তারিখ : ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

শার্শার উন্নয়ন বঞ্চিত গ্রাম দক্ষিন বুরুজ বাগান

শার্শার উন্নয়ন বঞ্চিত গ্রাম দক্ষিন বুরুজ বাগান
[ভালুকা ডট কম : ২২ আগস্ট]
শার্শার প্রান কেন্দ্র নাভারন। নাভরন শহরের পার্শবতী গ্রাম দক্ষিন বুরুজ বাগান। এ গ্রামে প্রায় ৭হাজার মানুষের বসবাস। এ গ্রামে রয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। একটি সিনিয়র মাদ্রাসা। রয়েছে ৫টি বড় মসজিদ। একটি আকিজ বিড়ি কারখানা। একটি হাফেজি খানা।  প্রতিদিন গড়ে উঠছে নতুন নতুন বাড়ি। নাভারন শহরের পার্শবর্তী গ্রাম হওয়াই নতুন জনবসতি বেড়েই চলেছে এখানে। গ্রামটির দৈর্ঘ প্রায় দেঢ় কিলোমিটার ও প্রস্থ এক কিলোমিটার। যার সম্পূর্ন জনবসতিতে ঠাসা।

গ্রাম পেরিয়ে পার্শবর্তী গ্রামে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছে এ গ্রামের মানুষ। এ গ্রামে দু পাশে রয়েছে বৃহত দুটি ফসলের মাঠ। যেখানে উৎপাদন হচ্ছে খাদ্য শষ্য সহ বিভিন্ন ধরনের ফসলাদি। যা নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে অন্যত্র সরবরাহ করছে প্রতিদিন।

অথচ গ্রামটির উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি দীর্ঘকাল ধরে। শার্শার একমাত্র উন্নয়ন বঞ্চিত ও অবহেলিত গ্রাম হলো দক্ষিন বুরুজ বাগান। এখানে রয়েছে একটি বড় রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। যার রয়েছে দলের কেন্দ্র পর্যন্ত প্রভাব। দীর্ঘ কাল ধরে তার দল ক্ষমতায় থাকলেও তিনি গ্রামের উন্নয়ন করেননি। তিনি একজন প্রথম শ্রেনীর ঠিকাদারও বঠে। কথিত আছে তিনি দল ক্ষমতায় থাকাকালিন সময়ে একটি বড় দূনীতি করেন। যার কারনে গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলে যাওয়া রাস্তাটির কাজ থমকে গেছে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শার্শা উপজেলা (বুরুজ বাগান) স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে আনসার ক্যাম্প পর্যন্ত ১কিলোমিটার রাস্তা তৎকালিন সময়ে পাকা করনের জন্য এ প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা ঠিকাদারী নিয়েছিলেন। রাস্তাটি ইটের খোয়া দিয়ে কার্পেটিং হলেও পাকা করন করা হয়নি। রাস্তাটি মাঝখানি দিয়ে চলে গেছে। গ্রামের অর্ধেক মানুষ এ রাস্তা থেকে সুবিধা গ্রহন করলেও এখন তার অবস্থা জরাজির্ন। যা দিয়ে চলা ফেরার কোন অবস্থা নেই। রাস্তাটির ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে বারবার গ্রামবাসী ধর্না দিলেও কোন কাজ হয়নি। তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে রাস্তাটির ব্যাপারে আইনি জটিলতা রয়েছে। তাতেই উন্নয়ন কার্যক্রম থেমে রয়েছে।

গ্রামে পশ্চিম পাশ দিয়ে নাভারন-বাইকোলা সড়ক। সড়কটির দৈর্ঘ ১৬কিলোমিটার। সড়কটির দেঢ় কিলোমিটার গত ২০ বছর পূর্বে ইক্ষু কোম্পানি ইটের খোয়া দিয়ে কার্পেটিং করেছিল। পাঁচ বছর পর এলজিইডি সড়কটিতে পিচের কাজ করে। তারও পাঁচ বছর পরে আবারো সংস্কার কাজ হলেও গত দশ বছর ধরে সড়কটিতে কোন সংস্কার হয়নি। এখন সড়কটিতে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটির সংস্কারের কোন উদ্দোগ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুটির ব্যাপারে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু সরকারী বিভিন্ন দপ্তরে গ্রামবাসী বার বার গিয়ে জুতোর সুকতলা খুইয়ে ফেললেই কারো নজর নেই সেদিকে।

এখানে রয়েছে শার্শা উপজেলা (বুরুজ বাগান) স্বাস্থ্য কেন্দ্র। যে প্রতিদিন প্রতিদিন পাঁচ শাতাধিক রোগী চিকিৎসা নিয়ে আসে। ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি দুর্ঘটনা কবলিত মানুষদের নিয়ে এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন আসে। ভাঙ্গাচুড়া সড়ক দিয়ে রোগী নিয়ে যাওয়া করতে গিয়ে অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। যা দেখার কেউ নেউ। অথচ নাভারন শহর কেন্দ্রিক প্রতিটি গ্রামের সড়কের উন্নয়ন কাজ প্রতি নিয়ত হয়ে চলেছে।

গ্রামটির দক্ষিন পাশ দিয়ে চলে গেছে একটি কাচা সড়ক। যা গ্রামবাসীর জন্য এখন গলার ফোড়া হয়ে দাড়িয়েছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করে থাকে। সেখানে এখন হাটু সমান কাঁদা। রাজনৈতি নেতারা বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়েও এ সড়কটি কোন উন্নয়ন করেনি।

গ্রামের পশ্চিমাংশে গত ২০বছর ধরে গড়ে উঠেছে একটি মহল্লা। সেখানে ৩শতাধিক মানুষের বসবাস। অথচ নেই কোন সড়ক। অন্যের বাড়ির দিয়ে ঘুরে ঘুরে তাদের সড়কে উঠতে হয়। যার ফলে এখানকার মানুষদের মাঝে প্রায় ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকে। নির্বাচনের আগে রাস্তা করে দেবার প্রতিশ্রুতি বারবার পেলেও তাদের ভাগ্যের বদল হয়নি আজো। কাদা মড়িয়েই প্রতিদিনই এখানকার মানুষদের মুল সড়কে উঠতে হয়।

গ্রামের জনগনের প্রানের দাবি ছিল একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ গ্রামে প্রায় ৭হাজার মানুষের বসবাস হওয়া সত্তেই এখানে আজো গড়ে ওঠেনি একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এ গ্রামের শিশুদের প্রতিদিন যশোর-বেনাপোল সড়কের উপর দিয়ে নাভারন বাজার পেরিয়ে ৬শতাধিক শিশুকে বিদ্যালয়ে যেতে হয়। গ্রামবাসীর প্রানের দাবি থাকলে গড়ে ওঠেনি কোন বিদ্যালয়।

দক্ষিন বুরুজ বাগান গ্রামের বিশিষ্ট সমাজ সেবক আলহাজ আকবর মোড়ল আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, দূর্নীতি আর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে এ গ্রামে কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। রাজনৈতিক নেতারা মনকে পরিবর্তন করলেই গ্রামটির উন্নয়ন করলেই উন্নয়ন সম্ভব।

প্রাক্তন শিক্ষক আব্দুস সামাদ জানান, গ্রামটিতে দুই তৃতীয়াংশ বিএনপি’র সমর্থক থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক নেতারা উন্নয়নে এগিয়ে না আসলে গ্রামটি ঐতিয্য নষ্ট হবে। যুবক সমাজকে গ্রামের উন্নয়নের দাবিতে এগিয়ে আসতে হবে।#




সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই