তারিখ : ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত ভুয়া চিকিৎসক কবীর

ভ্রাম্যমাণ আদালতে দণ্ডিত ভুয়া চিকিৎসক কবীর জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে
[ভালুকা ডট কম : ২২ আগস্ট]
ভ্র্যাম্যমাণ আদালতের অভিযানে দণ্ডিত প্রতারক যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা মল্লিক পাড়ার ননী ফল নার্সারির মালিক ভুয়া চিকিৎসক খন্দকার কবীর হোসেন সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনকে নিয়ে আরেক যড়যন্ত্র শুরু করেছেন। চিকিৎসা প্রতারণার খবর প্রকাশের জেরে তিনি (কবীর হোসেন) এবার ওই সাংবাদিককে বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্য আখ্যা দিয়ে পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে কাল্পনিক অভিযোগ করেছেন। এর আগে সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনের বিরুদ্ধে কবীর হোসেন চাঁদাদাবির ঘটনা সাজিয়ে  আদালতে মামলা করেছিলেন। যদিও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে চাঁদাদাবির মামলার অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। এছাড়া ওই সাংবাদিককে খুনের জন্য ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী লেলিয়ে দেয়া হয়েছিলো ।

সূত্র জানায়, জেল থেকে বের হয়ে কবীর হোসেন ডিজিটাল প্লাট ফর্মে চিকিৎসা প্রতারণা আরও জোরদার করেছেন। নিজের প্রতারণা টিকিয়ে রাখতে তিনি সাংবাদিক বিল্লালকে শায়েস্তা করতে মরিয়া হয়েছেন। খন্দকার কবীর হোসেনের প্রতারণা রুখে দেয়ার মতো কেউ কি নেই বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

জানা গেছে, ননী ফল নার্সারির আড়ালে চিকিৎসার নামে প্রতারণার ফাঁদ পাতেন খন্দকার কবীর হোসেন।  তিনি দীর্ঘদিন ধরে সাধারণ মানুষের দুর্বলতাকে পূঁজি করে যৌন ও ক্যান্সার চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দিচ্ছিলেন। তার প্রতারণা ও অপকর্ম নিয়ে কবীরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ হয়। ফলে আপাদমস্তক এই প্রতারকের মুখোশ উন্মোচন হয়। এতে করে সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনের ওপর ক্ষুব্ধ হন কবীর। বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেয়া শুরু হয়। ওই সাংবাদিককে হত্যার পরিকল্পনাও করা হয়। মিশন সফল করতে লেলিয়ে দেয় ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী। গত ৩১ মার্চ বিকেলে চুড়ামনকাটি রেলস্টেশনের উত্তরপাশে সলিং রাস্তার ওপর বিল্লালকে একা পেয়ে খন্দকার কবীরসহ অজ্ঞাত ৩ জন  অকথ্য ভাষায় গালিগালাজসহ জীবননাশের হুমকি দেন। এই ঘটনায় সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন গত ৬ এপ্রিল কোতোয়ালি থানায় একটি জিডি করেন। যার নম্বর ২৮৪। এছাড়াও সাংবাদিককে শায়েস্তা করার জন্য আদালতে চাঁদাদাবির মিথ্যা মামলা করেন কবীর। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করে ইতিমধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। তদন্তে চাঁদাদাবির অভিযোগেরকোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে, গত ১৭ মে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ প্রতারক কবীর হোসেনের ডেরায় অভিযান চালায়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৌম্য চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত ক্যান্সার ও যৌন  চিকিৎসায় প্রতারণা ও অবৈধভাবে ওষুধ তৈরির দায়ে খন্দকার কবীর হোসেনকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও  এক লাখ টাকা জরিমানা আদায় করে। অভিযানে যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস ও ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হাসান, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান ও র‌্যাব সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ ও জেল জরিমানার শিকার হয়ে প্রতারক কবীর সাংবাদিক বিল্লাল হোসেনকে শায়েস্তা করতে নানা ষড়যন্ত্র চালাতে থাকে।

সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন জানান, প্রতারক কবীর হোসেন তার বিরুদ্ধে মামলায় উল্লেখ করা অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে এবার পুলিশ সুপারের কাছে কাল্পনিক অভিযোগ করেছেন। অভিযোগপত্রে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের নম্বর (০১৭১৭১২৭৭১৬) উল্লেখ করে বিকাশ প্রতারক চক্রের সদস্য আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছেন। অভিযোগ খতিয়ে দেখছেন যশোর পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন।

কবীর হোসেন অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, একটি চক্র একাধিক ফেসবুক পেজ খুলে তার চিকিৎসা প্রচারণার ভিডিও আপলোড করেছেন। যোগাযোগের জন্য পেজে দেয়া হয়েছে একাধিক মোবাইল নম্বর। ওষুধ দেয়ার নাম করে প্রতারক চক্র বিকাশে টাকা হাতিয়ে নিয়ে আর ওষুধ দিচ্ছেন না। ভুয়া চিকিৎসক কবীরের পুলিশ সুপারের কাছে দেয়া অভিযোগে একাধিক নম্বরের সাথে ষড়যন্ত্রমূলক আমার নম্বরটি জুড়ে দিয়েছেন।

বিল্লাল হোসেন আরও জানান, তার বিরুদ্ধে চাঁদাদাবির  মিথ্যা মামলা প্রমাণে ব্যর্থ হয়ে এবার নতুন ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন। পুলিশ সুপারের কাছে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাকে হয়রানির চেষ্টা করছেন প্রতারক খন্দকার কবীর। জেল জরিমানার শিকার এই ভুয়া চিকিৎসকের কবল থেকে রক্ষা পেতে সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনে দায়িত্বরত এসআই শুভেন্দ্র জানান, খন্দকার কবীর হোসেন অভিযোগপত্রে সাংবাদিক বিল্লালের মোবাইল নম্বর ছাড়া আরও একাধিক ব্যক্তির মোবাইল নম্বর উল্লেখ করেছেন। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।

চুড়ামনকাটি প্রেসক্লাবের সম্পাদক মিজানুর রহমান জানান, খন্দকার কবীর হোসেন একজন চিহ্নিত প্রতারক। চিকিৎসার নামে তিনি মানুষ ঠকিয়ে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন। এই চিকিৎসা  প্রতারণা নিয়ে দৈনিক স্পন্দন সহ একুশে সংবাদে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করায় বারবার সাংবাদিক বিল্লাল হোসেন কবীরের রোষানলের শিকার হচ্ছেন। তিনি কবীরকে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন একজন পেশাদার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন। নতুবা চুড়ামনকাটির সাংবাদিক সমাজ জোটবদ্ধ হয়ে আপনার মোকাবেলা করবে। সাংবাদিক নেতা মিজানুর রহমান আরও জানান, জেল থেকে জামিনে এসে সারাদেশে প্রতারণা ব্যবসা ছড়িয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে খন্দকার কবীর হোসেন সোস্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন ইউটিউবারদের ম্যানেজ করে চিকিৎসা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এসব প্রচারণা বিশ্বাস করে অর্থ হারাচ্ছেন অনেক মানুষ। তার মূল টার্গেট হচ্ছে যৌন দুর্বল মানুষ। কবীরের এই প্রতারণা রুখে দেয়ার মতো কি কেউ নেই।

যশোরের সিভিল সার্জন ডা. বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস জানান, বিগত দিনে চিকিৎসা প্রতারণার অভিযোগে খন্দকার কবীর হোসেন জেল জরিমানার শিকার হয়েছেন। ডিজিটাল প্লাটফর্মে চিকিৎসা প্রতারণার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকার বাইরে বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই