তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

রাণীনগরে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা

রাণীনগরে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য সেবা
[ভালুকা ডট কম : ৩০ জুলাই]
নওগাঁর রাণীনগরে উপজেলার উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে ঔষধ সরবরাহ, কমিউনিটি হেলথ কেয়ার (সিএইচসিপি) কর্মী নিয়োগ দেয়ায় গ্রামের মহিলা, গর্ভবতী মা, প্রসূতি মা ও নবজাতক সহ হতদরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে ঔষুধ ও চিকিৎসা পাচ্ছে।

নিয়োগপ্রাপ্ত সিএইচসিপি কর্মীরা আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করায় স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দেয়া সম্ভব হচ্ছে। তবে কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়মিত বেতন-ভাতাদি না পাওয়া, ইনক্রিমেন্ট না থাকা, চাকুরী রাজস্ব খাতে অর্ন্তভুক্ত না করায় সিএইচসিপি কর্মীদের মধ্যে চরম হতাশা বিরাজ করছে।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলায় ২২ টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৪টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো বর্তমান সরকার সচল করেছে। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কর্মী নিয়োগ ও সরকারী ভাবে প্রায় ২৮ প্রকার ঔষধ সরবরাহ করে আসছে। কর্মরত প্রোভাইডার কর্মীরা সপ্তাহে ৬দিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। চিকিৎসার জন্য রোগীদের ৪০/৫০ টাকা পরিবহন খরচ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হতো, সামান্য সমস্যায় বাজারের যে কোন পল্লী চিকিৎসকের কাছে গেলে ঔষধের জন্য ১০০/২০০ টাকা খরচ করতে হতো।

বর্তমান কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো সচল থাকায় সেই সকল রোগের ঔষধ বিনামূল্যে রোগীরা পাচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিকে ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে স্বাস্থ্য সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে মহিলা, গর্ভবতী মা, প্রসূতি মা ও নবজাতকের সংখ্যাই বেশি। ক্লিনিকে ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলোতে এন্টিবায়াটিক, শিশুদের ঔষুধের যে পরিমান চাহিদা তার তুলনায় সরবরাহ খুবই কম। ফলে প্রতি দুই মাসের শিশুদের জন্য বরাদ্ধ ঔষধ মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে শেষ হয়ে যায় বলে প্রোভাইডার কর্মীরা জানান।  

সরেজমিনে উপজেলার নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, ক্লিনিকটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ নাই, টিউওবয়েল অকেজো ও সংস্কার না করায় টয়লেট ব্যাবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।

এতসব সীমাবদ্ধতার মধ্যে উপজেলার নারায়নপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিষ্ট মো: আশাদুল ইসলাম জানান, হাসি মুখে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে আসছেন। এখানে সেবা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে সাধারণত মহিলা, গর্ভবতী মা, প্রসূতি মা ও নবজাতকের সংখ্যাই বেশি। প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ জন রোগীকে চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ২৮প্রকার ঔষধ সরবরাহ করা হয়। শিশুদের ঔষধ চাহিদার তুলনায় বরাদ্ধ খুবই কম।

এ সময় ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা নারায়নপাড়া গ্রামের রোগী ওহিদুল ইসলাম (৫০) জানান, চিকিৎসার জন্য ৪০/৫০ টাকা পরিবহন খরচ করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হতো কিন্তু বাড়ীর পাশে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র হওয়ায় খুব সহজে সেবা পাচ্ছি।

নারায়নপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার মিয়া জানান, এলাকার কৃষক ও হতদরিদ্র সুবিধা বঞ্চিত মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা ও ঔষুধ পাচ্ছে। স্বাস্থ্য সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে কমিউনিটি ক্লিনিক ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো সচল করা বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের একটি জনবান্ধব ও প্রশংসানীয় কর্মসূচি বলেও তিনি জানান।  

একইদিন উপজেলার খাগড়া কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন কালে দেখা গেছে, সেখানে কর্মরত সিএইচসিপি মো. শহিদুল ইসলাম বেশ আন্তরিকতার সাথে নারী, শিশু রুগীদের স্বাস্থ্য সেবা ও ঔষুধ দিচ্ছেন। তিনি জানান, নিয়মিত বেতন-ভাতাদি না পাওয়া, ইনক্রিমেন্ট না থাকা, চাকুরী রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত না করায় সিএইচসিপি পদে কর্মরতদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।  

রাণীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: এসএম নজমুল আহসান জানান, উপজেলায় মোট ২২ টি কমিউনিটি ক্লিনিক ও ৪টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে ২০১৫ ইং সালে সর্ব মোট ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৫ শত ৭৮ জন সেবা গ্রহন করেছেন। এর মধ্যে ১৬৪৭ জনকে গর্ভকালীন, ২২৮ জন মাকে প্রসব পরবর্তী সেবা প্রদান ও ১৪ হাজার ৫০৩ জন শিশুকে সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং ১০৭৭ জন রুগীকে উচ্চতর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। ২০১৬ ইং সালে জানুয়ারী মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৫৫ জন সেবা গ্রহন করেছেন। এর মধ্যে ৭৬৮ জনকে গর্ভকালীন, ১২৮ জন মাকে প্রসব পরবর্তী সেবা ও ৫ হাজার ৭৭২ জন শিশুকে সেবা প্রদান করা হয়েছে এবং ৫৬৪ জন রুগীকে উচ্চতর চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবস্থায় মফস্বলে চিকিৎসা সচেতনতায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

এদিকে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌছে দিতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে সেই সিএইচসিপি কর্মীরা ভালো নেই। তারা নিয়মিত বেতন-ভাতা পাচ্ছে না, নেই ইনক্রিমেন্ট, তাদের চাকুরীও রাজস্ব খাতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে না। এসব কারণে প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে চরম হতাশা। সিএইচসিপি কর্মীরা তাদের চাকুরী রাজস্ব খাতে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই