তারিখ : ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার

সংবাদ শিরোনাম

বিস্তারিত বিষয়

নতুন রূপে,নতুন আঙ্গিকে রসায়নের পর্যায় সারণী

রসায়ন বিজ্ঞানের পর্যায় সারণিতে নতুন মেহমানদের আগমন
নতুন রূপে,নতুন আঙ্গিকে রসায়নের পর্যায় সারণী
[ভালুকা ডট কম : ০১ ডিসেম্বর]
আমি আপনি বসে আছি, আড্ডা দিচ্ছি, ঘোরাফেরা করছি, অহেতুক আজে বাজে অপ্রয়োজনীয় বিষয় আর কাজে সময় নষ্ট করছি তবে অন্যরা কিন্তু বসে নেই। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসে তারা তাদের কাজকর্ম সময়মত এবং ঠিকমতোই করে যাচ্ছেন। যাদের কারণেই হইতোবা আমরা আজকের এই আধুনিক যুগে বসবাস করছি। হাতের নাগালেই পেয়ে যাচ্ছি বিভিন্ন সুবিধাসম্বলিত অত্যাধুনিক প্রযুক্তি এবং উন্নত সেবা।

আমাদের অনেকেই হইতোবা চিন্তা করেন না, এসব কিভাবে, কোথা থেকে আসছে বা পাচ্ছি। আপনি ভাবলে অবাক হবেন যে, আজকের এই আধুনিক যুগের নতুন নতুন আবিষ্কারের পেছনে হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ মানুষের দিন রাতের অক্লান্ত পরিশ্রম আর ধ্যান-জ্ঞান ও সাধনা জড়িয়ে আছে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে বসে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা, দিনের পর দিন, রাতের পর রাত এভাবেই হইতোবা তাদের কোন একটা বিষয় নিয়ে কাটিয়ে দিয়েছেন এবং কাটিয়ে যাচ্ছেন।

কোন একটা বিষয় নতুন হিসেবে এমনিতেই আসে না, এগুলোর পেছনে বিভিন্ন মানুষের একক ও সম্মিলিত চেষ্টা সাধনার দরকার হয়। সেটা হতে হয় ব্যক্তিগত ইচ্ছা, সাধনা আর সমাজ তথা কোন একটা দেশের সরকারের পক্ষ থেকে মানসিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য সহযোগিতা। সরকারের পক্ষ থেকে বলতে আসলে একটা দেশের সকল মানুষ তথা জনগণের সম্পদ তথা সাহায্য সহযোগিতাই বোঝায়। আর কোন একটা দেশের সকল মানুষের মানসিক, অর্থনৈতিক সাহায্য সহযোগিতা তথা দোয়া থাকলে অনেক কিছুই হওয়া বা করা সম্ভব।

পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকেই মানুষ এভাবে চেষ্টা সাধনা করে আসছে বিভিন্ন বিষয়ের ভিন্ন ভিন্ন শাখায়। ঠিক তেমনি রসায়ন বিজ্ঞান ও তার বিভিন্ন ব্রান্স নিয়েও লক্ষ লক্ষ মানুষ কাজ করে যাচ্ছে। উন্নত দেশের শিক্ষক-শিক্ষিকা-ছাত্রছাত্রীরা এগুলো নিয়েই দিন রাত গবেষণা করে শেষ করছেন তাদের জীবন যৌবনের সকল শক্তি-সামর্থ্য। শিক্ষক আর গবেষকদের কাজই হচ্ছে কিভাবে উনারা দেশের জন্যে, পৃথিবীবাসীর জন্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি আর উদ্ভাবনী শক্তি বের করবেন। আগেই বলেছি, সেজন্যে তাদের পেছনে দেশের সকল মানুষ তথা সরকারের মানসিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য সহযোগিতা সব সময় বরাদ্দ থাকে। শুধু থাকেই না, প্রয়োজনের তুলনায় পরিমাণটা অনেক বেশিই থাকে। আর শিক্ষক এবং গবেষকদের সম্মানের কথা বলবো, এ বিষয়ে একটু লিখেছিলাম আমার আগের স্ট্যাটাসে যে এসব উন্নত দেশে একেকজন শিক্ষক বা গবেষক হচ্ছেন এক একটি স্বর্ণ বা হীরার টুকরো। কেননা এসব দেশের নীতিনির্ধারকগণ মনে করেন, ভালো মানের ও প্রকৃত শিক্ষক আর গবেষকদের সম্মান দেখালে বা তাদের পেছনে অর্থ ব্যয় করলে এটা আল্টিমেটলি ঐ দেশের এবং দেশের মানুষেরই সামগ্রিক উন্নতি। আর আমরা বা আমাদের দেশের অবস্থার কথা এবার আপনারাই চিন্তা করে দেখেন।

যাইহোক, যারা রসায়ন বিজ্ঞানের সাথে কম বেশি পরিচিতি বা কিছুটা ঘাটাঘাটি করেন তারা জেনে থাকবেন যে, প্রায় ৮-১০ বছর আগে থেকেই পর্যায় সারণীর ৭ম পর্যায়ের কিছু মৌল অর্থাৎ ১১৮ পর্যন্ত মৌলগুলোর টেনট্যাটিভ নাম দিয়ে রাখাহয়েছিল যা এই কয়েক বছরে এসে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। এই ৭ম পর্যায়ের বাকী থাকা সর্বশেষ ৪ টি মৌলের নাম সাম্প্রতিক সময়ে রসায়নের বিভিন্ন মৌলের নামকরণের আন্তর্জাতিক সংস্থা International Union of Pure and Applied Chemistry (IUPAC) কর্তৃক চূড়ান্ত করা হয়েছে। অর্থাৎ ১১৩, ১১৫, ১১৭ এবং ১১৮ নাম্বার মৌলগুলোর নাম চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়েছে যথাক্রমে নিহোনিয়াম (Nihonium, Nh), মস্কোভিয়াম (Moscovium, Mc), টেনিসিন (Tennessine, Ts) এবং অগানেসন (Oganesson, Og) হিসেবে।

উল্লেখ্য যে, ১১৩ নাম্বার মৌলটির নামকরণ করা হয়েছে জাপানের পূর্ব নাম নিপ্পন (নিহোন/Nihon) থেকে যার পেছনে জাপানের বিজ্ঞানীদের অবদান রয়েছে। একইভাবে ১১৫ নাম্বার মৌলটির নামকরণ করা হয়েছে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো’র নামানুসারে। ১১৭ নাম্বার মৌলটির নামকরণ করা হয়েছে আমেরিকায় রসায়নের গবেষণায় দ্বিতীয় অবস্থান হিসেবে খ্যাত টেনিসি (Tennessee) ষ্টেটের নামানুসারে। আর ১১৮ নাম্বার মৌলটির নামকরণ করা হয়েছে ৮৩ বছর বয়সী রাশিয়ান ফিজিসিস্ট ইউরি অগানেসিয়ান (Yuri Oganessian) এর নামানুসারে। অবাক হওয়ার বিষয় হচ্ছে যে, এই ইউরি অগানেসিয়ান হচ্ছেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যার নামে মৌলের নামকরণ করা হয়েছে উনাদের জীবিত থাকা অবস্থায়।

পরিশেষে, বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সহ দেশের সকলের উদ্দেশ্যে আমি বলবো, আসুন, দেশ এবং দেশের বাইরে আমরা যে যেখানেই আছি, যা কিছুই করছি, দেশের দিকে তাকিয়ে, দেশের জনগণের দিকে তাকিয়ে নিজেদের সাধ্যমত কিছু করার চেষ্টা করি যাতে আমাদের অনাগত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভালো কিছু দেখতে পায় আর তারা যেন পৃথিবীর বুকে বুক ফুলিয়ে বলতে পারে আমি একজন বাংলাদেশী, আমি একজন গর্বিত বাংলাদেশী।

বার্তা প্রেরক/লেখক
আশরাফুল আলম
পিএইচডি গবেষক,জাপান।



সতর্কীকরণ

সতর্কীকরণ : কলাম বিভাগটি ব্যাক্তির স্বাধীন মত প্রকাশের জন্য,আমরা বিশ্বাস করি ব্যাক্তির কথা বলার পূর্ণ স্বাধীনতায় তাই কলাম বিভাগের লিখা সমূহ এবং যে কোন প্রকারের মন্তব্যর জন্য ভালুকা ডট কম কর্তৃপক্ষ দায়ী নয় । প্রত্যেক ব্যাক্তি তার নিজ দ্বায়ীত্বে তার মন্তব্য বা লিখা প্রকাশের জন্য কর্তৃপক্ষ কে দিচ্ছেন ।

কমেন্ট

কলাম বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ

অনলাইন জরিপ

  • ভালুকা ডট কম এর নতুন কাজ আপনার কাছে ভাল লাগছে ?
    ভোট দিয়েছেন ৮৯০৭ জন
    হ্যাঁ
    না
    মন্তব্য নেই