তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

বরেন্দ্র অধ্যষিত পত্নীতলার নাক ফজলীর চাহিদা বাড়ছে

বরেন্দ্র অধ্যষিত পত্নীতলার নাক ফজলীর চাহিদা বাড়ছে
[ভালুকা ডট কম : ১৭ জুন]
বরেন্দ্র অধ্যষিত খাদ্য উৎপাদন এলাকা হিসাবে পরিচিত উত্তরের নওগাঁ জেলার পত্নীতলায় ধান চাষের পাশাপাশি গত কয়েক বছর ধরে নাক ফজলী আম স্বাদে ও গুণে অনন্য হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। কয়েক বছর আগেও এখানকার কৃষকরা জমিতে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করত। কিন্তু এখন উপজেলার প্রায় প্রায় প্রতিটি কৃষক তাদের ধানী জমিতে ধান চাষের পাশাপাশি নাক ফজলী আমের বাগান করার দিকে ঝুকছেন। পাশাপাশি বাড়ির চারপাশেও নাক ফজলী আম গাছ রোপণ করছেন। গুনে ও মানে অনন্য হওয়ায় বরেন্দ্র অধ্যষিত পত্নীতলার নাক ফজলী আমের চাহিদা অত্রাঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় দিনদিনই বেড়েই চলেছে।

ল্যাংড়া, গোপাল ভোগ, খিরশাপাতি, ফজলী ও আম্রপালি আমের চেয়ে নাক ফজলী আমের মিষ্টতা অনেকটাই কম কিন্তু স্বাসাদু তুলনামূলক অনেক বেশী হওয়ায় সব বয়সের লোকেরা এটি ক্ষেতে বেশী পছন্দ করে। এই আমের কোন আশ না থাকায় খেতে খুবই সুস্বাদু। নাক ফজলী আমের চামড়া পাতলা এবং আঁটি সরু। আম পাকার পরও কিছুটা শক্ত ভাব থাকায় সহজেই বাজার জাত করাও সম্ভব। এই আমের ওজন ৩শ থেকে ৪শ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। অনেকে মনে করেন এই আমের নিচের দিকে নাকের মতো চ্যাপ্টা হওয়ায় এর নাম করণ হয়েছে নাক ফজলী আম।

কৃষি অধিদপ্তর সুত্রে জানাগেছে, এখানকার কৃষকরা ল্যাংড়া, গোপাল ভোগ, খিরশাপাতি, ফজলি ও আম্রপালি আমের পাশাপাশি গত কয়েক বছর থেকে নাক ফজলী আম চাষের দিকে বেশী ঝুঁকে পড়েছেন। বাংলাদেশে শুধুমাত্র নওগাঁ জেলার পত্নীতলা, সাপাহার, বদলগাছী ও ধামইরহাট সহ হাতেগোনা কয়েকটি উপজেলায় ব্যাপক হারে এই আমের চাষ হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে নওগাঁ জেলা বাদেও জয়পুরহাট, বগুড়া সদর উপজেলা সহ বেশ কিছু জেলায় এই আম চাষের বিস্তার লাভ করেছে।

নাক ফজলি আম এখন উপজেলার প্রায় সর্বত্রই চাষ হচ্ছে। জোড় কলমের মাধ্যমে এই আমের চারা রোপণ করার ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে গাছে মকুল আসে এবং গাছের বয়স ৩-৪ বছর হলে প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৪-৫ মন করে আম পাওয়া যায়। গত বছর এ অঞ্চলে এই আম বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৬০ টাকা পর্যন্ত। যারা একবার এই আমের স্বাদ গ্রহণ করেছে পরবর্তী সময়ে আবারও ঐ আম চাষিদের কাছে আম নেয়ার জন্য তারা ধরনা দেয়। বর্তমানে নাক ফজলী আম বাজারে আসতে শুরু করেছে।

পত্নীতলা উপজেলার ইছাপুর গ্রাামের আম চাষি ইয়াছিন আলী জানান, তার প্রায় ২ বিঘা জমিতে নাক ফজলী আমের বাগান রয়েছে। ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি গাছ রয়েছে। প্রতি বছর সে ঐ আম বাগান থেকে ৭০/৮০ হাজার টাকার আম বিক্রি করে থাকে। উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের ময়েজ উদ্দীন জানান, তার বাড়ির আশপাশ সহ প্রায় দেড় বিঘা জমিতে নাক ফজলী আমের গাছ রয়েছে। সেও প্রতি বছর প্রায় ৫০/৬০ হাজার টাকার আম বিক্রি করে থাকে।

অত্র এলাকার অন্যান্য এলাকার আম চাষিরা জানান, কয়েক বছর আগেও এখানকার কৃষকরা বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করত। কিন্তু বর্তমান সময়ে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি নাক ফজলী আমের বাগানের দিকে ঝুঁকছেন।

পত্নীতলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র সরকার জানান, নওগাঁ জেলার বাহিরে এই আমের তেমন কোন পরিচিতি না থাকায় দেশবাসী এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারত না। তবে গত কয়েক বছর থেকে এই উপজেলা সহ জেলার অন্যান্য উপজেলা থেকে নাক ফজলী আম রাজধানী শহর ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রপ্তানি হওয়ায় এর চাহিদা ব্যাপক ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এখানকার কৃষকরা ল্যাংড়া, গোপাল ভোগ, খিরশাপাতি, ফজলী ও আ¤্রপালি আমের পাশাপাশি নাক ফজলী আম চাষের দিকে বেশী ঝুঁকে পড়েছেন।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কৃষি/শিল্প বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই