তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কেঁচো সারের ব্যবহার

রাণীনগরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কেঁচো সারের ব্যবহার,আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছে অনেক মহিলা
[ভালুকা ডট কম : ০২ জানুয়ারী]
নওগাঁর রাণীনগরে রাসায়নিক সারের ব্যবহার ছেড়ে ভার্মি কপোস্টের (কেঁচো সার) দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। ক্ষতিকর দিক বিবেচনায় তৃণমূলের কৃষকরা রাসায়নিক সারের পরিবর্তে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করছেন কেঁচো সার। আর কৃষি অফিসের সহযোগিতায় বাণিজ্যিক ভাবে এই কেঁচো সার উৎপাদন করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছে উপজেলার কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতি। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে এ সারের উৎপাদন। যার সুফল পাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

কুজাইল মহিলা সিআইজি (সবজি) সমবায় সমিতির সভানেত্রী ও রাজশাহী বিভাগের সফল নারী উদ্যোক্তা মোছা: সানজিদা বেগম বলেন, এক সময় আমার সংসারে অনেক কষ্ট ছিলো। এমতাবস্থায় ২০১৮ সালে উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় আমার আশেপাশের কয়েকজন মহিলাদের নিয়ে সমবায় সমিতি গঠনের মাধ্যমে প্রথমে ৩টি রিং-এ থাই কেঁচোর দ্বারা ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন শুরু করি। এরপর থেকে আমাকে আর পেছন ফিরে দেখতে হয়নি। এই ভার্মি কম্পোস্ট সার দিয়ে আমি ও আমার আশেপাশের মহিলারা পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ করছি। সেই বিষমুক্ত সবজি নিজেদের চাহিদা পূরণের পর বাজারে বিক্রি করে আর্থিক ভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছি। বর্তমানে কৃষি অফিসের সহায়তায় ২০টি রিং এ বাণিজ্যিক ভাবে কেঁচো সার উৎপাদন করছি। বর্তমানে আমাদের উৎপাদিত কেঁচো সারের সুনাম আশেপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। আশেপাশের ও দূরদুরান্তের কৃষকরা এই কম্পোস্ট সার জমিতে ব্যবহার করে উপকৃত হচ্ছেন। তাই নিজেদের চাহিদা পূরণের পরও প্রতি মাসে এই কম্পোস্ট বিক্রি করে ১৫-২০হাজার টাকা আয় হচ্ছে। সংসারের কাজের ফাঁকে যে কোন মহিলা ইচ্ছে করলেই এই কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে ব্যাপক ভাবে উপকৃত হতে পারেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে রাসায়নিক সার আর কীটনাশকের যত্রতত্র ব্যবহারে মাটির জীবনবায়ু প্রায় ওষ্ঠাগত। শস্যের বাড়তি ফলন নেই, হাসি নেই কৃষকের মুখে। এ অবস্থায় আমাদের চাষাবাদে জৈব সার, কম্পোস্ট সারের বিকল্প নেই। বিভিন্ন প্রকার জৈব বস্তুতে (উদ্ভিদ ও প্রাণিজ) বিশেষ প্রজাতির কেঁচোর পাচন ক্রিয়ার ফলে জমিতে প্রয়োগের উপযোগী যে জৈব সার পাওয়া যায় তাই ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার। উপযুক্ত পরিবেশে ভার্মি কম্পোষ্ট তৈরিতে ৩০-৪০দিন সময় লাগে। ভার্মি কম্পোস্ট মাটির নিরাপদ স্বাস্থ্যে ভীষণ জরুরি। কেঁচো কম্পোস্টে অন্যান্য কম্পোস্টের চেয়ে প্রায় ৭-১০ ভাগ পুষ্টিমান বেশি থাকে। প্রথম দিকে কম্পোস্ট তৈরি হতে সময় বেশি লাগে (৬০-৭০ দিন), পরবর্তীতে মাত্র ৪০ দিনেই কম্পোস্ট তৈরি হয়। ধান, গম, পাটসহ বিভিন্ন শাক-সবজি, ফলবাগানে এই সার ব্যবহার করে ভাল ফলন পাওয়া যায়। এই সার ব্যবহারের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি বাড়ে, মাটিতে বায়ু চলাচল বৃদ্ধি পায়। মাটির পানি ধারণক্ষমতা বাড়ে, বিষাক্ততা দূরীভূত হয়। এছাড়া মাছ চাষের ক্ষেত্রে কেঁচো সার প্রয়োগ করে রাসায়নিক সার ও অন্য খাবার সামান্য ব্যবহারেই কম খরচে অতি দ্রুত সুস্বাদু মাছ উৎপাদন করে অধিক মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়।

তিনি আরো বলেন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে সানজিদা ও তার দল এক অনন্য দৃস্টান্তর স্থাপন করেছে। দীর্ঘস্থায়ী ভাবে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এই কম্পোস্ট সারের কোন বিকল্প নেই। তাই আমরা কৃষকদের এই সার উৎপাদন ও ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করে আসছি। ইচ্ছুক যে কোন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে আমরা এই সার উৎপাদনে সার্বিক সহযোগিতা করবো।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই