তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ত্রিশালে নকলবাজ বানিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ায় মানসিক অস্বস্তিতে শিক্ষার্থী

ত্রিশালে নকলবাজ বানিয়ে ফেসবুকে পোষ্ট দেয়ায় মানসিক অস্বস্তিতে শিক্ষার্থী
[ভালুকা ডট কম : ১৯ নভেম্বর]
বর্তমান সময়ের শক্তিশালী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক।এ মাধ্যমটি লাখ লাখ মানুষের ভাল কাজে ব্যবহার হচ্ছে। তার পাশাপাশি এ মাধ্যমটি ব্যবহ্রত হচ্ছে কিছু দুষ্ট লোকের  অন্যায় অপকর্মেও। এটি এমন একটি মাধ্যম যেখানে সত্য আর মিথ্যে নেই কোন কিছু পোষ্ট করে দিলেই সাধারন মানুষের মন্তব্য শুরু হয়ে যায়। কাউকে রাতারাতি হিরো বানানো আবার কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য একটি পোষ্টই যথেষ্ট। এমনি এক ঘটনার শিকার মুক্ষপুর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এবারের জেএসসি পরীক্ষার্থী আনিজুল ইসলাম।
        
বিদ্যালয়ও অভিভাবক সূত্রে জানাযায়-ত্রিশাল উপজেলার মক্ষুপুর উচ্চ বিদ্যালয় জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে ফেসবুক সেলিব্রটি সাজার জন্য এবং প্রশাসনের বাহবা কুড়ানোর জন্য ফেসবুক ও অনলাইন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি পরীক্ষা হলে প্রবেশ করে বাহির থেকে একটি কুচকানো কাগজ এনে পরীক্ষা দেয়ার সময় জেএসসি পরীক্ষার্থী  আনিজুল ইসলামের কাছে গিয়ে কাগজটি তার সামনে খাতার উপর বেঞ্চে রেখে ছবি তোলে ফেসবুকে ছেড়ে দেয়। ছবিতে দেখা যায় ছেলেটি নকল করছে আর গর্ব করে ছবি তুলছে হাসি মুখে। এরকম একটি ছবি সামাজিক যোগ মাধ্যমে আসার পর সচেতন মহল ঔই শিক্ষার্থীর অবিভাবক ও শিক্ষার্থীর মাঝে এর নীতিবাচক প্রভাব পড়ে।

কোমলমতি ছেলেটি পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির ফেরার পর পরিবারের লোকজন তাকে কেন এই ঘটনা ঘটলো এই বিষয়ে চাপ প্রয়োগ করলে এক পর্যায়ে ছেলেটি সিদ্বান্ত নেয় আর পরীক্ষা দিবেনা আর লেখাপড়াও করবেনা। এ কথা শুনার পর তার প্রিয় শিক্ষকরা ছুটে যান তার বাড়িতে। অভিভাবক আর শিক্ষাথীকে বুঝিয়ে শুনিয়ে এনে পরীক্ষায় দেয়ালেও ঘটনারটির পরিপেক্ষিতে মানসিক অস্বস্তিতে থাকা আনিজুল বলছে এ প্লাস না পেলে সে আর পড়বেনা।
       
এব্যাপারে জেএসসি পরীক্ষার্থী আনিজুল ইসলাম জানায়-সব সময় আমার স্বপ্ন ছিল আমি পরীক্ষায় এ প্লাস পাবো। সেই ভাবেই আমি প্রস্তুুতি নিয়েছি,অংক পরীক্ষার আগের সব গুলো পরীক্ষায় আমার ভাল হয়েছে,প্রতিটি পরীক্ষায় আমার এ প্লাস মার্ক থাকবে। কিন্তুু অংক পরীক্ষার দিন সব গুলো অংকই আমার কমন পড়েছিল। ভাল পরীক্ষাও দিচ্ছিলাম হঠাৎ ২ জন লোক এসে  একটি কাগজ এনে আমার সামনে বেঞ্চে রেখে ছবি তোলার কথা বলে। আমি তাদের বললাম আপনারা কাগজটা আমার সামনে রেখে এভাবে ছবি তুলছেন কেন ? তারা তখন আমাকে দমক দিয়ে বলে এটা তুমি বুঝবানা চুপ করে তাকিয়ে থাক। ছবি তোলার পর আমি ভিশন ভাবে ঘাবরে গিয়ে আর ভাল পরীক্ষা দিতে পারিনাই। আনিজুল জানায়-অংক পরীক্ষায় তারা আমাকে এই ভাবে ডিস্টাব না করলে আমার পরীক্ষাটি আরো অনেক ভাল হতো। এখন আমি অংক পরীক্ষার জন্য এ প্লাস নাও পেতে পারি। আমি এ প্লাস না পেলে আর কোনদিন লেখাপড়াই করবনা। লেখাপড়া করেই বা কি লাভ, যতই ভাল লেখাপড়া করিনা কেন নকল না কররেও সবাই নকলবাজ হিসেবে আমাকে দায়ী করবে। ভিষন আক্ষেপে আনিজুল বলেন অনেক বড় কিছু হওয়ার স্বপ্ন ছিল আমি আর পারবনা।
       
আনিজুলের হল পরিদর্শনকারী শিক্ষক আব্দুছ ছাত্তার জানান-হঠাৎ দু  জন যুবক অনলাইন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বাহির থেকে একটি কাগজ তুলে ভিতরে প্রবেশ করে আনিজুলের বেঞ্চের সামনে গিয়ে ছবি তুলতে দেখা যায়। এবং তারা রুমের ভিতর প্রায় ঘন্টা খানেক অবস্থান করে মোবাইলে কথা বলা সহ হট্রগোল শুরু করে। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় ভিগ্ন ঘটে তাদেরকে এ ব্যাপারে বললে আমার বিরুদ্ধে নিউজ করবে বলে হুমকি দেয়।ছাত্র যখন বলল এ কাগজ রেখে আমার ছবি তুলেছে তখন কাগজ মিলিয়ে দেখি আবোল তাবোল কি লেখা। ঐ দিন গনিত পরীক্ষা থাকলেও গনিতের কিছুই লেখা ছিলনা ঐ কাগজে।
         
পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা কামাল পাশা জানান-আমার কেন্দ্রে কোন পরীক্ষায় নকল হয়নাই। দুটো ছেলে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বারেন্দা হতে একটি কুচকানো কাগজ তুলে নিয়ে হলে ঢুকে  পিছনের বেঞ্চে থাকা ছেলেটার সামনে বেঞ্চে কাগজ রেখে ছবি তুলে নেয়।
          
মুক্ষপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম বলেন,এই ছেলেটি আমার স্কুলের মেধাবী ছাত্র। সেদিন অংক পরীক্ষা চলার সময়ে ফেসবুক সেলিব্রটি সাজার জন্য এবং প্রশাসনের বাহবা কুড়ানোর জন্য অনলাইন সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে কতিপয় ব্যক্তি পরীক্ষা হলে অনাধিকার প্রবেশ করে বাহির থেকে একটি কুচকানো কাগজ এনে পরীক্ষা দেয়ার সময় জেএসসি পরীক্ষার্থী  আনিজুল ইসলামের কাছে গিয়ে কাগজটি বেঞ্চে রেখে ছবি তোলে এভাবে কাগজ রেখে মিথ্যে ছবি দিয়ে ফেসবুকে ছবি দেয়ায় ছেলেটা মানষিক ভাবে ভেঙ্গে পরেছে। এখন তার ভবিষ্যত নিয়ে আমরা চিন্তিত।
          
কেন্দ্র সচিব রফিকুল ইসলাম বিএসসি বলেন, আমি জানতে পেরেছি তারা নাকি আমার সাথে ব্যক্তি আক্রোশে অসুস্থ্য মানসিকতায় এভাবে ছবিটি তুলে ফেসবুক ও অনলাইনে দিয়েছে। এটি একটি বিকৃত মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুইনা। আমার সাথে তাদের মনের অমিল থাকতে পারে, কিন্তুু তারা এভাবে একটি  কোমলমতি  শিশুর মানসিক বিপর্যয় ঘটাতে পারেনা।
          
আনিজুলের পিতা উপজেলা খাঘাটি গ্রামের মফিজুল ইসলাম জানান- আমার ছেলে ছোটকাল থেকে খুব শান্তশিষ্ট বিনয়ী ও সে অনেক মেধাবী ছাত্র। সে সারা বছর ভাল ভাবে লেখাপড়া করেছে তার তো নকল করার প্রশ্নই আসেনা। পরীক্ষার হল থেকে এভাবে ছবি তুলে নিয়ে ফেসবুকে ছবি দেয়ার পর থেকে সে বাড়ীতে বসে কান্না কাটি করছে,আর বলছে আমি আর লেখাপড়া করবোনা। নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য বিনা অপরাধে যারা  আমার ছেলের নামে এধরনের নক্কার জনক অপবাধ দিয়ে তার ভবিষ্যত  নষ্ট করেছে আমি তাদের বিচার চাই।
          
এব্যপারে  ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু জাফর রিপন বলেন-একটি ছোট বাচ্চার এরকম ছবি ফেসবুকে ও অনলাইনে দেয়া কোন ভাবেই কাম্য নয়। এটি একটি গর্হিত কাজ,যারা এইটি করেছেন তারা শুধুই তাদের বিকৃত মানসিকতারই পরিচয় দিয়েছেন এধরনের ঘটনা কারো কাম্য নয়।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

পাঠক মতামত বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই