তারিখ : ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ বঞ্চিত মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষ

জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ বঞ্চিত মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষ, অবহেলিত প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার
[ভালুকা ডট কম : ১৫ এপ্রিল]
“প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।” এই স্লোগানকে সামনে রেখে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে দেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুত পৌছে দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌছে গেলেও জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত রয়ে গেছে ভোলা জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষ। যেন অবহেলিত রয়ে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গিকার।

জেলার মূল ভূ-খন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন মনপুরা উপজেলাটি ছোট বড় ১২ টি চরের সমন্বয়ে ৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। ১৯৮৩ সালে এই দ্বীপটি উপজেলায় উন্নিত হওয়ার পর ১৯৯৭ সালে ওজোপাডিকো’র (ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবুশন কোম্পানী) অধীনে জেনারেটর মেশিনের মাধ্যমে সন্ধ্যা ৬ টা থেকে রাত ২ টা পর্যন্ত দৈনিক ৮ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। এই ৮ আট ঘন্টা বিদ্যুৎ সেবা  পাচ্ছেন কেবলমাত্র উপজেলা সদরে বসবাসকারি ৮১০ জন গ্রাহক।

এছাড়াও ৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত উপজেলাটির ৩ টি ইউনিয়নে ইড কলের আওতায় সোলার গ্রীডের মাধ্যমে চড়া মূল্যে (৩০ টাকা ইউনিট হারে) বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া মনপুরার মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন চর কলাতলী, কাজীর চর, ঢালচর, চর সামসুদ্দিন, চর নিজামসহ বিভিন্ন চরে বসবাসকারী প্রায় ৩০ হাজার মানুষ রয়ে গেছে সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত।

এদিকে পর্যাপ্ত নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না থাকায় উপজেলার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কার্যক্রম ব্যবহত হচ্ছে। সরকারি বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, শিল্প কারখানা, পর্যটন শিল্প, স্বাস্থ্য সেবা, কৃষিকাজ ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে প্রতিনিয়ত।

এছাড়াও প্রানিসম্পদ, মৎস্যসম্পদ ও প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর উপজেলাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারনে দিন দিন পর্যটকদের কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠছে। বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকায় পর্যটন ও আবাসন শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন অনেকে।

এদিকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে সরকারি বিদ্যুৎ পৌঁছে গেলেও অজানা কারনে মনপুরা উপজেলায় এখনো জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ চালু হয়নি। ইতোমধ্যে ভোলা সদর উপজেলার চর ভবানীপুর, চর মেদুয়া ও কাচিয়ার চর, চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকুরীমুকরী ও মুজিবনগর, তজুমদ্দিন উপজেলার চর মোজাম্মেল, চর জহির উদ্দিন, মংলার চর, চর সোনাপুর ও চর আবদুল্লাহসহ ১৯ টি চরে ইতোমধ্যে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে পৌঁছে গেছে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ। এসব চরের বাসিন্দাদের জীবন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হলেও অন্ধকারে রয়ে গেছে মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষের ভাগ্য।

ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুতের দাবীতে দফায় দফায় মানববন্ধন করেছে মনপুরার মানুষ। ঢাকা, ভোলা, চরফ্যাশন ও মনপুরায় একাধিকবার মানববন্ধন করা হলেও মনপুরার মানুষের ভাগ্যে জোটিনি সেই কাঙ্খিত বিদ্যুৎ সুবিধা। এমতাবস্থায় দ্রুত জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ চালু করা মনপুরার দেড় লক্ষ মানুষের প্রাণের দাবীতে পরিনত হয়েছে। তাই নিকটবর্তি তজুমদ্দিন উপজেলার চর জহির উদ্দিন থেকে খুঁটি যোগে ও চরফ্যাশন উপজেলা থেকে সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে দ্রুত জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুৎ মনপুরায় চালু করা সম্ভব বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

এব্যাপারে উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ শামীম মিঞা বলেন, ওজোপাডিকো’র প্রস্তাবনার ভিত্তিতে শিল্প শক্তি বিভাগ ও পরিকল্পনা কমিশনের চাহিদার ভিত্তিতে মনপুরা উপজেলার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিদ্যুতের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। আশা করি দ্রুত সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমে জাতীয় গ্রীডের বিদ্যুতের কার্যক্রম চালু হবে। #



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই