তারিখ : ১৯ মার্চ ২০২৪, মঙ্গলবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় আঁখ ও সবজি চাষে জাকিরের সাফল্য

ভালুকায় চালা জমিতে আঁখ ও সবজি চাষে জাকির হোসেনের সাফল্য
[ভালুকা ডট কম : ০৯ নভেম্বর]
ভালুকার মল্লিকবাড়ী গ্রামের মৃত রমজান আলীর ছেলে জাকির হোসেন এক সময়ের ফেলে রাখা চালা পতিত জমিতে আঁখ ও নানান জাতের সবজির আবাদ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন।

সরজমিন কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায় এখানে ওখানে ক্ষেত জুড়ে আইলে আইলে সাড়ি সাড়ি ১০/১২ ফুট উঁচু আঁখের মাথায় কাঁচা শুকনা লম্বা পাতায় বাতাস লেগে মড় মড় শব্দ হচ্ছে। মল্লিকবাড়ী গ্রামের কৃষক জাকির হোসেন জানান তিনি নিজ গ্রামে বাড়ী সংলগ্ন জমিতে ধান ও বিভিন্ন শাক সবজি চাষের পরেও পাশের চানপুর গ্রামে ২৪ কাঠা  (দেড় একর) জমিতে ঈশ্বরদী জাত আঁেখর আবাদ করেছেন। ২৫/৩০টি করে আঁখের কান্ডের অংশ এক সাথে করে বেঁধে দেয়া হয়েছে যাতে ঝড় বাতাশে হেলে পরে নষ্ট না হয়।তার আবাদকরা ক্ষেতে গেলে দাঁড়িয়ে থাকা আঁখ দেখে পা যেন আপনিতেই থেমে যায়। তিনি জানান প্রায় দেড় একর জমিতে এ বছর ঈশ্বরদী জাত আঁখের চাষ করেছেন। এ জাতের আঁখ আকৃতিতে লম্বা, প্রচুর রস ও মিষ্টি হয়ে থাকে। ফলে এর চাহিদা বেশী হওয়ায় ক্ষেত হতে পাইকার এসে কিনে নিয়ে যায়।

তিনি জানান জমি চাষ,চারা রোপন, সার, সেচ, কীটনাশক ও শ্রমিক বাবদ দেড় একর জমিতে এক লাখ ৩০ হাজার টাকার মত খরচ হয়েছে। আসছে ফাল্গুন মাসে আখ মাড়াই শুরু হবে। ফলন ভাল হলে আবাদকৃত জমি হতে ৪ (চার)লাখ ৫০ হাজার টাকার মত বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী। প্রতি বছর ফাল্গুন চৈত্র মাসে জমি চাষ করে শুকনো মসৃন ধুলো মাটিতে আইল করে লাইনে নির্দিষ্ট দুরত্বে আঁখের চারা রোপন করতে হয়। আস্তে আস্তে চারা বড় হতে শুর করলে বেড়ে যায় পরিচর্যা মাত্রা। সময় মত সার, সেচ দিয়ে পরিচর্যা করলে ভাল ফলন পাওয়া যায়। আঁখের ফলন পেতে এক বছর সময় লাগে তার পরও অন্যান্য ফসলের চেয়ে দ্বিগুন লাভ পাওয়া যায়। আঁখ ও সবজি চাষ করে কয়েক বছরে তিনি সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এনেছেন। ছেলে মেয়ে নিয়ে বর্তমানে সুখ স্বাচ্ছন্দে দিন কাটাচ্ছেন। শুধু তিনিই নন আঁখ চাষ করে এলাকার শত শত কৃষকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে।

এর মধ্যে উপজেলার মল্লিকবাড়ী, ডাকাতিয়া, মেদুয়ারী ও কাচিনা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে আঁখের আবাদ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আঁখ চাষ কৃষকের জন্য খুবই লাভ জনক। ভালুকার আঁখ মাড়াইয়ের পর স্থানীয়ভাবে চাকা বা পাটা গুড়, ধুলা চিনি তৈরী হয়। যা বিভিন্ন জেলায় রপ্তানী হয়। আবার রস বিক্রির জন্য পাইকাররা ক্ষেত থেকে আঁখ কিনে ট্রাক ভরে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যায়। উপজেলার মল্লিকবাড়ী, নয়নপুর, চাঁনপুর, সোনাখালী, পাঁচগাঁও ,কাতলামারী, পাড়াগাঁও, কাদিগড় এলাকায় আঁখের আবাদ হয়েছে। জাকির জানান যেসব টানি চালা জমিতে ধান চাষে ভাল ফলন পাওয়া যায়না ওই সব জমিতেই আঁখ চাষে ভাল ফলন পাওয়া যায়। শুধু আঁখ নয় বিভিন্ন শাক সবজির আবাদ করে প্রতি মৌসুমে ভাল টাকা রোজগার করেন তিনি। গেল বছর ৮০০ গাছের কলার ছড়ি বিক্রি করে ৪ লাখ টাকা আয় করেন। এক কাঠা জমি হতে পাটশাক বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার টাকা। এক কাঠা জমি হতে লাল শাক বিক্রি করেছেন ৫ হাজার টাকা, লাউ শাক ৫ হাজার টাকা। চলতি মৌসুমে ৮ কাঠা জমিতে শীতলাউ, ৪ কাঠা জমিতে মিষ্টি লাউ ও ৩ কাঠা জমিতে দেশী ছোট করলার আবাদ করেছেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যে ফলন আসতে শুরু করবে। তিনি জানান এ পর্যন্ত সরকারের দেয়া কোন কৃষি প্রনোদনা বা সহায়তা তিনি পাননি। বিভিন্ন ফসলের আবাদ করা সত্বেও কৃষি বিভাগের স্থানীয় তালিকার অর্ন্তভূক্ত হতে পারেননি। ভাল ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও সহযোগিতা না পাওয়ায় হলুদ আবাদ করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সর্বোপরি নিজস্ব পদ্ধতিতে চাষাবাদ করেও তিনি আর্থিক ভাবে লাভবান হয়েছেন। ছেলে তানবির (১৬) হাফেজি পাশের পর দাখিলে ভর্তি হয়েছেন। মেয়ে সাবিকুন্নাহার (১৩) সপ্তম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। স্ত্রী তাছলিমা আক্তার গৃহস্থালী কাজে সার্বক্ষনিক পাশে থেকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৬ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই