তারিখ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ভরা রাণীনগর ইসলামিক ফাউন্ডেশন

অনিয়ম আর দুর্নীতিতে ভরা রাণীনগর ইসলামিক ফাউন্ডেশন
[ভালুকা ডট কম : ১১ অক্টোবর]
নওগাঁর রাণীনগর ইসলামিক ফাউন্ডেশন যেন এক অনিয়ম আর দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা যেন এর মাত্রাকে আরো দ্বিগুন করে দিয়েছে। শত অনিয়ম আর দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়ার পরও কোন প্রদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গোপন সূত্রে জানা, উপজেলার প্রায় ২০-৩০টি কেন্দ্র পরিচালনা না করে সুপারভাইজারকে ম্যানেজ করে কেন্দ্রের নামে প্রতি মাসে বেতন উত্তোলন করে ভোগ করে আসছে কতিপয় শিক্ষকগন। প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুসারে প্রতিটি কেন্দ্রে সর্বনিন্ম ৩০ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করার নিয়ম থাকলেও আদৌ প্রায় ২০ থেকে ২৫টি কেন্দ্রে ৩০জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করানো হয় না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার প্রায় ২০ টি কেন্দ্র নামে মাত্র চালানো হচ্ছে। একই শিক্ষার্থীর নাম খাতায় একাধিক বার দেখিয়ে প্রতি মাসে সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে কতিপয় প্রভাবশালী শিক্ষকরা। একাধিক শিক্ষকদের নকল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরি করে আসছেন দীর্ঘদিন। আর টাকার বিনিময়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া এই প্রতিষ্ঠানে এখন একটি রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। কেন্দ্র পরিদর্শন কারী দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা প্রতিটি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে শিক্ষকদের কাছ থেকে নিয়ে আসেন বাড়তি টাকা। টাকা দিতে না চাইলে তারা এই ক্ষুদে বেতন ভোগি শিক্ষকদের নানা রকমের ভয় ভীতি প্রদান করে আসে। এই রাজ্যে প্রতিটি সৈনিকরা এক একজন রাজা। ভোটের সময় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণকারী প্রতিটি শিক্ষকদের পাওয়া সম্মানি থেকে কেটে নেওয়া হয় ১শত থেকে ৩শত টাকা। উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ফাউন্ডেশনের এই শিক্ষক দ্বারা। এই জরিপের জন্য সামান্য কিছু ভাতার ব্যবস্থা থাকলেও শিক্ষকরা আদৌ এই সম্মানী ভাতা সঠিক ভাবে পান না ভোগ করেন সুপারভাইজার ও কেয়াটেকারগন।

সুপারভাইজার ও কেয়াটেকারগনের আত্মীয়-স্বজনদের কেন্দ্র পরিদর্শন করা হয় না এমনকি শুক্রবার কেন্দ্র পরিদর্শন করার নিয়ম এখানে রয়েছে। পদাধিকার বলে সুপারভাইজারই হচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানের সর্বেসর্বা। তাই তার অধিনস্ত কোন ব্যক্তিই তার বিরুদ্ধে কোন কিছু বলতে পারেন না। নীতিমালা অনুসারে প্রতিটি কেন্দ্র আড়াই ঘন্টা চালানোর কথা থাকলেও তা চালানো হয় না।

অনেক কেন্দ্রে গিয়ে জানা যায় যে, মাসে সে সব কেন্দ্রে ৭দিনও পাঠদান করানো হয় না। একই কেন্দ্রের শিক্ষার্থী দিয়ে একাধিক কেন্দ্র চালানোর অভিযোগ রয়েছে । ইফা: ফাউন্ডেশনের নিয়ম অনুসারে একই শিক্ষক একাধিক প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতে পারবেন না মর্মে বিধান থাকলেও প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা রাজস্ব ভুক্ত মাদ্রাসায় চাকরি করে আসছেন।   

উপজেলার কোন জনবহুল স্থানে একটি সাধারণ রির্সোস সেন্টার (পাঠাগার) স্থাপন করা বাধ্যতামুলক যেখানে সাধারন পাঠকরা এসে তাদের পছন্দমতো বই ও পত্রিকা পড়বে। এই সাধারণ রির্সোস সেন্টারটি (পাঠাগারটি) প্রতিদিন দুপুর ২টা হতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত পাঠকদের জন্য খোলা রাখার বিধান থাকলেও তা মানা হয় না। কিন্তু এর দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ কেয়াটেকার পেশিবলের জোরে ও সুপারভাইজারের যোগসাজসে পাঠাগার তার গ্রামের নিজ বাড়িতে নিয়ে গিয়ে স্থাপন করেছেন যেখানে কোন পাঠকের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।

জাল শিক্ষা সনদ দাখিল করে চাকরি করার দায়ে গত ১৫ সালে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম পাটওয়ারী একাধিক শিক্ষককে বহিস্কার করলেও চলতি বছর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে সুপারভাইজারের যোগসাজসে বহাল তবিয়তে এখনোও চাকরি করছেন এবং সকল প্রকারের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে আসলেও নিরব ভ’মিকায় কর্তৃপক্ষ।  

একই অবস্থা উপজেলার ৬নং কালিগ্রাম ইউনিয়ন পনিষদের আবাদপুকুরের সাধারণ রির্সোস সেন্টার। নীতি মালা অনুসারে রির্সোস সেন্টার থেকে প্রায় ২ কিমি দুরত্বের মধ্যে  দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ কেয়ার টেকারের বাড়ি অবস্থিত হওয়ার কথা হলেও বর্তমান সাধারণ কেয়ার টেকার আবু বকর সিদ্দিকের বাড়ি রির্সোস সেন্টার হতে প্রায় ১৮ কিমি দুরে অবস্থিত। তিনি একসময়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তবুও তিনি প্রকাশ্যে অর্থের জোরে এখানে চাকরি করে আসছেন কিন্তু এতো কিছু জানার পরও নিরব কর্তৃপক্ষ। তাই বর্তমানে এই রির্সোস সেন্টারটি চলে দায়িত্ব এই সাধারণ কেয়ারটেকারের ইচ্ছে মাফিক। ইসলামিক ফাউন্ডেশন যেন এক অভিভাবকহীন প্রতিষ্ঠান।

উপজেলা সুপারভাইজার আ ন ম রাশেদুল ইসলাম জানান, আমি নতুন করে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে সার্বিক অনিয়মগুলোকে নিয়মে আনার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তবে আমার পূর্বের সুপারভাইজারের আমলে কি হয়েছে তা আমার জানার বাইরে।#



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই