তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

ভালুকায় সুমির প্রতারণার ফাঁদে তিন ব্যক্তি

সুকৌশলে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ
ভালুকায় সুমির প্রতারণার ফাঁদে তিন ব্যক্তি
[ভালুকা ডট কম : ১১ মার্চ]
ভালুকায় নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলার ঝাউঘরা গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিন হকের মেয়ে বর্তমানে ভালুকা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ নাছিমা হক সুমি (৩০) প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তার নিজ এলাকার কাজীর সাথে যোগসাজশ করে তিন ব্যক্তির সাথে পর্যায়ক্রমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

শুধু তাই নয় সুচতুর ওই নারী অতি কৌশলে কাবিননামায় টাকার অংক দেড় লাখের স্থলে ১৫ লাখ পর্যন্ত লিখে নেয়াসহ মিজান নামে তার এক সাবেক স্বামীকে মিথ্যে মামলা দিয়ে হাজতবাস করিয়ে ছেড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতারণার শিকার আতাউল গনি খান (সুমি কর্তৃক তালাকের প্রথম নোটিশপ্রাপ্ত) নামে সুমি বর্তমান স্বামী ওই নারীর বিচার চেয়ে ভালুকা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরী ও ময়মনসিংহ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন।

খোঁজ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে ও মামলা সূত্রে জানা যায়, নাছিমা হক সুমি নারায়নগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলার ঝাউঘরা গ্রাম থেকে এসে ২০০৬ সালে ভালুকার মাস্টারবাড়ি স্কয়ার ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকের চাকুরী নেন। বাড়িতে তার বড় তিন ভাই ফজলুল হক, মুঞ্জুরুল হক ও আজিজুল হক এবং বড় এক বোন রয়েছে। স্কয়ার ফ্যাশনে চাকুরীর এক বছর পার হওয়ার পর ওই নারী কুমারী বলে পরিচয় দিয়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে জামিরদিয়া গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে মাস্টারবাড়ি আইডিয়ালের মোড়ে অন্ত মেডিক্যাল হলের মালিক মিজানুর রহমানের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে সুমি মিজানের বাড়িতে উঠে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং বিয়ে না করলে আত্মহত্যার হুমকী দেয়। পরে এলাকার মাতব্বরদের মধ্যস্থতায় মিজানের সাথে সুমির বিয়ে হয়। তাদের পারিবারিক জীবনে সুমির বেপরোয়া চলাফেরায় বাঁধা দেয়ার কারণে এবং দেশের সুমির আগেও একটি বিয়ে হয়েছে জানতে পেরে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পারিবারিক কলহের মধ্যেই বেশ কয়েক বছর ঘর সংসার করেন তারা। এ সময় অন্ত নামে তাদের এক ছেলে সন্তানের জন্মও হয়। কিন্তু পরে তাদের সংসার আর টেকেনি। সুমি তার স্বামী মিজানের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দিয়ে পুলিশ দিয়ে দিয়ে ধরিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করে।

ভালুকার প্রথম স্বামী মিজানুর রহমান ভালুকা ডট কম কে জানান, সুমিকে বিয়ে করলেও কাবিন হয় আমাকে তাদের এলাকায় নিয়ে। ৫০ হাজার টাকার কাবিন করার কথা থাকলেও কাজীর সাথে যোগসাজশ করে কৌশলে সে ৫ লাখ টাকার কাবিন করে ফেলে। বিয়ের পর থেকেই সুমির বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করার বহু চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। এমনকি সে আমার নামে মিথ্যে মামলা দিয়ে পুলিশে ধরিয়ে দেয়। পরে ১৭ দিন হাজতবাস করে জামিনে এসে এলাকার লোকজনদের মাধ্যমে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে আপসমিমাংশা করি।

এলাকাবাসি ও সাবেক স্বামী মিজান ভালুকা ডট কম কে জানান, মামলা চলাকালে একই এলাকার ডুবালিয়া পাড়ার আলাউদ্দিন মোল্লার ছেলে শহীদ মোল্লা ওরফে ডিম শহীদের সাথে সুমি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এক পর্যায়ে সে শহীদকে কৌশলে সুমির এলাকায় নিয়ে ওই কাজী অফিসে গিয়ে ৫ লাখ টাকার কাবিন করে নেয়। বেশ কয়েক বছর শহীদের সাথে তার সংসার চলে এবং সওদা নামে তাদের একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। কিন্তু ওই সংসারও তার ভাল লাগেনি। শহীদকে মামলা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করতে থাকে। পরে সাড়ে ৮ লাখ টাকা দিয়ে শহীদের সাথে সুমির সংসার জীবনের অবসান ঘটে।

এলাকাবসি ভালুকা ডট কম কে জানান, সুমি এখন শহীদের কন্যা সওদাকে নিয়ে ডুবালিয়া পাড়ায় তার নিজের বাড়িতে বসবাস করছেন। সবশেষ সুচতর নাছিমা হক সুমি পূর্বের স্বামী শহীদ মোল্লার সাথে বিবাহ বলবদ থাকা অবস্থায় ভালুকা উপজেলার কাঠালী গ্রামের বরকত উল্যাহ খানের ছেলে আতাউল গনি খানকে প্রেমের ফাঁদে ফেলার মিশন শুরু করেন। সুমি ভালুকা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশের কাজ করেন। আর আতাউল রেজিস্ট্রি অফিসের গেটেই ফটোস্ট্যাডের দোকান। দলিলের ফটোকপি করার সুবাদে সুমি প্রায়ই আতার দোকানে আসেন এবং প্রেমের জালে জড়িয়ে ফেলেন। এসময় আতাউল জমি সংক্রান্ত একটি মিথ্যে মামলায় জড়িয়ে পরে আত্মগোপনে থাকতে হয়। আর এই সুযোগ কাজে লাগায় সুচতুর সুমি। সে আতাউলকে কৌশলে নিয়ে যায় সুমির দেশের বাড়ি এবং নারায়নগঞ্জের ফতুল্লা চাঁনমারীর হিমালয় চাইনিজ এন্ড কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন ওই কাজী ফারুক আহমেদের কাছে (নতুন কোর্টের পশ্চিম পাশে)। ১ মে ২০১৬ তারিখে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার কাবিন করার কথা বলে সুকৌশলে সে তার মনোনিত কাজীর যোগসাজশে ১৫ লাখ টাকার কাবিন করে নেয়।

ক্ষতিগ্রস্ত আতাউল গনি খান ভালুকা ডট কম কে জানান, সুমির সাথে বিয়ের পর তাদের সংসার জীবন ভালই চলছিল। এরই মাঝে সুমির নামে ভালুকা মৌজার ৪৮৯/৪৯৪ নম্বর দাগে সাড়ে ৭ লাখ টাকায় তিন শতাংশ জমি কিনে দেয়া হয় এবং পরে উপজেলার ডুবালিয়া পাড়ায় জামিরদিয়া মৌজার ২৮ নম্বর দাগে ৬ লাখ টাকায় (কাবলাসহ) আড়াইশ শতাংশ জমি কিনে আরো ৭ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়। তাছাড়া বিভিন্ন ভাবে সে আমার কাছ থেকে নগদ টাকাসহ অন্তত ২২ লাখ টাকার সম্পদ সুকৌশলে হাতিয়ে নেয়।

আতাউল গনি খান ভালুকা ডট কম কে আরো জানান, এই দেড় বছরে সুমি আমার কাছ থেকে নগদ টাকাসহ জমি ক্রয় ও বাড়ি নির্মাণ বাবদ অন্তত ২২ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে সামান্য ব্যাপারে পারিবারিক কলহসহ অশান্তি সৃষ্টি করতে থাকে এবং বেপরোয়া চলাফেলা শুরু করে। তাতে বাঁধা দিলে সে আমার সাথে সংসার করবেনা বলে জানায় এবং বেশি বারাবারি করলে খুব একটা ভাল হবে বলে হুমকী দেয়। গত ৯ জানুয়ারী নাছিমা হক সুমির স্বাক্ষরিত একটি তালাকের নোটিশ আমার কাছে আসে। আমি নিরুপায় হয়ে প্রতারক এই নারীর বিচার প্রার্থনা করে ময়মনসিংহ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আমলী আদালতে সুমির বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪৯৫ ধারায় মামলা করি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত নাছিমা হক সুমি পর পর তিনটি বিয়ের কথাই স্বীকার করে বলেন, আতাউল গনি খান আমাকে তেমন ভরনপোষন দিতে পারেনা। তাছাড়া সে প্রায়ই আমার উপর হাত তুলে তাই তাকে তালাক দিয়েছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আতাউল আমাকে ডুবারিয়াপাড়ায় আড়াই শতাংশ জমি কিনে বাড়ি নির্মাণ করে দিয়েছে। কিন্তু ভালুকায় কোন জমি দেয়নি।#    



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

ভালুকা বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই