য কোয়ার্টারে লাগিয়েছেন এয়ারকন্ডিশন (এসি)। অবৈধ দখলে থেকেও যেনো রাজকীয় বসবাস। এ যেনো দেখার কেউ নাই। তবে রেল কর্তৃপক্ষ চাইলে এই সব কোয়ার্টার উদ্ধারসহ অবৈধ দখলদারদের স্থায়ী ভাবে উচ্ছেদ করতে পারেন। কিন্তু স্থানীয় রেলওয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলীর লোকজন দেখেও দিনের পর দিন নিরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। যখন সরিষার মধ্যে ভূত তাহলে উদ্ধার করবে কিভাবে? অর্থের কাছে কর্তৃপক্ষরা বিক্রি হয়ে গেছেন এমন টাই বলছেন সচেতন মহল। অসৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কারনে বছরের পর বছর এসব রেল কোয়াটার বেদখলই থেকে যাচ্ছে। আর সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। তাই সচেতন মহল রেলওয়ের অবৈধ দখলে থাকা কোয়ার্টার স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ভাড়া বাসায় কতদিন থাকবো। এখানে সুযোগ বুঝে ১লক্ষ ১০হাজার  টাকা দিয়ে একটা রেলওয়ের কোয়ার্টার দখল পেয়েছি। তখন থেকে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছি। অনেকেই এভাবে বসবাস করছেন। মাঝে মধ্যে রেলওয়ের কোন উর্ধতন অফিসার নোটিশ পাঠালে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ধরে অর্থের বিনিময়ে ঠিকঠাক করি।

রেলওয়ে কোয়ার্টার দখল বিষয়ে জানতে চাইলে সান্তাহার রেলওয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) আফজাল হোসেন বলেন, এটা অনেক আগে থেকে হয়ে আসতিছে। আমরা উদ্ধতন কর্মকর্তাকে বলেছি তারা বিষয়টি দেখবেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই